×

খেলা

বিশ্বকাপে এশিয়ার ঝলক

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৪ ডিসেম্বর ২০২২, ০৯:৩৭ এএম

বিশ্বকাপে এশিয়ার ঝলক

ছবি: সংগৃহীত

বিশ্বকাপ ফুটবলের কোনো আসরেই চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি এশিয়ার কোনো দেশ। তবে ২০০২ বিশ্বকাপে বিশ্বকে রীতিমতো চমকে দিয়েছিল এশিয়ার দেশগুলো। সেই বিশ্বকাপের পর এবার কাতার বিশ্বকাপেও বিশ্ববাসীকে চমকে দিয়েছে এশিয়ার দল জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ও অস্ট্রেলিয়া।

এবার এশিয়া মহাদেশ থেকে বিশ্বকাপের বাছাইপর্ব খেলে মূল পর্বের টিকেট পায় ইরান, দক্ষিণ কোরিয়া, সৌদি আরব ও জাপান। স্বাগতিক হিসেবে ছিল কাতার। আর ষষ্ঠ দল হিসেবে আন্তঃমহাদেশীয় প্লে অফে পেরুকে হারিয়ে এশিয়ান দল হিসেবে জায়গা নিশ্চিত করে অস্ট্রেলিয়া।

বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই দুই বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনাকে হারিয়ে বড় চমক দেখায় সৌদি আরব। তবে টানা দুই ম্যাচে হেরে গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নেয় তারা। এছাড়া নিজেদের প্রথম ম্যাচে চারবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন জার্মানিকে হারিয়ে রীতিমতো অঘটনের জন্ম দেয় জাপান। তখন থেকেই বোঝা যাচ্ছিলো কাতার বিশ্বকাপে এশিয়ার দেশগুলো বিশ্বফুটবলে ইউরোপ ও লাতিন আমেরিকার দেশগুলোকে টেক্কা দিতে শুরু করেছে।

এবার কাতার বিশ্বকাপে এশিয়া মহাদেশ থেকে সবার আগে নকআউট নিশ্চিত করে অস্ট্রেলিয়া। প্রথম ম্যাচে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সের কাছে হারলেও পরের দুই ম্যাচে তিউনিশিয়া ও ডেনমার্ককে হারায় তারা। তাতেই ‘ডি’ গ্রুপে রানার্সআপ হয়ে ১৬ বছর পর নকআউটে পা রাখে সকারুরা। এরপর এশিয়ার দ্বিতীয় দল হিসেবে কাতার বিশ্বকাপের নকআউট নিশ্চিত করে জাপান।

এ যাত্রায় তারা হারায় চারবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন জার্মানি এবং একবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন স্পেনকে। প্রথম ম্যাচে জার্মানিকে ২-১ গোলে হারানোর পর দ্বিতীয় ম্যাচে কোস্টারিকার কাছে ১-০ গোলে হেরে যায় তারা। নকআউটে উঠতে শেষ ম্যাচে শক্তিশালী স্পেনকে হারাতে হতো তাদের। এক গোলে পিছিয়ে থেকেও শেষ পর্যন্ত ২-১ গোলের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে জাপান। এর আগে ২০১৮ বিশ্বকাপেও নকআউটে খেলেছিল তারা।

আর এশিয়া থেকে তৃতীয় দল হিসেবে নকআউট নিশ্চিত করে দক্ষিণ কোরিয়া। প্রথম ম্যাচে উরুগুয়ের সঙ্গে ড্র করলেও দ্বিতীয় ম্যাচে ঘানার কাছে হেরে যায় তারা। তবে শেষ ম্যাচে পর্তুগালকে ২-১ গোলে হারানোয় এবং গোল ব্যবধানে উরুগুয়ের চেয়ে এগিয়ে থাকায় নকআউট নিশ্চিত হয় তাদের।

২০০২ সালে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হয়েছিল এশিয়া মহাদেশে। সেই আসরের যৌথ আয়োজক ছিল দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপান। মূলত তখন থেকেই এশিয়ায় ফুটবলের উত্থান শুরু। কাতার বিশ্বকাপের মতো সেই আসরে এশিয়ান দলগুলোর নিজেদের শক্তিমত্তার জানান দিয়েছিল।

নজর কেড়েছে তাদের প্রাণবন্ত ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ফুটবল উপহার দিয়ে। সেই বেলজিয়াম, রাশিয়া ও তিউনিশিয়ার মতো দলগুলোর সঙ্গে অপরাজিত থেকে গ্রুপ পর্ব পার করে জাপান। সাত পয়েন্ট নিয়ে শেষ ষোলোতে পা রাখে তারা। তবে নকআউট পর্বে তুরস্কের কাছে হেরে গিয়ে বিশ্বকাপ মিশন শেষ হয় ব্লু সামুরাইদের।

অন্যদিকে স্বাগতিক হিসেবে রূপকথার মতো বিশ্বকাপ কাটায় দক্ষিণ কোরিয়া। সেই আসরেও দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গী ছিলো পর্তুগাল। আর বাকি দুই দল ছিল যুক্তরাষ্ট্র ও পোল্যান্ড।

তুলনামূলক দুর্বল দল হয়েও সেবার পর্তুগালকে হারিয়ে শেষ ষোল নিশ্চিত করে তারা। এরপর নকআউটে ইতালি এবং কোয়াটার ফাইনালে স্পেনকে হারিয়ে সেমিফাইনাল পর্যন্ত উঠেছিল এশিয়ার বাঘরা। তবে সেমিফাইনালে জার্মানির কাছে হেরে স্বপ্নভঙ্গ হয় তাদের।

এরপর ২০০৬ বিশ্বকাপে এশিয়ার দেশগুলো তেমন ভালো পারফরমেন্স দেখাতে পারেনি। এশিয়া থেকে নকআউটে অংশ নেয় শুধু অস্ট্রেলিয়া। এরপর ২০১০ বিশ্বকাপে আবারো জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া নকআউটে পৌঁছায়। আর ২০১৪ সালে আলজেরিয়া খেলে নকআউটে।

এবার কাতার বিশ্বকাপে ফুটবলের পরাক্রমশালী লাতিন আমেরিকা থেকে শেষ ষোলোয় উঠতে পেরেছে মাত্র ২টি দেশ। এছাড়া আফ্রিকা মহাদেশ থেকেও শেষ ষোলোয় উঠতে পেরেছে ২টি দেশ। উত্তর আমেরিকা থেকে ১টি দেশ। বাকি ৮টি দেশ নকআউটে এসেছে ইউরোপ মহাদেশ থেকে। আর বাকি ৩টি দেশ এসেছে এশিয়া মহাদেশ থেকে। যা এশিয়া মহাদেশ থেকে বিশ্বকাপে অংশ নেয় এক আসরের মধ্যে সর্বোচ্চ।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App