কাতার বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে ২-০ গোলে হারে পোল্যান্ড। এ ম্যাচে লিওনেল মেসির পেনাল্টি কিক ঠেকিয়ে দেন পোলিশ গোলরক্ষক ওজসিচ শেজনি। এর আগে সৌদি আরবের বিপক্ষে জেতা ম্যাচেও একটি পেনাল্টি সেভ করেছিলেন তিনি। সালেম আলদাসওয়ারির পেনাল্টি রুখে দিয়েছিলেন পোলিশ গোলরক্ষক। তাতেই এক বিশ্বকাপে দুই পেনাল্টি সেভ করে রেকর্ডবইয়ে জায়গা করে নিয়েছেন শেজনি।

বিশ্বকাপের ইতিহাসে তার আগে এমনটা করতে পেরেছেন কেবল দুজন। তারা হলেন যুক্তরাষ্ট্রের ব্রড ফ্রিয়ডেল (২০২২ বিশ্বকাপ) এবং পোল্যান্ডের জন টমাসজেউক্সি (১৯৭৪ বিশ্বকাপ)। ফলে তৃতীয় গোলরক্ষক হিসেবে একই বিশ্বকাপে দুটি পেনাল্টি সেভ করে রেকর্ডবইয়ে নাম লেখালেন এই পোলিশ গোলরক্ষক।

কাতার বিশ্বকাপে চমক দেখিয়েই চলেছেন পোলিশ গোলরক্ষক। পোল্যান্ড জেতেনি ঠিকই, তবে প্রতিপক্ষের হৃদয় কেড়ে নিয়েছেন গোলরক্ষক সেজনি। দুর্দান্ত সব সেভ উপহার দিয়েছেন। পোল্যান্ড শেষ ষোলোয় থাকার পেছনে তার অবদান সবচেয়ে বেশি। স্টেডিয়াম ৯৭৪-এ পোল্যান্ডের গোলমুখে ১২টি শট নিয়েছে আর্জেন্টিনা।

যার ১০টিই ঠেকিয়ে দিয়েছেন সেজনি। ৩৬ মিনিটে পেনাল্টি থেকে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পায় আলবিসেলেস্তারা। ডি-বক্সে লিওনেল মেসিকে ফাউল করে বসেন পোল্যান্ড গোলরক্ষক। স্পট কিক থেকে সেই মেসিই আবার শট নিতে আসেন। কিন্তু সেজনির বাধা টপকাতে পারেননি। মেসির শট বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে ডান হাত দিয়ে ঠেকান তিনি। তার উচ্ছ্বাসই বলে দিচ্ছিল নিজের ওপর আত্মবিশ্বাস কতটা অটুট ছিল।

শুধু ওই পেনাল্টির মুহূর্তই নয়, কাতার বিশ্বকাপে একের পর এক চমক দেখিয়েই চলেছেন সেজনি। জুভেন্টাসে খেলা এই গোলরক্ষক বেশ ভালোভাবে নিজেকে আলোচনায় রেখেছেন এবার। সৌদি আরবের বিপক্ষে ম্যাচে পেনাল্টি ঠেকিয়ে তাক লাগিয়ে দেন তিনি। সালেহ আল শেহরিকে ডি-বক্সে ক্রিস্তিয়ান ব্রিক ফাউল করলে পেনাল্টি পায় সৌদি আরব। যদিও রেফারির চোখে প্রথমে তা ধরা পড়েনি। তবে ভিএআর দেখার পর সিদ্ধান্তে পরিবর্তন আসে। স্পট কিক থেকে নেয়া সালেম আল-দোসারির শট কোনোভাবেই জালে ঢুকতে দেননি সেজনি। মোহাম্মেদ আল-ব্রেইকের নেয়া ফিরতি শটও বেশ দক্ষতার সঙ্গে বিপদমুক্ত করেন তিনি। পেনাল্টি ছাড়াও ম্যাচের অন্য সময়গুলোতেও পোল্যান্ডকে বাঁচিয়েছেন সেজনি। তাই এখন পর্যন্ত বিশ্বকাপের সেরা গোলকিপার হিসেবে তাকেই সবার আগে রাখা হচ্ছে।

আর্জেন্টিনার বিপক্ষে ম্যাচ শেষে শেজনি জানান, পেনাল্টি নিয়ে মেসির সঙ্গে ১০০ ইউরো, মানে সাড়ে ১০ হাজার টাকার বাজি ধরেছিলেন তিনি। তার মতে, ‘পেনাল্টির আগে আমরা কথা বলছিলাম। আমি তার সঙ্গে ১০০ ইউরো বাজি ধরেছিলাম যে (রেফারি) পেনাল্টি দিবে না। আমি মেসির সঙ্গে বাজি হেরে গেলাম।’ বাজি ধরার কারণে নিষিদ্ধ হতে পারেন বলে মজা করেন পোলিশ গোলকিপার, ‘আমি জানি না এই বিশ্বকাপে এটা বৈধ কিনা। আমি হয়তো নিষেধাজ্ঞা পেতে যাচ্ছি। কিন্তু ওসব নিয়ে আমার মাথা ব্যথা নেই। আমি তাকে (১০০ ইউরো) দিতে পারব না। তার কিছুই যায় আসে না ১০০ ইউরোতে, আমি মনে করি তার যথেষ্ট আছে।’