×

জাতীয়

রাজশাহীর সমাবেশে প্রবীণদের সরব উপস্থিতি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৩ ডিসেম্বর ২০২২, ১০:১৫ এএম

রাজশাহীর সমাবেশে প্রবীণদের সরব উপস্থিতি

রাত থেকেই রাজশাহীর সমাবেশস্থলে বিএনপির প্রবীণ নেতাদের আনাগোনা শুরু হয়। ছবি: ভোরের কাগজ

বিএনপির রাজশাহী বিভাগীয় গণসমাবেশে বৃদ্ধ ব্যক্তিদের সরব উপস্থিতি চোখে পড়েছে। পুলিশের বিভিন্ন বাধা উপেক্ষা করে সমাবেশস্থলে এসেছেন তারা। দাবি জানিয়েছেন, জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিতের।

শনিবার (৩ ডিসেম্বর) বিকেলে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখবেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এতে দলের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক স্থায়ী কমিটির সদস্য বক্তব্য রাখবেন। তবে সড়বপথে রাজশাহীর সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সমাবেশে আসতে বেশ সমস্যায় পড়তে গয় দলটির নেতাকর্মীদের।

বগুড়া থেকে সমাবেশে এসেছেন ষাটোর্ধ্ব নুরুল হক। বিএনপির এ কর্মী বলেন, ধর্মঘটের কারণে দুর্ভোগ এড়াতে চার দিন আগে চলে এসেছি। আসার সময় অনেক স্থানে বাধার সম্মুখীন হতে হয়েছে। সমাবেশে যোগদানের কারণ সম্পর্কে নুরুল হক বলেন, ‘তেল, চাল, গ্যাস, সারসহ সকল জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে সমাবেশে এসেছি। এছাড়া খালেদা জিয়ার মুক্তি ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন চাই। আমরা যাতে ভোট দিতে পারি সেই অধিকার চাই।’

জয়পুরহাটের সদর উপজেলা থেকে চারদিন আগে এসেছেন কামরুজ্জামান প্রিন্স। তিনি বলেন, ‘এই অবৈধ সরকারের পতন চাই। বিএনপি ক্ষমতায় আসতে হবে একথা বলিনি, কিন্তু গণতান্ত্রিক সরকার চাই। আজ ২০ দিন যাবত আমার থানায় প্রতিটি বাড়িতে তল্লাশি করা হচ্ছে। নানা আত্যাচারের ফলে আমরা অতিষ্ঠ হয়ে গেছি। এই সরকার না পাল্টাইলে ভবিষ্যতে আরও ক্ষতি হইবে।’ শারীরিক অসুস্থতা সত্ত্বেও নওগাঁর মান্দা থেকে বিভাগীয় গণসমাবেশে এসেছেন অশীতিপর বৃদ্ধ ইউসুফ আলী।

তিনি বলেন, ‘আমরা অসহায় মানুষ, আমাদের গণতন্ত্র দরকার। আর সঙ্গে খালেদা জিয়ার মুক্তি দরকার’।

ইউসুফ আরও বলেন, ‘আমরা দেশ স্বাধীন করতে লাইগ্যা সবাই ছিলাম একাকার। কিন্তু আমাদের একাকারের মূল্য কিছু নাই। গণতন্ত্র হারিয়ে গেছে, গণতন্ত্র ভালোবাসি। তাই এই গণতন্ত্র উদ্ধারের খাতিরেই আমরা মরি আর বাঁচি, সমাবেশে আসছি।’ ইউসুফের দাবি, ‘মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি ৮২ মুক্তিযোদ্ধাকে দেখাশোসানা করেছেন, ১৭ জন মুক্তিযোদ্ধার সার্টিফিকেট তার হাতে থাকাকালীন তিনি কিছু হতে পারেননি।

এদিকে সমাবেশের জন্য শুক্রবার রাতে রাজশাহী পৌঁছে মাদরাসা মাঠ পরিদর্শনে যান দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ অন্যান্য কেন্দ্রীয় নেতারা। এ সময় তিনি নেতাকর্মীদের ধন্যবাদ জানান। তবে সড়কপথ বন্ধ হলেও নদীপথে নৌকাযোগে সমাবেশে আসেন হাজার হাজার নেতাকর্মী। এ বিষয়ে জেলা বিএনপির আহবায়ক আবু সাঈদ চাঁদ বলেন, বাধা দিয়ে গণজোয়ার ঠেকানো যাবে না। ৫০ হাজার নেতাকর্মী নদীপথে সমাবেশে আসছেন। সমাবেশ সফল হবেই।

অন্যদিকে সমাবেশ ঘিরে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হয়েছে রাজশাহীকে। সমাবেশস্থলসহ নগরী ও জেলার বিভিন্ন প্রবেশপথে চেকপোস্ট বসিয়েছে পুলিশ। নগরীর প্রধান প্রবেশদ্বারের পাশাপাশি রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনেও চলছে পুলিশি তল্লাশি। নগরীর শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় এসব চেকপোস্ট বসানো হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

রাজশাহী-নাটোর মহাসড়কের পুঠিয়া, বেলপুকুর, কাটাখালি ও তালাইমারি, রাজশাহী-নওগাঁ মহাসড়কের মোহনপুর, নওহাটা ও নওদাপাড়া এবং রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ মহাসড়কের গোদাগাড়ী ও কাশিয়াডাঙ্গা মোড়ে পুলিশের বিশেষ চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। নগর ও জেলা পুলিশ এসব চেকপোস্ট পরিচালনা করছে। এর বাইরে রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন, নগরীর গুরুত্বপূর্ণ মোড় ও সমাবেশের আশপাশের সড়কেও সতর্ক অবস্থানে থাকতে দেখা গেছে পুলিশ সদস্যদের।

এ বিষয়ে জেলা পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইফতেখায়ের আলম বলেন, আমাদের প্রত্যেক থানা এরিয়ায় চেকপোস্ট রয়েছে, নিয়মিতই চেকপোস্ট কার্যক্রম চলে। সম্প্রতি সংখ্যাটা আরও বাড়ানো হয়েছে। সমাবেশকে ঘিরে কোথাও যেন বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি না হয় সেজন্য নজর রাখছে পুলিশ।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App