×

খেলা

রেকর্ড গড়ার অপেক্ষায় ফ্রাপা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০১ ডিসেম্বর ২০২২, ১২:১৮ পিএম

রেকর্ড গড়ার অপেক্ষায় ফ্রাপা

ছবি: ভোরের কাগজ

কাতার বিশ্বকাপে আল বাইত স্টেডিয়ামে আজ রাত ১টায় মুখোমুখি হবে জার্মানি ও কোস্টারিকা। এই ম্যাচে মূল রেফারি হিসেবে থাকবেন ফ্রান্সের স্তেফানি ফ্রাপা। ছেলেদের শীর্ষ পর্যায়ের ম্যাচ পরিচালনার দায়িত্ব পালন করলেও এবার বিশ্বকাপে প্রথম নারী রেফারি হিসেবে ম্যাচ পরিচালনার কীর্তি গড়তে যাচ্ছেন তিনি। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা বিষয়টি নিশ্চিত করে।

ফুটবল ইতিহাসে আগেই নাম লিখিয়েছেন ফ্রাপা। ফ্রান্সের লিগ ওয়ান ও উয়েফা চ্যাম্পিয়নশিপে দায়িত্ব পালন করা প্রথম নারী রেফারি তিনি। গত সপ্তাহে ‘সি’ গ্রুপের পোল্যান্ড ও মেক্সিকো ম্যাচে চতুর্থ অফিসিয়াল হিসেবে ছিলেন ফ্রাপা। ছেলেদের বিশ্বকাপ বাছাইয়ে কাজ করা প্রথম নারী রেফারিও ছিলেন তিনি। ফ্রাপার সহকারী হিসেবেও থাকবেন দুই নারী রেফারি-ব্রাজিলের নেউজা বাক ও মেক্সিকোর কারেন দিয়াস।

ফ্রাপা ২০১১ সাল থেকে ফিফার আন্তর্জাতিক রেফারি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। নারী রেফারিদের মধ্যে সবচেয়ে অভিজ্ঞ ও তারকা তিনি। নারী বিশ্বকাপসহ হাই প্রোফাইল আন্তর্জাতিক ম্যাচ পরিচালনার অভিজ্ঞতা রয়েছে তার। প্রথম নারী রেফারি হিসেবে ২০১৯ সালে লিভারপুল ও চেলসির মধ্যার উয়েফা সুপার কাপের ম্যাচ পরিচালনা করেছিলেন। ২০২০ সালে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে জুভেন্টাস ও দিনামো কিয়েভের ম্যাচটিও পরিচালনা করেছিলেন। সেটিও ছিল প্রথম নারী হিসেবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোনো ম্যাচ পরিচালনার কৃতিত্ব। গত বছর ইউরোতেও প্রথম নারী হিসেবে তুরস্ক ও ইতালির ম্যাচ পরিচালনা করেছিলেন ফ্রাপা।

স্তেফানি ফ্রাপার বয়স এখন ৩৮ বছর। ফ্রান্সের হার্বলে-সার-সেইনে বেড়ে উঠেছেন এই নারী। সবাই যখন ফুটবল শেখেন, সেই সময় থেকে রেফারি হিসেবে দায়িত্ব পালন শুরু করেন ফ্রাপা। তিনি জানান, ‘১৩ বছর বয়স থেকে প্রতি শনিবারে ফুটবল খেলি আর রবিবারে রেফারির কাজ করি। বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশের পরে পড়াশোনার বিষয় হিসেবে খেলাধুলাকেই বেছে নেই।’ মাত্র ১৮ বছর বয়সে অনূর্ধ্ব-১৯ জাতীয় ফুটবল প্রতিযোগিতায় রেফারি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন স্তেফানি। এখন তো ফুটবল মাঠের রীতিমতো তারকা। সিএনএনকে এক সাক্ষাৎকারে এই রেফারি জানান, ‘খেলার সময় স্টেডিয়ামে যখন ছুটে বেড়াই, আমার উদ্দেশ্য চিৎকার করতে থাকেন দর্শক। মাঠ থেকে তাদের দিকে তাকালে দেখতে পাই, আমার উদ্দেশে তারা হাত নাড়ছেন, শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন।’ নিজেকে সাধারণ ভাবতে ভালোবাসেন ফ্রাপা। তার মতে, ‘আমি মনে করি না আমি প্রথা ভাঙছি বা ইতিহাস তৈরি করছি। আমি শুধু আমার কাজটাই করে যাওয়ার চেষ্টা করছি।’ কাউকে অনুসরণ করেন না বলে জানান তিনি, ‘আমার কাছে কোনো ব্যক্তি আদর্শ রোল মডেল নন। আমি মনে করি, সবাই আলাদা। নিজেকে নিজের মতো করে গড়তে হবে। অনেকেই এখন রাস্তায় দেখলে আমাকে চিনতে পারেন, এটাই আমার কাছে একমাত্র পার্থক্য মনে হয়।’

কৈশোরে মিডফিল্ডে খেলতেন ফ্রাপা। ফুটবলকে ভীষণ ভালোবাসেন জানিয়ে ফ্রাপা বলেন, ‘একজন নারী হিসেবে অনেক কিছু প্রমাণ করতে হয় আমাদের। ফুটবল মাঠেও কমবেশি নিজেকে প্রমাণ করতে হচ্ছে।’ তারকা রেফারি হিসেবে ইউরোপিয়ান ফুটবল ইউনিয়ন উয়েফার চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ফ্রাপা উপস্থিত ছিলেন। সেখান থেকে প্রতি ম্যাচে প্রায় ৪ হাজার ৮০০ থেকে ৫ হাজার ৮০০ ইউরো আয় করেন তিনি। নিজের কাজ নিয়ে মাঠে বেশ সমীহ পান ফ্রাপা। লিভারপুল ক্লাবের কোচ ইয়ুর্গেন ক্লপ উয়েফা সুপারকাপ ফাইনালের পরে তিনি বলেন, ‘আপনি ফ্রাপার চেয়ে ভালো খেলা নিয়ন্ত্রণ করতে পারতেন না।’ ইউরোপের বিভিন্ন ক্লাব ফুটবল মাচে পর্তুগিজ ফুটবলার ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো থেকে শুরু করে ফরাসি ফুটবলার কিলিয়ান এমবাপ্পের পায়ের বল নিয়ে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন ফ্রাপা।

এবারের কাতার বিশ্বকাপ মাতাবেন ৬ নারী রেফারি। যেখানে স্তেফানি ফ্রাপা ছাড়াও আছেন রুয়ান্ডার সালিমা মুকাসানগা, জাপানের ইয়োশিমি ইয়ামাশিতা, ব্রাজিলের নেউসা বাক, মেক্সিকোর কারেন দিয়াস মেদিনা এবং যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাথরিন নেসবিট।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App