×

খেলা

এমবাপ্পের অজানা গল্প

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৭ ডিসেম্বর ২০২২, ০২:০৬ পিএম

এমবাপ্পের অজানা গল্প

কিলিয়ান এমবাপ্পে। ছবি: সংগৃহীত

কাতার বিশ্বকাপে আগামী শনিবার বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ফ্রান্সের মুখোমুখি হবে ইংল্যান্ড। এই ম্যাচে বিশেষ একজন খেলোয়াড়ের দিকে এখন সবার মনোযোগ।

তিনি হলেন প্যারিস সেন্ট-জার্মেইন ফরোয়ার্ড কিলিয়ান এমবাপ্পে। তিনি এই মুহূর্তে বিশ্বের সেরা খেলোয়াড়, এ কথা বলা যায় নিঃসন্দেহে। ইংল্যান্ডের কোচ গ্যারেথ সাউথগেটের থ্রি লায়ন্স এখন ব্যস্ত এই ফরাসি তারকাকে আটকানোর ছক কষতে। বিবিসি স্পোর্ট এমবাপ্পে এবং তার তড়িৎ উত্থান সম্পর্কে ছয়টি বিষয় নজরে এনেছে।

ইতিহাসের দ্বিতীয় সবচেয়ে দামি খেলোয়াড়

এমবাপ্পে ক্লাব ফুটবলে ২০১৭ সালে মোনাকো ছেড়ে পিএসজিতে যোগ দেন। এক বছর পরে ১৮০ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে পিএসজিতে স্থায়ী হন তিনি। এটি এখনও পর্যন্ত দ্বিতীয় সবচেয়ে ব্যয়বহুল ট্রান্সফার। এক্ষেত্রে এক নম্বরে আছেন ব্রাজিল ফরোয়ার্ড নেইমার। তিনি ২০১৭ সালে ২২২ মিলিয়ন ইউরোতে বার্সেলোনা থেকে পিএসজিতে যোগ দিয়েছিলেন। এমবাপ্পে ফ্রান্সের হয়ে ২৩৭ ম্যাচে ১৯০ গোল করেছেন। পিএসজিতে তিনি নেইমার এবং আর্জেন্টিনার গ্রেট লিওনেল মেসির সঙ্গে খেলেছেন।

একজন সিরিয়াল বিজয়ী

পেশাদার ফুটবলার হিসেবে সাত বছরে এমবাপ্পে জিতেছেন ২০১৮ বিশ্বকাপ, ২০২০-২১ উয়েফা নেশনস লিগ, পাঁচটি লিগ ওয়ান শিরোপা (পিএসজিতে চারটি, মোনাকোতে একটি), তিনটি ফ্রেঞ্চ কাপ এবং দুটি ফ্রেঞ্চ লিগ কাপ।

এককভাবে তিনি জিতেছেন গোল্ডেন বয় পুরস্কার। তিনি দুইবার বর্ষসেরা ফরাসি খেলোয়াড়ের খেতাব জয়ী। লিগ ওয়ানেও বছরের সেরা খেলোয়াড় এবং তিনবার বছরের তরুণ খেলোয়াড় নির্বাচিত হয়েছেন। এ ছাড়া তিনি ২০১৮ বিশ্বকাপের সেরা তরুণ খেলোয়াড় এবং চার মৌসুমে লিগ ওয়ানের সর্বোচ্চ গোলদাতা হিসেবেও বিবেচিত হন। তিনি পিএসজিকে ২০২০ সালে তাদের প্রথম চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে পৌঁছাতে সাহায্য করেছিলেন।

