×

মুক্তচিন্তা

বিশ্বকাপ ফুটবল খেলা ও আমাদের প্রত্যাশা

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৮ ডিসেম্বর ২০২২, ১২:১৭ এএম

বিশ্বকাপ ফুটবল খেলা ও আমাদের প্রত্যাশা

বাংলাদেশের মানুষ ফুটবলপ্রেমী। ফুটবলের প্রতি বাংলাদেশের মানুষদের আলাদা একটা প্রীতি এবং ভালোবাসা আছে। ছোটবেলা থেকে দেখে আসছি আবাহনী-মোহামেডান দুই চিরপ্রতিদ্ব›দ্বী দলের সমর্থনে উত্তেজনার চরম মুহূর্ত। দুই দলের খেলা থাকলেই স্টেডিয়াম পূর্ণ হয়ে যেত কানায় কানায়। তিল ধারণের ঠাঁই পাওয়া যেত না। টেলিভিশনের সামনে বসে এক দৃষ্টিতে খেলার নৈপুণ্য দেখত। বর্তমানে মিডিয়ার কল্যাণে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে অনুষ্ঠিত খেলার খবর মানুষের হাতের মুঠোয়। ফুটবল খেলার প্রতি মানুষের ভালোবাসার কথা খুব বেশি অনুভব করা যায় যখন বিশ্বকাপ ফুটবল খেলার আসর বসে। সম্প্রতি বিশ্বকাপ ফুটবলের উন্মাদনায় মেতে উঠেছে গোটা বিশ্ব। বাংলাদেশের পালেও লেগেছে সে হাওয়া। বাংলাদেশ বিশ্বকাপ ফুটবলে অংশগ্রহণ না করলেও আবেগ, অনুভূতি এবং উচ্ছ¡াস আনন্দ উত্তেজনায় বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় পিছিয়ে নেই। বরঞ্চ অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেকাংশে এগিয়ে। স্বপ্ন দেখি বাংলাদেশও একদিন বিশ্বকাপ ফুটবলে অংশগ্রহণ করবে। বাংলাদেশ বিশ্বকাপ ফুটবল খেলায় অংশগ্রহণ না করলেও খেলা নিয়ে যে উচ্ছ¡াস-উত্তেজনা তার বিন্দুমাত্র কমতি নেই। আমরা বাঙালিরা খুবই আবেগপ্রবণ। প্রিয় দলের সমর্থনে কমবেশি অনেকে বাড়ি বা বাসার ছাদে সমর্থনকারী দেশের পতাকা উত্তোলন করেছে আবার অনেকে পাড়া বা রাস্তার মোড়ে পতাকা উত্তোলন করে দলের প্রতি সমর্থন জানান দেয়ার চেষ্টা করেছে। কেউ কেউ আবার প্রিয় দলের জার্সি পরিধান করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বন্ধুদের জানান দিয়েছে কোন দলের সাপোর্টার। চায়ের দোকানগুলোতে জম্পেশ আড্ডায় ঝড় তুলছে প্রিয় দলের নানা গুণকীর্তনে। অতীতের রেকর্ড সফলতা-ব্যর্থতার ইতিহাস নিয়ে চলছে চুলছেঁড়া বিশ্লেষণ। কারো থেকে কেউ কম যায় না। বিশেষ করে আর্জেন্টিনা এবং ব্রাজিল সমর্থকদের মধ্যে চলে তুমূল তর্কাতর্কি। তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে এমন কিছু অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে যায়, যা অনভিপ্রেত। প্রতিবার বিশ্বকাপ এলেই এ ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে। এবারো ইতোমধ্যে বেশকিছু জায়গায় সে রকম অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। খেলা শুরুর আগে থেকেই। পত্র-পত্রিকা এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কল্যাণে যেটা সবার দৃষ্টিগোচর হয়েছে। প্রিয় দলের প্রতি সমর্থন এবং ভালোবাসা থাকতেই পারে এটা স্বাভাবিক। কে কোন দল সাপোর্ট করবে সেটা যে কারো একান্ত ব্যক্তিগত ব্যাপার। প্রত্যকের ব্যক্তিগত আবেগ-অনুভূতি রয়েছে। একজনের সঙ্গে আরেকজনের আবেগ-অনুভূতির মিল থাকবে এমন কোনো কথা নেই। কিন্তু সেটা নিয়ে তর্কাতর্কি, কথা কাটাকাটি, সংঘর্ষ মোটেই কাম্য নয়। এমনো নজির আছে তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে প্রাণনাশের ঘটনাও ঘটেছে। উত্তেজনার বশবর্তী হয়ে তুচ্ছ কারণে আঘাত করতে দ্বিধাবোধ করে না অনেকে। আবেগটা এমন এক পর্যায়ে চলে যায় তখন বিবেকটা শূন্য হয়ে যায়। মানুষ তখন হারিয়ে ফেলে হিতাহিত জ্ঞান। কেউ কেউ আক্রমণাত্মক কথা বলে প্রতিপক্ষকে ঘায়েলও করে। অনেক সময় দুষ্টুমি করতে করতে সংঘর্ষে রূপ নিতেও দেখা যায়। যেটা একেবারেই অনুচিত। ফুটবল নিঃসন্দেহে বিনোদনের অন্যতম একটা উৎস। এ বিনোদন নিয়ে কেউ আক্রমণাত্মক কথা বলে বিনোদনটাকে কুৎসিত করুক তা কারোরই কাম্য নয়। কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা আর না ঘটুক, নিজেদের আবেগ হোক সংযত। এটাই হোক প্রত্যাশা।

বিভাস গুহ : লেখক ও শিক্ষক। [email protected]

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App