×

জাতীয়

দাতাদের শর্তে কমলো শিক্ষক প্রশিক্ষণের মেয়াদ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১১ ডিসেম্বর ২০২২, ০৮:২০ পিএম

দাতাদের শর্তে কমলো শিক্ষক প্রশিক্ষণের মেয়াদ

ফাইল ছবি

দাতাদের শর্তে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মৌলিক প্রশিক্ষণ ১৮ মাস থেকে কমিয়ে ফের ১০ মাস করা হয়েছে। একই সঙ্গে প্রশিক্ষণের নাম পরিবর্তন করে ‘প্রাথমিক শিক্ষক মৌলিক প্রশিক্ষণ’ করা হয়েছে। রবিবার (১১ ডিসেম্বর) সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদের প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এমন সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ১০ মাসব্যাপী মৌলিক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হতো আগে। প্রশিক্ষণের নাম ছিল সিএনএড (সার্টিফিকেট ইন এডুকেশন)। পরবর্তী সময়ে কোর্সটির নাম পরিবর্তন করে ডিপিএড (ডিপ্লোমা ইন এডুকেশন) করা হয় এবং কোর্সের মেয়াদ ১০ মাসের স্থলে ১৮ মাস করা হয়। সরকার নতুন করে কোর্সের সময় পরিবর্তন করে আবার ১০ মাস করেছে। এর সঙ্গে কোর্সের নামও পরিবর্তন করা হয়েছে। কোর্সটির নতুন নাম হবে ‘প্রাথমিক শিক্ষক মৌলিক প্রশিক্ষণ’।

স্বাধীনতার আগে থেকেই দেশে প্রাথমিক শিক্ষকদের জন্য এক বছর মেয়াদি সার্টিফিকেট-ইন-এডুকেশন (সিইনএড) চালু ছিল। ২০১০ সালের শিক্ষানীতি অনুযায়ী সিইনএডকে আরও যুগোপযোগী করে ১৮ মাস মেয়াদি ডিপ্লোমা ইন প্রাইমারি এডুকেশন (ডিপিএড) কোর্সের প্রবর্তন করা হয়। সেই কোর্স প্রবর্তনের এক যুগ আগেই শিক্ষকদের জন্য দশ মাসের প্রশিক্ষণ কোর্স শুরু করা হচ্ছে।

সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, বরাদ্দ টাকা যাতে ফেরত চলে না যায় সে জন্য বিশ্বব্যাংক, জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) ও ইউনিসেফের পরামর্শে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ১৮ মাস মেয়াদি ডিপিএড প্রশিক্ষণের মেয়াদ কমানো হয়েছে। একই সঙ্গে কোর্সটির নামও পরিবর্তন করা হয়েছে।

এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, চতুর্থ প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচির (পিইডিপি-৪) আওতায় বিশ্বব্যাংক, ইউএনডিপি ও ইউনিসেফ প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়নে ৩৪ শতাংশ অর্থ দেয়। এই উন্নয়ন সংস্থাগুলো প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরকে জানায়, শিক্ষকদের ডিপিএড প্রশিক্ষণে সময় ও অর্থ দুটোই অপচয় হচ্ছে। একে পরিমার্জন করতে হবে। নতুবা অর্থ বরাদ্দের বিষয়ে নতুন করে ভাবতে হবে। এরপরেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণ বিভাগ থেকে এ বিষয়ে গবেষণা করা হয়। এতে উন্নয়ন সহযোগীদের পরামর্শ অনুযায়ী প্রতিবেদন তৈরি করা হয়। এরপরেই প্রশিক্ষণের মেয়াদ কমানো এবং নাম পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেয় মন্ত্রনালয়।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে জানা যায়, জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমি (নেপ) শিক্ষক প্রশিক্ষণের মেয়াদ কমানোর বিরোধিতা করেছে। তারা দীর্ঘদিনের চলমান এই কোর্স বন্ধ বা মেয়াদ না কমানোর জন্য মতামতও দিয়েছিল। একই সঙ্গে তারা পরামর্শ দিয়েছিল চলমান প্রশিক্ষণ কোর্সের মান যুগোপযোগী করার।

প্রশিক্ষণের সময় কমায় কোর্সের মান নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. এস এম হাফিজুর রহমান বলেন, প্রশিক্ষণের সময় কমায় প্রভাব পড়বে। অনেকেই বলছে এই কোর্স মানসম্মত নয়, কিন্তু সময় কমালে মান বাড়বে কীভাবে?

জানতে চাইলে প্রাথমিক ও গণ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ বলেন, আমি দায়িত্ব নেয়ার আগে মন্ত্রনালয় এ কোর্সটি ৬ মাসে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। আমি দায়িত্ব নেয়ার পর অংশীজনদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে তা ১০ মাসে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App