×

সম্পাদকীয়

রাজস্ব আয় বাড়াতে নতুন উদ্যোগ জরুরি

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৩ ডিসেম্বর ২০২২, ১২:১৩ এএম

রাজস্ব আয় বাড়াতে নতুন উদ্যোগ জরুরি

রাজস্ব আয়ে দিন দিন ঘাটতির পরিমাণ বাড়ছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম ৪ মাসে রাজস্ব ঘাটতি দাঁড়িয়েছে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা। করোনার লকডাউনের পর থেকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ভ্যাট আদায়ে বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে- এটা এখনো চলমান। মাঝে কয়েক মাস আমদানি-রপ্তানি বেড়েছিল, স্থানীয় উৎপাদন ও সরবরাহ শৃঙ্খলেও গতি আসে। ফলে রাজস্ব আদায়ও বেড়েছিল। বৈশ্বিক মন্দা, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ সবকিছু তছনছ করে দিচ্ছে যেন। দারুণভাবে প্রভাব পড়ছে অর্থনৈতিক খাতে। এটা খুবই শঙ্কার বিষয়। এনবিআরের মতে, চলতি অর্থবছরে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা। সেই হিসাবে অর্থবছরের প্রথম ৪ মাসে (জুলাই-অক্টোবর) লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৯৭ হাজার ৩০৬ কোটি টাকা। আর এনবিআর রাজস্ব আদায় করেছে ৯০ হাজার ৯০১ দশমিক ৯৯ কোটি টাকা। অর্থাৎ অর্থবছরের প্রথম ৪ মাসে ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৪০৪ কোটি টাকা। এছাড়া মাস হিসাবে অক্টোবরে রাজস্ব আদায় হয়েছে ২৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকা। তারা বলছে, ডলার সংকটের কারণে পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে কড়াকড়ি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে কমে গেছে পণ্য আমদানি। আর আমদানি কমায় শুল্ক আয় কমেছে। অপরদিকে সব ধরনের পণ্যের দাম চড়া। কিন্তু মানুষের আয় বাড়েনি। মূল্যস্ফীতি বেড়ে যাওয়ায় মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমেছে। আর ক্রয়ক্ষমতা কমে যাওয়ায় মানুষের ভোগব্যয়ের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এরই প্রভাবে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে ভ্যাট আদায়ে। এছাড়া মানুষের আয়-উপার্জন কম। ব্যবসা-বাণিজ্য কমে গেছে। তাহলে ট্যাক্স আসবে কোত্থেকে? দোকানপাটে বিক্রি নেই, ফলে ভ্যাট আদায়ও কম। দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড, ব্যবসা-বাণিজ্য প্রভৃতি ব্যাপক বৃদ্ধি পেলেও ২০১১ সালের পর রাজস্ব প্রশাসনে আর কোনো সংস্কার হয়নি। জনবল ও অফিস সংখ্যা বৃদ্ধি তথা প্রশাসনিক সংস্কারের জন্য কয়েক বছর আগে প্রস্তাব প্রণীত হলেও এ প্রস্তাব সরকারের অনুমোদনের জন্য এখনো অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ থেকে পাঠানো সম্ভব হয়নি। ফলে কাক্সিক্ষত সংস্কার বিলম্বিত হচ্ছে। এমনি পরিস্থিতিতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড করের আওতা বাড়ানোসহ নানা পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। তবে এসব পরিকল্পনা খুবই শ্লথ গতির। বিনিয়োগ বাড়াতে পারলেই কেবল পরিকল্পনা বাস্তবায়ন সম্ভব। রাজস্ব আয় বাড়ানো এর শর্ত। এ ক্ষেত্রে সর্বাগ্রে দরকার করবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি। সেখানে রাজস্ব প্রদানে সেবা নিশ্চিত, অনুকূল রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং আইন-কানুন সময়োপযোগী করা গুরুত্ব পাবে। পরিকল্পনাজনিত সমস্যা তো রয়েছেই, সঙ্গে রয়েছে প্রাতিষ্ঠানিক নানা জটিলতা। আছে দুর্নীতির অভিযোগও। এসব বিষয়ে সরকারকে আরো জোরালো ভূমিকা নিতে হবে। সর্বোপরি জাল বৃদ্ধি, কর সংগ্রহের গতি আনা, সব জেলা ও উপজেলায় রাজস্ব অফিস স্থাপন এবং কর জরিপ পরিচালনার জন্য প্রশাসনিক সংস্কারের কোনো বিকল্প নেই।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App