×

খেলা

টস জিতে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৭ ডিসেম্বর ২০২২, ১১:৪৭ এএম

টস জিতে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ

ছবি: সংগৃহীত

ভারতের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে টস জিতে ব্যাটিং নিয়েছে বাংলাদেশ। হাসান মাহমুদের পরিবর্তে মূল একাদশে সুযোগ পেয়েছেন নাসুম আহমেদ। বুধবার (৭ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ সময় দুপুর ১২টায় শুরু হয় ম্যাচটি।  লিটনের সঙ্গে আজ ওপেন করেন এনামুল হক বিজয়। এতে প্রথম ওভার থেকে এসেছে কেবল এক রান। এরপর দারুণ দুই বাউন্ডারি হাঁকিয়েছিলেন এনামুল হক বিজয়। মোহাম্মদ সিরাজের করা ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারের চতুর্থ বলে স্লিপে সহজ ক্যাচ দিয়েছিলেন বিজয়। কিন্তু রোহিত শর্মা সেই ক্যাচ ফেলে দেন। হাতে ব্যথা পেয়ে মাঠ ছাড়েন ভারতীয় অধিনায়ক। কিন্তু পরের বলেই বিজয় হয়ে যান এলবিডব্লিউ। ৯ বলে ২ বাউন্ডারিতে ১১ রান করা বিজয় জীবন পেয়েও সেটা হেলায় নষ্ট করলেন।

এরপর লিটন দাসকে নিয়ে ইনিংস বড় করতে থাকেন নাজমুল হোসেন শান্ত। তবে ব্যাট হাতে এদিন ভক্তদের হতাশ করেছেন অধিনায়ক লিটন দাস। দলীয় ৩৯ রানের মাথায় ব্যক্তিগত ৭ রান করে ফিরে যান এই তারকা ওপেনার। ভারতীয় পেসার মোহাম্মদ সিরাজের বলে বোল্ড আউট হয়ে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন টাইগার অধিনায়ক। এর কিছুক্ষণ পরে আউট হয়ে যান নাজমুল হোসোন শান্ত। উমরানের প্রথম বলেই ১৫১ কিলোমিটার/ঘণ্টা গতির এক বলে ভেঙে দিয়েছেন শান্তর স্টাম্প। ৩৫ বলে ৩ বাউন্ডারিতে ২১ রান করে ফিরেছেন বাঁহাতি এই ব্যাটার। পরে খুবই অল্প সময়ের ব্যবধানে ফিরে যান সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম ও আফিফ হোসেন। ইনিংসের ১২তম ওভারে উমরান মালিক বল হাতে নিয়েই গতিতে ঝড় তুলেছেন। সাকিব আল হাসানকে বেশ বেগ পেতে হয়েছে তাকে সামলাতে। এক ওভারেই কয়েকবার পরাস্ত হন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। তবে ওই ওভারটি মেইডেন দিলেও আউট দেননি সাকিব। এক ওভার পর নাজমুল হোসেন শান্তকে পেয়ে আর উইকেট তুলে নিতে দেরি করেননি উমরান। প্রথম বলেই তিনি ১৫১ কিলোমিটার/ঘণ্টা গতির এক বলে ভেঙে দেন শান্তর স্টাম্প। ৩৫ বলে ৩ বাউন্ডারিতে ২১ রান করে ফেরেন বাঁহাতি এই ব্যাটার। এরপর সাকিব বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। ওয়াশিংটন সুন্দরকে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে আকাশে ক্যাচ তুলে দেন তিনি। ২০ বলে ৮ রানেই থামে অভিজ্ঞ এই ব্যাটারের ইনিংসটি। এরপর এক ওভারে জোড়া উইকেট তুলে নেন ওয়াশিংটন সুন্দর। মুশফিক খেলছিলেন বেশ দেখেশুনে। সুন্দরের ঘূর্ণিতে তার প্রতিরোধও ভেঙে যায় ১৯তম ওভারে। মুশফিক ডিফেন্ডই করেছিলেন। বল তার গ্লাভসে লেগে শর্ট লেগ ফিল্ডার ধাওয়ানের হাতে চলে যায়। ২৪ বলে ২ বাউন্ডারিতে মুশফিকের ব্যাট থেকে আসে ১২ রান। সুন্দরের তার ঠিক পরের বলেই আফিফ হোসেন লাইন মিস করে হন বোল্ড (০)। এরপরে ধ্বংসযঞ্জে দাঁড়িয়ে থেকে বুক চিতিয়ে লড়াই করেছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও মেহেদী হাসান মিরাজ। এই দুজনের ‍দৃঢ়তায় ২০০ রানের স্কোর ছাড়িয়ে যায়। দুজনেই হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন। মাহমুদউল্লাহ-মিরাজের ১৪৮ রানের জুটি সপ্তম উইকেটে এখন বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ, ভারতের বিপক্ষেও যে কোনো উইকেটে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। তবে উমরানের বলে আউটসাইড-এজড হয়েছিলেন মাহমুদউল্লাহ, ডানদিকে ঝাঁপিয়ে দারুণ ক্যাচ নিয়েছেন ভারতের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক। মিরাজের সঙ্গে মাহমুদউল্লাহর জুটি থামল ১৪৮ রানেই, মাহমুদউল্লাহ ফিরলেন ৯৬ বলে ৭৭ রান করেন। শেষ পর্যন্ত ৫০ ওভার শেষে ৭ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ দলের সংগ্রহ করেছে ২৭১ রান।

