×

চিত্র বিচিত্র

ঘণ্টায় ৩০০ কি.মি. উড়ে বিশ্বের দ্রুততম প্রাণী

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৭ ডিসেম্বর ২০২২, ০২:৪৮ পিএম

https://www.youtube.com/watch?v=r7lglchYNew&t=142s

বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুততম প্রাণীর কথা সামনে আসলে সবার আগে মানুষের মনে যে প্রাণীটির চিন্তা আসে তা হলো চিতা বাঘ। তবে চিতাবাঘ বিশ্বের দ্রুততম প্রাণী নয়। এমনকি চিতা বাঘের গতি বিশ্বের দ্রুততম প্রাণীর কাছাকাছিও নাই। সে প্রাণীটি হলো বাজ পাখি। একটি বাজ পাখি ঘণ্টায় ৩০০ কিলোমিটারেরও বেশি বেগে উড়তে পারে।

পেরিগ্রিন প্রজাতির বাজ পাখি পৃথিবীর অন্যতম দক্ষ শিকারি পাখি। তার এই দক্ষতার মূলেও রয়েছে তার অতুলনীয় গতির আবদান। একটি বাজ পাখি যখন অনেক উচ্চতা থেকে নিজের শিকারকে লক্ষ্য করে ড্রাইভ (নিচের দিকে ক্ষিপ্র গতিতে তেরে আসা) করে তখন এর গড় গতি হয় ঘণ্টায় ৩২০ কি.মি! এখন পর্যন্ত রেকর্ড করা পেরিগ্রিন প্রজাতির বাজ পাখির সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় ৩৮৯ কি.মি, যা এটিকে বাণিজ্যিকভাবে উপলব্ধ বেশিরভাগ গাড়ির চেয়ে দ্রুততর করে তোলে। পাশাপাশি এটিও স্পষ্ট, চিতার ৬৪ মাইল প্রতি ঘণ্টার রেকর্ডের চেয়ে অনেক দ্রুত।

এ বাজ পাখিগুলো সাধারণত ৪০ থেকে ৫৫ কি.মি বেগে আকাশে ভ্রমণ করে বেড়ায়। নিজের শিকারকে সরাসরি তাড়া করার সময় এর গতি হয় ১১২ কিমি/ঘন্টা। কিন্তু ড্রাইভিং করার সময় তারা তাদের সত্যিকারের শক্তি দেখায়, ভয়ঙ্কর গতিতে নেমে আসে যা অন্য যেকোনো প্রাণীকে ঘায়েল করার জন্য যথেষ্ট।

পেরেগ্রিন বাজপাখি যেনো তার গতির জন্যই সৃষ্টি। তার যে কেবল মাত্র লাইটওয়েট ফ্রেম রয়েছে সেটি কিন্তু নয়। লাইটওয়েট ফ্রেমের পাশাপাশি তাদের রয়েছে একটি এরোডাইনামিক ডাইভিং ফর্ম যা তাদের এই ধরনের বেগ সহ্য করতে সাহায্য করে। উদাহরণস্বরূপ, ৩০০ কিমি/ঘন্টা বেগে ডাইভিং করলে অন্য যে কোনও পাখির ফুসফুসের ক্ষতি হবে, তবে ফ্যালকনে ছোট টিউবারকল রয়েছে যা তার নাকের ছিদ্র থেকে চাপযুক্ত বায়ুকে দূরে সরিয়ে দেয়। যার ফলে তার সহজেই শ্বাস নিতে পারে। এছাড়াও, নিক্টেটিং মেমব্রন ড্রাইভের সময় তাদের চোখকে রক্ষা করে।

পেরিগ্রিন বাজপাখির অতুলনীয় ডাইভিং গতি এটিকে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে কয়েকশো মিটার থেকে কয়েক কিলোমিটার পর্যন্ত যে কোন দুরুত্বের শিকারকে আক্রমণ করতে সাহায্য করে। এ গতির ব্যবহারে প্রায়ই তার নিজের শিকারকে মারাত্মক আঘাত করে। তবে শিকারের সময় তাদের এ দ্রুত গতিকে নিয়ন্ত্রণযোগ্য গতিতে রাখার জন্য পাখিগুলো জোরপূর্বক তাদের ডানা ঝাপটায়।

এটা ভাবতে খারাপ লাগে যে মাত্র কয়েক দশক আগে, এই মহিমান্বিত প্রাণীটি প্রায় বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছিল। যা হয়ে ছিলো আমাদের কারণেই। কীটনাশক ‘ডিডিটি’ প্রাপ্তবয়স্ক পাখিদের ব্যাপক ক্ষতি করে এবং তাদের ডিমের খোসাকে এতটাই পাতলা করে দেয় যা ভ্রূণের বিকাশকে বাধা দেয়। ১৯৭১ সালে ডিডিটি নিষিদ্ধ হওয়ার পরেই পাখির সংখ্যা পুনরুদ্ধার করা শুরু হয়েছিল। ১৯৯৯ সালের মধ্যে বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির তালিকা থেকে পেরেগ্রিন প্রজাতির বাজ পাখিকে সরিয়ে দেওয়া হয় এবং তখন থেকেই তাদের সংখ্যা স্থিতিশীল রয়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App