×

জাতীয়

হস্তক্ষেপ করবেন না, পক্ষ নেবেন না

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৯ ডিসেম্বর ২০২২, ০৭:৫১ পিএম

# ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সমাবেশ # গোলাপবাগে সমাবেশে বিএনপির অর্ধেক পরাজয় হয়েছে # কিছু মিডিয়া বিএনপিকে ক্ষমতায় আনার প্রতিযোগিতায় নেমেছে
বিদেশি কূটনীতিকদের উদ্দেশে করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিদেশি বন্ধুদের বলি। আমরা আপনাদের অভ্যন্তরীন ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করি না। এখানে দূতাবাসে যারা আছেন। বন্ধু দেশের প্রতিনিধি আছেন। তারা এখানে (আমাদের দেশে) কারো পক্ষ নেবেন না। আমাদের ঘরের ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করবেন না। আমরা জানি আমাদের গণতন্ত্র কীভাবে আমরা সংরক্ষণ করি। শুক্রবার (৯ ডিসেম্বর) বিকেলে মহানগর নাট্যমঞ্চে আয়োজিত সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি। বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, নৈরাজ্য, অপরাজনীতি ও অব্যাহত দেশবিরোধী সন্ত্রাসের প্রতিবাদে এই সমাবেশের আয়োজন করে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ। এতে সভাপতিত্ব করেন দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী, সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ও মহানগর নেতারা সমাবেশে বক্তব্য রাখেন। নয়াপল্টন ছেড়ে গোলাপবাগে সমাবেশে রাজি হওয়ায় বিএনপির অর্ধেক পরাজয় হয়েছে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, দুদিন আগে বলেছি। মেঘ চলে যাবে। বিএনপি শেষ পর্যন্ত সমাধানে আসবে। নয়াপল্টনে সমাবেশ আমরা করবই, এ কথা যারা বলেছে, তারা এখন গোলাপবাগে। পরাজয় কার হলো, আমাদের নাকি বিএনপির। তাদের অর্ধেক পরাজয় হয়ে গেছে। তারা পল্টনে সমাবেশ করতে পারেনি। শুভ বুদ্ধির উদয় হয়েছে। কাদের আরও বলেন, রাস্তায় বের হয়েই বুঝতে পারলাম আওয়ামী লীগ প্রস্তুত। শেখ হাসিনার কর্মীরা প্রস্তুত। রাতে ব্রাজিল ও ক্রোয়েশিয়া আর আর্জেন্টিনা ও নেদারল্যান্ডসের খেলা। আর বাংলাদেশে খেলা হবে সব অপশক্তির বিরুদ্ধে। জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে, দুঃশাসন ও আগুন সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে। সব অপশক্তি বনাম আওয়ামী লীগ এই খেলা হচ্ছে রাজনীতির মাঠে। ওবায়দুল কাদের বলেন, অনেক ছাড় দিয়েছে। আর ছেড়ে দেবো না। পরিস্কার কথা। তারা লাঠি নিয়ে আসলে খেলা হবে। আগুন নিয়ে আসলে খেলা হবে। বিআরটিসির গাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছে। ভাঙচুর করেছে। পুলিশের ওপর হামলা করেছে। তাদের বিরুদ্ধে খেলা হবে। গণমাধ্যমের সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, সাংবাদিক বন্ধুরা সত্যটা তুলে ধরুন। কিছু কিছু মিডিয়া বিএনপিকে ক্ষমতায় আনার প্রতিযোগিতায় নেমেছে। তারা কারা চিনে রাখুন। সময়মতো জবাব পাবে তারা। সত্যের বিরুদ্ধে যারা আজকে যাচ্ছে। কোনো কোনো মিডিয়া রাতে এবং সকালে যখন দেখি, মনে হয় না এখানে (দেশে) আর কোনো দল আছে। কাদের বলেন, বিএনপি কাল থাকবে গোলাপবাগে। আতঙ্কিত কেন হবেন। জনগণকে বলব আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই। আমরা চলে যাচ্ছি কাল সাভারে। ঢাকায় আমরা নেই। আমরা সাভারে যাচ্ছি। বিএনপিকে এই শহর দিয়ে গেলাম। আমরা ক্ষমতায়, আমরা কেন অশান্তি চাইব, কেন বিশৃঙ্খলা করব। নির্বাচনের আরো এক বছর বাকি। তারেক রহমানের দেশে ফেরার বিষয়ে কাদের বলেন, বিএনপি কেবলই বলে তারেক রহমান আসে, আসে। কবে আসবে। ২০০৭ সাল থেকে ১৫ বছর। ১৫ বছরে এলো না। আসবে কবে, কবে আসবে? ক্ষমতায় গিয়ে আন্দোলনের মুখে তাকে নিয়ে আসবেন? ওই চিন্তা করে লাভ নেই। আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বিএনপি