চাহিদা ও আবাদ ‘বাড়ছে’ চুইয়ের
কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৩ ডিসেম্বর ২০২২, ১১:১৩ এএম
সারা দেশের মত খুলনা অঞ্চলেও বাড়ছে চুইয়ের চাহিদা। ফলে প্রতিবছর এ অঞ্চলে বাড়ছে বাণিজ্যিক ও ব্যক্তি উদ্যোগে চুই ঝালের চাষও বৃদ্ধি পাচ্ছে।
চুই গাছের শিকড়, কাণ্ড বা লতা কেটে টুকরো করে রান্নায় ব্যবহার করা হয়।“খুব তীব্র নয়, ঝাল ঝাল ভাব। এই ভাবটাই স্বাদটাকে আরও বেশি রসময় করে তোলে। স্বাদের পাশাপাশি ওষধিগুণ থাকায় দিন দিন এর চাহিদা ব্যাপক হারে বাড়ছে।
খুলনা জেলার বিভিন্ন উপজেলার ন্যায় ডুমুরিয়ায় বেড়েছে চুইঝালের জনপ্রিয়তা।অনেকেই সাধারণ তরকারিতেও এই মসলা ব্যবহার করছে।
২০১২ সালের খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার বান্ধা এলাকার অশোক বৈরাগী প্রথম এ অঞ্চলে চুইগাছের ডগা কেটে মাটিতে লাগিয়ে বাণিজ্যিকভাবে চেইয়ের চাষ শুরু করেন। এর পর চাহিদার পাশাপাশি চাষির সংখ্যাও দিন দিন বেড়েছে।
খুলনার কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি চুই মানভেদে ৩০০ থেকে ১ হাজার ৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। শিকড় চুইয়ের দাম সবচেয়ে বেশি।
২০২১-২২ সালে খুলনার ডুমুরিয়া ও বটিয়াঘাটা উপজেলাতে ৬০ হেক্টর জমিতে চুইয়ের চাষ হচ্ছে বলে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খুলনার উপ- পরিচালক হাফিজুর জানান।
খুলনা বিভাগের চার জেলা খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা ও নড়াইলে মোট ৯৯ দশমিক ৭ হেক্টর জমিতে চুইয়ের চাষ হচ্ছে। এর মোট উৎপাদন প্রায় ১৯০ মেট্রিকটন। ৩ হাজার ৫৭০ জন কৃষক এসব জেলাতে চুই চাষের সঙ্গে যুক্ত।
এর আগে ২০২০-২১ সালে খুলনায় ৫৫ দশমিক ৫ হেক্টর জমিতে চুইয়ের চাষ হয়েছিল। ২০১৯-২০ সালে চাষ হয় ৪৭ হেক্টর জমিতে। ২০১৮-১৯ সালে চাষ হয় ৪১ হেক্টর জমিতে। ২০১৭-১৮ সালে চাষ হয় ৩৫ হেক্টর জমিতে।
আর খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা ও নড়াইলে ২০২০-২১ সালে ৮৯ হেক্টর জমিতে চুইয়ের চাষ হয়েছিল। ২০১৯-২০ সালে এর পরিমাণ ছিলো ৮০ হেক্টর জমিতে। ২০১৮-১৯ সালে চাষ হয় ৭৪ হেক্টর জমিতে। ২০১৭-১৮ সালে চাষ হয় ৬০ হেক্টর জমিতে।
খুলনা নগরীর গল্লামারি কাঁচাবাজারে একজন অভিজ্ঞ চুই বিক্রেতা জানান, রংপুর, কুড়িগ্রামের পাইকারি বিক্রেতা ছাড়াও খুলনার ডুমুরিয়া, যশোরের কেশবপুর, মনিরামপুর, ও বাগেরহাটের ফকিরহাট এলাকার চাষি-গৃহস্থদের কাছ থেকে চুই কিনে তার দোকানে বিক্রি করেন।
আগের থেকে চুয়ের চাহিদা চারগুণ বেড়েছে বলে জানান তিনি।
এ বাজারের আরেক জন চুই ব্যবসায়ী বলেন, আমি ১৫ বছর ধরে চুই বিক্রি করছি। আগের থেকে চুইয়ের চাহিদা কয়েকগুণ বেড়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খুলনার উপ-পরিচালক মো. হাফিজুর রহমান জানান, চুই বর্তমানে দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সম্ভাবনাময় কৃষিপণ্য। ওষধিগুণ থাকায় এর চাহিদা ও ব্যবহার বেড়েই চলছে। খুলনা বিভাগে চুই এত জনপ্রিয় যে একে খুলনার কৃষিপণ্য হিসেবে ব্র্যান্ডিং করা হয়েছে।