×

সম্পাদকীয়

আজ বিএনপির সমাবেশ : সহিংসতার রাজনীতি থেকে ফিরতে হবে

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১০ ডিসেম্বর ২০২২, ১২:৩০ এএম

আজ বিএনপির সমাবেশ : সহিংসতার রাজনীতি থেকে ফিরতে হবে

রাজধানীতে বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে কয়েকদিন ধরে উত্তপ্ত অবস্থা বিরাজ করছে। গত বুধবার এ নিয়ে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে বিএনপির একজন কর্মী মারা গেছে বলে তারা দাবি করছে। বিএনপির অনেক সিনিয়র কর্মীও ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার হয়েছেন। সরকার চাচ্ছে শান্তিপূর্ণভাবে বিএনপি সমাবেশ করুক। নগরবাসী কোনো ধরনের ভোগান্তিতে না পড়ে- সেদিকে নজর রাখছে। বিএনপির নেতাকর্মীরা দলীয় অফিসের সামনে জড়ো হয়ে রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা করছে। মানুষের দুর্ভোগ বাড়ছে। এমতাবস্থায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কঠোর অবস্থানে রয়েছে। সমাবেশস্থল নিয়ে দুটানা দেখা দিয়েছে। সব ঠিক থাকলে আজ রাজধানীর গোলাপবাগ মাঠে বিএনপি সমাবেশ করবে। এর আগে বিএনপি পল্টনে সমাবেশ করবে বলে অনঢ় ছিল। দুই দলের নেতাদের পাল্টাপাল্টি হুঙ্কারে উত্তপ্ত রাজনৈতিক অঙ্গন, শঙ্কিত সাধারণ মানুষ। মানুষ শান্তি চায়। সংঘাত চায় না। আমরা চাই, সহাবস্থানে থেকে শান্তিপূর্ণভাবে বিএনপি সমাবেশ করুক। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সরকার তাদের অবস্থান থেকে সহযোগিতার মনোভাব নিয়ে এগিয়ে যাক। সামনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। নির্বাচন কমিশন গঠন থেকে শুরু করে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে অতীতের মতো এবারো দুই মেরুতে অবস্থান করছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং বিদেশে চিকিৎসা ইস্যুতে দেশের বিভিন্ন জায়গায় সমাবেশ করছে বিএনপি। এত দিন দলটির রাজনীতি ছিল জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভেতরের বিভিন্ন সেমিনার কক্ষে, নতুবা প্রেস ক্লাবের সামনের সড়ক এবং নয়াপল্টনের অফিস প্রাঙ্গণজুড়ে। তবে এবার ঢাকার বাইরেও জেলা-উপজেলা পর্যায়ে কর্মসূচি পালন করছে। সংবিধান অনুযায়ীই দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে ক্ষমতাসীনরা। বিএনপি এ সরকারের অধীনে কোনোভাবেই নির্বাচনে যেতে চায় না। নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে ভোটের দাবিতে চূড়ান্ত আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছে দলটি। তাদের এ আন্দোলন মোকাবিলায়ও বসে নেই আওয়ামী লীগ। দুই দলের টার্গেট রাজপথ। এ লক্ষ্যে মহড়াও শুরু করেছে দলটি। সমাবেশ-পাল্টা সমাবেশে উত্তপ্ত রাজনীতি। নির্বাচন ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে বাড়বে উত্তাপের পারদ। রাজপথ দখলে রাখাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক সংঘাত ভয়াবহ রূপ নিতে পারে- এমন আশঙ্কা বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের। এমন পরিস্থিতি কোনো দলের জন্য সুখকর হবে না। নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহাল করার দাবিতে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন এবং তা ঠেকাতে আন্দোলনে নেমেছিল বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট। তখন গাড়িতে পেট্রোল বোমা বিস্ফোরণসহ নাশকতার নানা ঘটনায় প্রাণহানি ঘটে অনেক মানুষের। সেসব ঘটনা আজও দেশবাসীর মনে দগদগে ঘায়ের মতো ক্ষত হয়ে আছে। সম্প্রতি বিএনপির কর্মকাণ্ড নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠছে। তবে নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগ তথা সরকারেরও দায়িত্ব রয়েছে। নির্বাচন সামনে রেখে প্রতিটি দলই নিজেদের মতো দল গোছাবে। রাজপথে নেমে নিজেদের শক্তিমত্তা জানান দেয়ার চেষ্টা করবে। এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু রাজপথে জানমালের ক্ষতি জনগণ মেনে নেবে না। এ ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সজাগ থাকতে হবে এবং যে কোনো ধরনের সহিংসতা প্রতিরোধ করতে হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App