বিশ্বকাপে আলো জ্বালাতে অভ্যস্ত

এমবাপ্পে মাত্র ১৯ বছর বয়সে ২০১৮ সালে রাশিয়া বিশ্বকাপে ফ্রান্সের গৌরব অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। ওই আসরে গুরুত্বপূর্ণ চারটি গোল করেছিলেন। ক্রোয়েশিয়ার বিরুদ্ধে ৪-২ গোলের জয়ে তারও গোল ছিল। তিনি ওই গোলের কারণে ১৯৫৮ সালে ব্রাজিল কিংবদন্তি পেলের পরে বিশ্বকাপ ফাইনালে গোল করা দ্বিতীয় কিশোর ফুটবলার হন। এমবাপ্পে এখন পর্যন্ত পাঁচটি গোল করে কাতার বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি গোলদাতা। বিশ্বকাপে তার মোট ৯টি গোলের মানে তিনি ইতোমধ্যে আর্জেন্টিনার হয়ে আট গোল করা দিয়েগো ম্যারাডোনা এবং পর্তুগালের ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোকে ছাড়িয়ে গেছেন। তিনি সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড় যিনি নয়টি বিশ্বকাপে গোল করে ইউসেবিওর রেকর্ড ভঙ্গ করেছেন। ইউসেবিও ২৪ বছর ১৮২ দিন বয়সে পর্তুগালের হয়ে আটটি গোল করেছিলেন।

অল্প বয়সে রেকর্ড ব্রেকার

প্যারিসের উপকণ্ঠে জন্মগ্রহণ করেন এমবাপ্পে। তার শুরুটা স্থানীয় দল এএস বন্ডির সঙ্গে। ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে মোনাকোর হয়ে তার প্রথম দলে অভিষেক হয়েছিল। ১৬ বছর এবং ৩৪৭ দিন বয়সে তিনি ক্লাবের ইতিহাসে সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড় হয়ে ওঠেন। ১৯৯৪ সালে ফ্রান্স এবং আর্সেনাল কিংবদন্তি থিয়েরি অঁরির দ্বারা করা একটি রেকর্ড ভাঙেন তিনি। তিন মাস পরে তিনি ট্রয়েসের বিপক্ষে তার প্রথম সিনিয়র গোলের মাধ্যমে ক্লাবের সর্বকনিষ্ঠ স্কোরার হন।

সে দ্রুতগতির খেলোয়াড়

পোল্যান্ডের বিরুদ্ধে ফ্রান্সের ৩-১ ব্যবধানে জয়ের সময় তার সর্বোচ্চ গতি ছিল প্রতি ঘণ্টায় ৩৫.৩ কিলোমিটার। গত রবিবারের খেলার আগে এই বছরের বিশ্বকাপে মাত্র ছয়জন খেলোয়াড় দ্রুত স্প্রিন্টের রেকর্ড করেছিলেন। গত সেপ্টেম্বরে লিগ ওয়ানে তিনি এই মৌসুমে প্রতি ঘণ্টায় ৩৬ কিলোমিটার গতিতে দৌড়েছেন। তাই তিনি ওই লিগের দ্রুততম খেলোয়াড়। জ্যামাইকান অলিম্পিক স্প্রিন্টিং কিংবদন্তি উসাইন বোল্ট ২০০৯ সালে প্রতি ঘণ্টায় ৩৭.৫৮ কিলোমিটার গতিতে দৌড়িয়ে ১০০ মিটারে বিশ্বরেকর্ড গড়েছিলেন।

একজন বিশাল হৃদয়ের মানুষ

মেসি বা রোনালদো ছাড়া অন্য শুধুমাত্র এমবাপ্পেই গত অক্টোবরে সর্বোচ্চ উপার্জনকারী ফুটবলারদের জন্য ফোর্বসের তালিকায় শীর্ষে ছিলেন। ধারণা করা হচ্ছে এই মৌসুমে তিনি ১২৮ মিলিয়ন পাউন্ড আয় করবেন। সোশ্যাল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও অসম্ভব জনপ্রিয় তিনি। ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম এবং টুইটারে তার সম্মিলিত ফলোয়ারের সংখ্যা প্রায় ১০০ মিলিয়ন।

২০২২ বিশ্বকাপে খেলার কারণে ইনস্টাগ্রামে সবচেয়ে প্রভাবশালী ফুটবলার হিসেবে রোনালদো, মেসি এবং নেইমারের পাশাপাশি তার নামও ছিল। চার বছর আগে বিশ্বকাপ জেতার পর এমবাপ্পে ঘোষণা করেছিলেন যে, তিনি টুর্নামেন্টের জন্য তার পুরো মজুরি তিন লাখ আশি হাজার পাউন্ড একটি শিশুদের দাতব্য সংস্থায় দান করবেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App