বিএনপি লাঠি নিয়ে এলে, খেলা দেখানো হবে
কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৯ নভেম্বর ২০২২, ০৯:০৬ পিএম
নেত্রকোনা জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। ছবি: সংগৃহীত
সভাপতি এডভোকেট আমীরুল ইসলাম
সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট সামছুর রহমান ভিপি লিটন
ছবি: ভোরের কাগজ
বিএনপি যদি সহিংস পরিস্থিতির সৃষ্টি করে, আগুন আর লাঠি নিয়ে আসে, তবে খেলা কাকে বলে, তা দেখানো হবে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
মঙ্গলবার (২৯ নভেম্বর) বিকেলে নেত্রকোনা জেলার মোক্তারপাড়া মাঠে আয়োজিত আওয়ামী লীগের সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, খেলা হবে, ডিসেম্বর মাসে খেলা হবে। আগামী নির্বাচনে দুর্নীতিবাজ, জঙ্গীবাদ ও আগুন সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে খেলা হবে। আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় বিএনপির মহাসমাবেশকে ঘিরে দলীয় নেতাকর্মীদেরকে আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়ে বলেন, বিএনপির নেতাকর্মীরা যদি আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের উপর হামলা চালায়, তাহলে জনগনকে সাথে নিয়ে পাল্টা হামলা করা হবে। তিনি দলীয় নেতাকর্মীদেরকে সরকারের নানা উন্নয়ন কর্মকান্ড বেশী বেশী করে জনগনের সামনে তুলে ধরার আহবান জানান।
[caption id="attachment_386630" align="aligncenter" width="1600"] ছবি: ভোরের কাগজ[/caption]তিনি বলেন, বিএনপি সমাবেশের নামে সমাবেশস্থলে এক সপ্তাহ আগে থেকেই কাঁথা-বালিশ, লেপ-তোশক, কম্বল, পাটি নিয়ে জড়ো হয়। শুধু তাই নয়, তারা মশার কয়েল পর্যন্ত নিয়ে এসে শুয়ে থাকে। আমরা তাদের ১০ তারিখের (ডিসেম্বর) কর্মসূচিতে কোনো বাধা দিতে চাই না। তবে এবার খেলা হবে। খেলা হবে, যদি তারা সহিংস পরিস্থিতির সৃষ্টি করে, আগুন আর লাঠি নিয়ে আসে, তবে খেলা কাকে বলে, তা দেখানো হবে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, এবার খেলা হবে, মাস্টারমাইন্ড হাওয়া ভবনের ছোকরা তারেকের বিরুদ্ধে। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘ফখরুল সাহেব, জনসমুদ্র কাকে বলে নেত্রকোনায় এসে দেখে যান। আপনারা কয়েকজন লোক ভাড়া করে এনে বক্তব্যে বলেন বিএনপির জনসমুদ্র। এখানে আসেন, দেখেন, মানুষ কারে কয়।
ওবায়দুল কাদের বলেন, অন্যান্য দেশে যেভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, আমাদের দেশেও সেই ভাবেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সংবিধান অনুযায়ী আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। শেখ হাসিনা সরকার রুটিন মাফিক দায়িত্ব পালন করবেন। নির্বাচন কমিশন নির্বাচন পরিচালনা করবেন। এই সরকারের অধীনেই দেশে অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নিবার্চন অনুষ্ঠিত হবে ইনশাল্লাহ্। তিনি মির্জা ফখরুলকে হুশিয়ারী উচ্চারণ করে বলেন, নেত্রকোনায় এসে দেখে যান সম্মেলনে মানুষের ঢল কাকে বলে। আওয়ামীলীগ জনগনের দল। আওয়ামী লীগের শেকড় অনেক গভীরে প্রোথিত। কয়েকটি সমাবেশ করে বিএনপির নেতারা আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতা থেকে টেনেহেঁচড়ে নামানোর হুমকি দিচ্ছে। আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ থাকলে কেউ তাদেরকে নির্বাচনে পরাজিত করতে পারবে না। তাই এই মুহূর্তে দলীয় নেতাকর্মীদেরকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। সরকারের উন্নয়নমূলক কাজের কথা উল্লেখ করে আ. লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, এই উন্নয়ন টিকিয়ে রাখতে হলে বারবার শেখ হাসিনা সরকারকে ভোট দিয়ে ক্ষমতায় আনতে হবে। তা না হলে এই বিএনপি যদি ক্ষমতায় আসে, তাহলে আবার ধ্বংসযজ্ঞ হয়ে যাবে। আমাদের ক্ষমতার উৎস বন্দুকের নলে নয়। জনগণের সমর্থনেই আওয়ামী লীগ টিকে আছে।ওবায়দুল কাদের বক্তব্যের শেষে বলেন, শেখ হাসিনাই একমাত্র গণতন্ত্রের নেতা। তার মতো আর কেউ নেই। আওয়ামী লীগকে বাঁচাতে হবে, গণতন্ত্রকে বাঁচাতে হবে। মুক্তিযুদ্ধকে বাঁচাতে হবে, তা না হলে খবর আছে। খেলা হবে। কী ভাইয়েরা, কিসের খেলা হবে? গণতন্ত্রবিরোধীদের বিরুদ্ধে, আন্দোলনের নামে যারা মানুষ পুড়িয়ে মারে, ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেয় তাদের বিরুদ্ধে খেলা হবে।
এর আগে দুপুরে জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মতিয়র রহমান খান।
সাধারণ সম্পাদক সমাজ কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা আশরাফ আলী খান খসরু এমপির সঞ্চালনায় এতে সন্মানিত অতিথি হিসেবে সম্মেলন উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য কৃষি মন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক। প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও শিক্ষামন্ত্রী ডা. দিপু মনি এমপি। সম্মেলনে অতিথি বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, মির্জা আজম এমপি, শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক অসিম কুমার উকিল এমপি, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, সদস্য মারুফা আক্তার পপি, উপাধ্যক্ষ রেমন্ড আরেং সহ অনেক নেতা।
উল্লেখ্য দীর্ঘ ৬ বছর ৯ মাস পর আজ ২৯ নভেম্বর মঙ্গলবার নেত্রকোনা জেলা আওয়ামীলীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হল।এর আগে সর্বশেষ জেলা আওয়ামীলীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল বিগত ২০১৬ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারী। সম্মেলনের দ্বিতীয় পর্বে কাউন্সিল অধিবেশনে আগামী তিন বছরের জন্য সভাপতি হিসেবে বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট আমিরুল ইসলামকে সভাপতি ও সাধারন সম্পাদক হিসেবে এডভোকেট সামছুর রহমান ভিপি লিটনের নাম ঘোষণা করা হয়। [caption id="attachment_386628" align="aligncenter" width="480"] সভাপতি এডভোকেট আমীরুল ইসলাম[/caption] [caption id="attachment_386629" align="aligncenter" width="720"] সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট সামছুর রহমান ভিপি লিটন[/caption]