এ ম্যাচ জিতলে সিরিজ জয় নিশ্চিত হবে লিটন বাহিনীর। এর আগে শনিবার (৫ ডিসেম্বর) প্রথম ম্যাচে ভারতকে ১ উইকেটে হারিয়েছে টাইগাররা। চলমান সিরিজে টিকে থাকতে হলে এ ম্যাচে জয় ছাড়া বিকল্প নেই রোহিত-কোহলিদের। আন্তর্জাতিক ওয়ানডে ক্রিকেটের ইতিহাসে এখন পর্যন্ত ৩৭ ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছে দুদল। ভারতের জয়ের পাল্লাই ভারি। তাদের ৩০ জয়ের বিপরীতে বাংলাদেশ জয় পায় ৬ ম্যাচ। একটি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়।

এ ওয়ানডেতেই সিরিজ নিজেদের করে নিতে চায় বাংলাদেশ। যেখানে আত্মবিশ্বাস খুঁজতে চায় মিরাজ-মোস্তাফিজের লড়াকু ইনিংসে। প্রথম ওয়ানডে জয় বদলে দিয়েছে টাইগারদের ড্রেসিংরুমের আবহাওয়া। ম্যাচ জয়ের পরদিন কোনো অনুশীলন করেনি দল। তবে টিম হোটেলে হয়েছে সুইমিং আর জিম সেশন।

প্রথম ওয়ানডেতে সাকিব-মিরাজ ঝলকে কিছুটা পাদপ্রদীপের নিচে ছিলেন ৪ উইকেট নেয়া পেসার ইবাদত হোসেন। দ্বিতীয় ম্যাচের আগেই ঠিক করেছেন নিজ ও দলের লক্ষ্য। রোমাঞ্চকর জয়ে যে আত্মবিশ্বাস ফিরেছে ড্রেসিংরুমে, তাতে ভর করে দ্বিতীয় ওয়ানডেতেই সিরিজি নিশ্চিত করার লক্ষ্য দলের।

এ বিষয়ে ইবাদত হোসেন বলেন, ‘সিরিজে আমরা ১-০ তে এগিয়ে আছি। তার মানে এই নয় যে, আমরা সিরিজ জিতে গেছি। আগের ম্যাচ জয়ের আত্মবিশ্বাস এবং যথাযথ প্রস্তুতি নিয়ে আমরা মাঠে নামব। লক্ষ্য থাকবে দ্বিতীয় ম্যাচেই সিরিজ জয় নিশ্চিত করা।’

এদিকে প্রথম ম্যাচের পরাজয়ে ভারতীয়রা ভড়কে যাচ্ছেন না বলেই দাবি রোহিত শর্মার। প্রথম ম্যাচের পর ভারতীয় অধিনায়ক বলেন, নিজেদের লড়াকু মানসিকতার ওপর আস্থা আছে তাদের, ‘আমি জানি না, কয়েকটি অনুশীলন সেশনে কতটা উন্নতি করা যাবে। তবে সবার মধ্যে (ঘুরে দাঁড়ানোর) প্রবৃত্তিটা রয়েছে। এখন শুধু চাপ সামাল দেয়ার বিষয়। আমি নিশ্চিত ছেলেরা শিখবে এবং আমরা সামনের ম্যাচের দিকে তাকিয়ে। আশা করি আমরা পরিস্থিতি বদলে দিতে পারব। এই কন্ডিশনে ঠিক কী করতে হবে, তা আমাদের জানা আছে।’

সিরিজ বাঁচানোর লড়াইয়ে নামার আগে ওপেনার ধাওয়ান বলেছেন, ‘আপনি সব সময়ই এই দ্বৈরথকে অনুভব করবেন। অবশ্যই সব দলের বিপক্ষেই দ্বৈরথ আছে। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ কিছুটা আবেগী। তারা খুব উপভোগ করে আর প্রবল আগ্রহ নিয়ে আসে মাঠে। এটা ভালো মজার। আমাদেরও আরো আগ্রহী করে।’

বাংলাদেশ একাদশ: লিটন দাস (অধিনায়ক), এনামুল হক বিজয়, নাজমুল হোসেন শান্ত, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, আফিফ হোসেন, মেহেদী হাসান মিরাজ, নাসুম আহমেদ, মোস্তাফিজুর রহমান, এবাদত হোসেন ভারত একাদশ: রোহিত শর্মা (অধিনায়ক), শেখর ধাওয়ান, বিরাট কোহলি, শ্রেয়াস আয়ার, লোকেশ রাহুল, ওয়াশিংটন সুন্দর, অক্ষর প্যাটেল, শার্দুল ঠাকুর, দ্বীপক চাহার, মোহাম্মদ সিরাজ, উমরান মালিক।    

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App