×

খেলা

মরক্কোর চমক, বিশ্বমঞ্চে তারকারাই পোস্টারবয়

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১১ ডিসেম্বর ২০২২, ০৮:৪৩ পিএম

মরক্কোর চমক, বিশ্বমঞ্চে তারকারাই পোস্টারবয়

ফাইল ছবি

বিশ্বকাপের আসর এখন চূড়ান্ত পরিণতির দ্বারপ্রান্তে। তারকা ফুটবলারদের দলগুলোর পতন দৃশ্যমান। বিদায় নিচ্ছেন একের পর এক তারকারা। যারা এখন পোস্টারবয় হিসেবেই চিহ্নিত। তবে এবার নতুন কোনো তারকার জন্ম না হলেও নতুন ফুটবলশক্তির উত্থান ঘটেছে। আর সেটি হচ্ছে বিশ্বকাপে টিকে যাওয়া একমাত্র মুসলিম দেশ মরক্কো।

আফ্রিকার কোনো দেশ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে এখন পর্যন্ত খেলেনি। এই টিমের কোনো নায়ক নেই। আছেন শুধু বেশ কয়েকজন দক্ষ ফুটবলার। এরমধ্যে আশরাফ হাকিমি অন্যতম। হাকিমি পিএসজিতে মেসি, এমবাপ্পে আর নেইমারের সতীর্থ। ফরাসি তারকা এমবাপ্পে টুইট করে এর আগেই তাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।

ব্রাজিলিয়ান তারকার তারকা নেইমার বিদায় নিয়েছেন বিশ্বকাপের মাঝপথে। কোনো পাগলও ভাবেনি ক্রোয়েশিয়া ব্রাজিলের গতিকে থামিয়ে দেবে। বাস্তবে হয়েছেও তাই। অঘটন যাকে বলে এটা তারই চূরান্ত পরিণতি। অনেকে বলেন, ব্রাজিল নেই বিশ্বকাপও নেই। এটা হয়তো পুরোপুরি সত্য নয়। কারণ ফুটবলদুনিয়া দু’ভাগে বিভক্ত।

একদিকে আর্জেন্টিনা, অন্যদিকে ব্রাজিল। মরক্কোর নব উত্থানে এক অবিশ্বাস্য জাগরণ তৈরি হয়েছে। এই বিজয় অবিস্মরণীয়, নাটকীয়। আরব দুনিয়ায় প্রথম বিশ্বকাপ। এই বিশ্বকাপে অনেক কিছুই পাল্টে গেছে। কিন্তু মরক্কো যেভাবে নিজেদের মেলে ধরেছে তা তুলনাহীন, অনুকরণীয়।

শুধু টিম স্পিরিট দিয়ে একটি দল টোটাল ফুটবল খেলে রচনা করেছে নতুন ইতিহাস। পাল্লা দিচ্ছে সেন্ট্রাল আমেরিকা এবং ইউরোপের দলগুলোর সঙ্গে। কে জানে সামনে আর কী বিস্ময় অপেক্ষা করছে! ইউরোপের অন্যতম ফুটবলশক্তি পর্তুগালকে যেভাবে মরক্কো বিধ্বস্ত করেছে তা দেখে আরব দুনিয়ার নেতারা নিজেদের আনন্দ চাপা রাখতে পারনেনি।

আফ্রিকার ঘরে ঘরে আনন্দবার্তা পৌঁছে গেছে। এবার মরক্কো মুখোমুখি ফ্রান্সের।

ফ্রান্স গতরাতে ব্রিটিশ তারকা হ্যারি কেইনকে পরাস্ত করে কাপ নেয়ার তালিকায় এখন শীর্ষে। কেমন হবে মরক্কো-ফ্রান্সের লড়াই, একবাক্যে কেউ বলে দিতে পারছেন না। এমনকি ফরাসিরাও। ফরাসি সংবাদপত্রগুলো সেরকম ইঙ্গিতই দিচ্ছে।

তারা বলছে, যে কেউ জিততে পারে। হ্যারি কেইন পেনাল্টি মিস করে ইংলিশদের কাঁদিয়েছেন। ভেঙে দিয়েছেন তাদের স্বপ্ন। ‘৬৬ সন থেকে তারা স্বপ্ন দেখছে কাপ নেয়ার। এবার কিছুটা স্বপ্নের কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিল। কিন্তু তারকারা পেনাল্টি মিস করবেন না তা কি হয়। যেমনটা লিওনেল মেসি প্রায়শই করে থাকেন।

যাইহোক, পেনাল্টি মিস না হলে হয়তো খেলার ভাগ্যে অন্যকিছু ঘটতে পারতো।

এই বিশ্বকাপ ঘুম কেড়ে নিয়েছে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর। মরক্কোর সঙ্গে হেরে যাবার কারণে নয় কিন্তু। তিনি তার ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত। যেভাবে পর্তুগিজ কোচ সাইডলাইনে বসিয়ে রেখেছেন তা ছিল রোনালদোর জীবনে এক কলঙ্কজনক অধ্যায়। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ছাড়ার পর রোনালদো বিশ্ব গণমাধ্যমের শিরোনামে উঠে আসেন। পর্তুগিজ কোচের সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় তাকে বেঞ্চে বসিয়ে রাখা হয়।

খেলার শেষ দিকে তাকে মাঠে নামানো হলেও তিনি তখন ভগ্নহৃদয়ে ক্ষতবিক্ষত। ৩৭ বছর বয়সে তিনি বাজিমাত করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সুযোগ পাননি নিজ দল থেকেই।

ওদিকে রিয়াল মাদ্রিদের তারকা ক্রোয়েশিয়ার লুকা মদরিচ সমান বয়সী হয়েও আলোচনায় উঠে এসেছেন। মাঠে তাকে দেখে মনেই হয়নি তার বয়স হয়েছে। তিনি এখনও উজ্জ্বল, শিক্ষকের ভূমিকায়। সতীর্থরা তার ব্যাপারে একাট্টা। গনসালো রামোস সুইজারল্যান্ডের বিরুদ্ধে হ্যাট্রিক করে তাক লাগিয়ে দেন ফুটবলবিশ্বকে।

রামোসই কাতার বিশ্বকাপের নতুন তারকার খ্যাতি পেয়েছেন। সবাই তাকে অভিনন্দন জানাচ্ছেন। কিন্তু রোনালদো সতর্ক। তার জায়গাই দখল করেছে রামোস। রোনালদো এটা মেনে নিতে পারেননি। প্রকাশভঙ্গিতেও তা ফুটে উঠেছে। একজন তারকার এরকম পতন আর কোনো বিশ্বকাপ দেখেনি।

লিওনেল মেসি আর কিলিয়ান এমবাপ্পে। লড়াইটা কি তাহলে এই দু’জনের মধ্যেই হবে? মেসি পেছন থেকে এসে এমবাপ্পের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছেন।

মাঠের বাইরের খেলায় আর্জেন্টিনা-ফ্রান্স আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। কিন্তু ক্রোয়েশিয়া আর মরক্কোকে বাদ দিয়ে এই মুহূর্তে কোনো হিসাব যে মিলবে না এটাই বাস্তবতা।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App