পেরুর প্রেসিডেন্ট পেদ্রো কাসিলোকে অভিসংশনের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত করেছেন দেশটির আইনপ্রণেতারা। এর ঠিক পরপরই সদ্যই ক্ষমতা হারানো এই প্রেসিডেন্টকে ‘অভ্যুত্থান চেষ্টার’ অভিযোগে আটক করে পুলিশ।

বর্তমানে দেশটির নতুন প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পেয়েছেন ভাইস-প্রেসিডেন্ট দিনা বোলোয়ার্তে। এর মাধ্যমে পেরুর ইতিহাসে প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। দিনা ২০২৬ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করবেন। খবর রয়টর্সের।

পেদ্রো কাসিলোর বিরুদ্ধে আগেই অভিসংশনের প্রস্তাব দেন দেশটির সংসদের আইনপ্রণেতারা। এ নিয়ে বুধবার ভোটাভুটি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নিজেকে রক্ষা করতে পেদ্রো সংসদ ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা চালান। ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে তিনি ডিক্রি জারি করে দেশ শাসনের কথা বলেন। টেলিভিশনে দেওয়া ভাষণে তিনি জানান, অস্থায়ীভাবে সংসদ ভেঙে দেবেন, ডিক্রির মাধ্যমে শাসনভার পরিচালনা এবং দেশে নতুন নির্বাচন আয়োজন করবেন। তার এ ঘোষণাকে সুষ্পষ্ট অভ্যুত্থান হিসেবে উল্লেখ করেন তার নিজ দল ও বিরোধী দলের সদস্যরা।

এমন নাটকীয় বিদায়ের মাধ্যমে পেদ্রোর ১৭ মাসের শাসনের অবসান হয়েছে। আর এই ১৭ মাসের মধ্যে পাঁচবার মন্ত্রিসভা গঠন ও পরিবর্তন করেছেন তিনি। এতে করে ৮০ জন মন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছিলেন। এছাড়া এ সময়ের মধ্যে তার বিরুদ্ধে দুইবার অভিসংশন এবং ছয়বার তদন্ত করার চেষ্টা করা হয়েছিল।

দেশটির বিচারবিভাগ ঢেলে সাজানোর ঘোষণাও দিয়েছিলেন পেদ্রো। যারা তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগগুলো তদন্ত করছিল তাদের সরিয়ে দিতিই তিনি এ পরিকল্পনা করেছিলেন বলে ধারনা করা হচ্ছে। তার এসব সিদ্ধান্তে ক্ষুদ্ধ হন মন্ত্রিপরিষদের সদস্যরা। তারা একে একে পদত্যাগ করতে থাকেন।

এদিকে ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট পেদ্রো কাসিলো যখন সংসদ ভেঙে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন তখন পুলিশ ও সেনাবাহিনীর পরিস্কারভাবে জানিয়ে দেয়, প্রেসিডেন্টের এসব কার্যক্রমকে সমর্থন করবে না তারা। এরপরই দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে জর্জরিত পেদ্রোর পতন ঘটে।