সন্ত্রাসী দল। নয়াপল্টনে তারা যা করেছিল, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নৈতিক দায়িত্ব মানুষের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। যেসব বিদেশী বন্ধু এটা নিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন। ভবিষ্যতে আর দেবেন না। শাজাহান খান বলেন, বিএনপির নেতারা ক্ষমতা হারিয়ে পাগল হয়ে গেছে। তারা বলে খালেদা জিয়া মুক্তিযোদ্ধা আর তারেক শিশু মুক্তিযোদ্ধা। এধরণের উম্মাদের মতো যারা কথা বলে, তারা কী দেশ চালাতে পারে? জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, বিএনপির নামক এই অপশক্তিকে যারা সমর্থন করেছে, তারা সবাই এক দলের এক নেতা। ২০০১ সালের পর নির্যাতনের কথা ভুলিনি, পেন্ডিং আছে। বেশি বাড়াবাড়ি করলে সেই মাইর শুরু হয়ে যাবে। আব্দুর রহমান বলেন, বিএনপির রাজনৈতিক সংকট হলো খালেদা আর তারেক দুই জনেই দণ্ডিত আসামি। তারা নির্বাচন করতে পারবে না। তাই তারা কোনো অবস্থাতেই নির্বাচনে অংশ নিতে চায় না। মির্জা ফখরুল আর খন্দকার মোশাররফ নির্বাচিত হোক- তারা সেটাও চায় না। মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম বলেন, যারা শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশ ছাড়ার হুমকি দেয়। ১০ তারিখ তাদেরকে ঢাকায় খুঁজে পাওয়া যাবে না। এডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেন, বিএনপিকে ঢাকায় কোনো নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে দেয়া হবে না। মাহবুবউল আল ম হানিফ বলেন, শিশু বক্তা রফিকুল ইসলাম মাদানী ওয়াজ মাহফিলে বলেছিল আমি সরকার মানি না, রাষ্ট্রপতি মানি না, প্রধানমন্ত্রী মানি না। তাকে পুলিশ যখন ধরে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়। তখন সে বলে স্যার মাহফিলে অনেক লোক দেইখ্যা খেই হারাই ফেলেছি। তাই বইলা ফেলছি। বিএনপি নেতাদের অবস্থা তাই হয়েছে। ঢাকা দক্ষিণের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, নেত্রী ডাক দিয়েছেন। তার ডাকই আওয়ামী লীগ রাজপথে আছে। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে ভোট জিতে আমরা ঘরে ফিরবো। আজ থেকে ঢাকা শহরে নেতাকর্মীরা মাঠে থাকবে। সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, আহমেদ হোসেন, মির্জা আজম, এস এম কামাল হোসেন, এডভোকেট আফজাল হোসেন, ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, এডভোকেট সানজিদা খানম, যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ, মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মেহের আফরোজ চুমকী, সহসভাপতি নুরুল আমিন রুহুল এমপি, ডা. দীলিপ কুমার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাজী মোর্শেদ কামাল, মহিউদ্দিন আহমেদ মহী, সাংগঠনিক সম্পাদক আকতার হোসেন, গোলাম সারোয়ার কবির প্রমুখ। এদিকে, জুম্মার নামাজেরর পর থেকেই দক্ষিণ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন থানা ও ওয়ার্ড থেকে পৃথক মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে আসেন নেতাকর্মীরা। কেউ কেউ একই রঙের টুপি মাথায় দিয়ে, বাদ্য বাজিয়ে সমাবেশে আসেন। কেউ আবার লাঠিসোঁটা হাতে নিয়ে সমাবেশস্থলে আসেন। এক্ষেত্রে বাঁশ বা কাঠের লাঠিতে জাতীয় পতাকা টাঙিয়ে নিয়েছেন। নেতাকর্মীদের মিছিল-স্লোগানে সমাবেশস্থল মুখর করে রেখেছেন তারা। সমাবেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মহানগর নাট্যমঞ্চ প্রাঙ্গণে নির্মিত অস্থায়ী মঞ্চের আশপাশে এবং গুলিস্তান এলাকায় বিপুল পুলিশ মোতায়েন করা ছিল। মূলপ্রাঙ্গণ ছেড়ে সমাবেশের লোক ছড়িয়ে পড়ে বায়তুল মোকাররম, বঙ্গবন্ধু এভিনিউ, দৈনিক বাংলা পর্যন্ত।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App