×

খেলা

পেনাল্টি মিসে ইংল্যান্ডের স্বপ্নভঙ্গ, চমকপ্রদ মরক্কো

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১২ ডিসেম্বর ২০২২, ০৮:৩৪ এএম

পেনাল্টি মিসে ইংল্যান্ডের স্বপ্নভঙ্গ, চমকপ্রদ মরক্কো

ছবি: ভোরের কাগজ

কাতার বিশ্বকাপ থেকে পর্তুগাল এবং ইংল্যান্ডের বিদায় অনেকের কাছে অপ্রত্যাশিত মনে হলেও আমি বলব জেতার মতো মানসিকতার অভাবে হেরেছে দল দুটি। পেনাল্টি বিশেষজ্ঞ হিসেবে যার এত সুনাম, ইংল্যান্ডের যে কেউ পেনাল্টি আদায় করলেও একমাত্র যিনি শট নিতে যান, সেই হ্যারি কেনই স্পট কিকটা উড়িয়ে মারলেন! তার এই ব্যর্থতায় ইংল্যান্ডের বিশ্বকাপ অভিযানও থেমে গেছে। ইংল্যান্ড-ফ্রান্স ম্যাচে ইংল্যান্ড তুলনামূলক ভালো খেললেও জিতেছে ফ্রান্সই। ম্যাচের আগে কাইল ওয়াকার বলেছিলেন এমবাপ্পেকে দৌড়াতে দেবে না। কথা রেখেছে সে। তবে শেষ রক্ষা হয়নি ইংল্যান্ডের। একজনকে কড়া মার্কিংয়ে রাখলে সুযোগ তৈরি হয় আরেকজনের সামনে। সেটাই হলো শেষ পর্যন্ত।

এক ম্যাচে দুটি পেনাল্টি একজনের পক্ষে নেয়া কঠিন। হ্যারি কেন অভিজ্ঞতার কারণে নিয়েছে। আমার মনে হয় ¯œায়ুচাপ সামলাতে পারেননি তিনি। অন্য কাউকে দিয়ে দ্বিতীয় পেনাল্টিটা নেয়া যেত। দ্বিতীয় পেনাল্টিটা নেয়ার সময় কেনকে ক্লান্ত মনে হয়েছে। যাই হোক, পেনাল্টি মিস হতেই পারে। এটা খেলারই অংশ। ম্যাচ হারলেও ফ্রান্সের চেয়ে ইংল্যান্ডই ভালো খেলেছে। সুযোগ পেয়েছিল অনেক। কিন্তু ফিনিশিংয়ের অভাবে গোল পায়নি।

এবার বিশ্বকাপে মরক্কোর প্রথম ম্যাচ দেখেই বুঝেছিলাম অনেক দূর যাবে আটলাসের সিংহরা। টুর্নামেন্টের শুরু থেকে মরক্কো ম্যাচ বাই ম্যাচ উন্নতিই শুধু করেনি ওরা, সবার মনও জয় করে নিয়েছে এ কথা মানতেই হবে। ধাপে ধাপে উন্নতি করে এখন তো পরিণত একটা দলের

মতো লাগছে ওদের। গ্রুপ থেকে যোগ্যতার প্রমাণ রেখেই এসেছে। প্রথম দিকে মরক্কোর ফুটবলাররা মাঠে প্রচুর দৌড়াদৌড়ি করেছে। এখন মনে হচ্ছে, সেটা তারা উদ্দেশ্যহীনভাবে করেনি। তাদের রিকভারি রান, বলের ওপর চ্যালেঞ্জ সবকিছুই ভালো হয়েছে। অতিরিক্ত আবেগে অপ্রয়োজনীয় কিছু করেনি মাঠে, যা করেছে, সবই কাজে এসেছে। যে কারণে দলটির এই সফলতা। ওদের ফুটবলারদের বড় গুণ, প্রাণশক্তি প্রচুর। দৌড়াদৌড়িতে মনে হয়, এই বিশ্বকাপের সেরা অ্যাথলেটিক দল তারা। কিছু খেলোয়াড় তো ইউরোপে খেলে, হাকিমি পিএসজিতে। খেলোয়াড়দের মান ভালোর সঙ্গে পরিপক্বতা মিলে এই বিশ্বকাপের সেরা চমক মরক্কো। মরক্কো তাদের বিশ্বকাপ ইতিহাসে প্রথমবার সেমিফাইনালে খেলার সুযোগ পেয়েছে। এর আগে ১৯৮৬ সালের বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ দ্বিতীয় রাউন্ডে খেলেছিল আটলাসের সিংহরা।

মরক্কোর এমন সাফল্যে কোচ ওয়ালিদ রেগরাগির কথা উল্লেখ্য করতেই হয়। বিশ্বকাপ শুরুর মাত্র তিন মাস আগে দায়িত্ব পান তিনি। আগের কোচের সঙ্গে দ্ব›েদ্ব আন্তর্জাতিক ফুটবলকে বিদায় বলে দেয়া জিয়াশকে ফিরিয়ে সমালোচনার মুখেও পড়েন তিনি। ৪৭ বছর বয়সি কোচের হাত ধরেই একের পর এক ইতিহাসের নতুন অধ্যায় রচনা করে চলেছে মরক্কো। রেগরাগির কোচিংয়ে এখনও পর্যন্ত আট ম্যাচে হারেনি মরক্কো। এই আট ম্যাচে তারা গোল হজম করেছে মাত্র একটি, সেটিও বিশ্বকাপে কানাডার বিপক্ষে আত্মঘাতী।

প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের কোয়ার্টার-ফাইনালে উঠে আগেই ইতিহাস গড়ে মরক্কো। এবার তারা গড়েছে আরো বড় কীর্তি, জায়গা করে নিয়েছে শেষ চারে, যেখানে পা পড়েনি আফ্রিকার আর কোনো দেশের। অবিশ্বাস্য এই পথচলায় ক্রোয়েশিয়ার সঙ্গে গোলশূন্য ড্রয়ের পর বেলজিয়াম ও কাডানাকে হারিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হিসেবে নকআউটে জায়গা করে নেয় উত্তর আফ্রিকার দেশটি। এরপর শেষ চারে স্পেনকে টাইব্রেকারে হারিয়ে দেয় ৩-০ গোলে। আর কোয়ার্টার ফাইনালে পর্তুগালকে হারানোর মধ্য দিয়ে সেমিতে তারা মুখোমুখি হবে ফ্রান্সের।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App