×

শিক্ষা

ইংরেজিতে ফেলের প্রভাব চট্টগ্রামের সার্বিক ফলাফলে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৯ নভেম্বর ২০২২, ০৮:৫২ এএম

ইংরেজিতে ফেলের প্রভাব চট্টগ্রামের সার্বিক ফলাফলে

প্রতীকী ছবি

পর্যাপ্ত শিক্ষকের অভাব বলছে কর্তৃপক্ষ

এসএসসি পরীক্ষায় চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে এবার পাসের হার ৮৭ দশমিক ৫৩ শতাংশ। গত বছর পাসের হার ছিল ৯১ দশমিক ১২ শতাংশ, যা এবারের তুলনায় ৩ দশমিক ৫৯ শতাংশ বেশি। রেকর্ড পাসের পর এ বছরের ফলাফলে পাসের হার কমেছে। ইংরেজি দ্বিতীয় পত্রে ফল খারাপ হওয়ার কারণে তা সার্বিক ফলাফলে প্রভাব ফেলেছে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তারা। স্কুলে ইংরেজি বিষয়ের পর্যাপ্তসংখ্যক শিক্ষক না থাকায় এই বিষয়ে ফলাফল খারাপ হয়েছে বলেও মন্তব্য করেছেন তারা। এদিকে ঘোষিত ফলাফলে গ্রামের চেয়ে মহানগর এলাকার বেশি শিক্ষার্থী পাস করেছে। আবার চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের অধীনে চট্টগ্রামসহ ৫ জেলার মধ্যে বেশি পাস করেছে চট্টগ্রামে।

গতকাল সোমবার দুপুরে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক নারায়ণ চন্দ্র নাথ সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ বছর অনুষ্ঠিত এসএসসি পরীক্ষার ফল ঘোষণা করেন। প্রকাশিত ফলাফলে দেখা গেছে, চট্টগ্রাম জেলা ও মহানগর, ৩ পার্বত্য জেলা এবং কক্সবাজার মিলিয়ে এবার পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে ১ লাখ ৪৮ হাজার ৫৩৯ জন। বহিষ্কার করা হয় ৫ জনকে। বাকি পরীক্ষার্থীদের মধ্যে পাস করেছে ১ লাখ ৩০ হাজার ১৩ জন, ফেল করেছে ১৮ হাজার ৫২১ জন। পাসের হার ৮৭ দশমিক ৫৩ শতাংশ। অকৃতকার্যের হার ১২ দশমিক ৪৭ শতাংশ। জিপিএ-৫ অর্জনে গত ৭ বছরে এবার রেকর্ড গড়েছে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ড। এবার জিপিএ-৫ পেয়েছে মোট ১৮ হাজার ৬৬৪ জন, এর মধ্যে ছাত্রীরা এগিয়ে। তাদের মধ্যে ছাত্রী ১০ হাজার ৮৮৯ জন এবং ছাত্র ৭ হাজার ৭৭৫ জন। ছাত্রীদের মধ্যে বিজ্ঞানে ৭ হাজার ৭৯০ জন, মানবিকে ৪১৩ জন এবং ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ থেকে ২ হাজার ৬৮৬ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে। গত বছর মোট জিপিএ-৫ পেয়েছিল ১২ হাজার ৭৯১ জন। এবার ছাত্র ও ছাত্রীদের পাসের হার প্রায় সমান। মোট পরীক্ষার্থীর মধ্যে এবার ছাত্রী ৮০ হাজার ৫২৬ জন এবং ছাত্র ৬৮ হাজার ১৩ জন। ছাত্রীদের পাসের হার ৮৭ দশমিক ৬৯ শতাংশ এবং ছাত্র ৮৭ দশমিক ৩৩ শতাংশ।

পাসের দিক থেকে এবার এগিয়ে বিজ্ঞান বিভাগের পরীক্ষার্থীরা। বিজ্ঞানে ৯৬ দশমিক ৮১ শতাংশ, ব্যবসায় শিক্ষায় ৯১ দশমিক ৩০ শতাংশ এবং মানবিকে পাসের হার ৭৮ দশমিক ৮২ শতাংশ। গত বছরের তুলনায় মানবিকে পাসের হার এবার কমেছে ১৯ শতাংশ। বিজ্ঞান ও ব্যবসায় শিক্ষায় পাসের হার গত বছরের মতোই। বিজ্ঞানে গত বছর ছিল ৯৬ দশমিক ৮২ শতাংশ এবং ব্যবসায় শিক্ষায় ৯১ দশমিক ৩০ শতাংশ। চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক নারায়ণ চন্দ্র নাথ বলেন, এবার অকৃতকার্য হওয়া ১৮ হাজার ৫২১ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১৪ হাজার ১৯৪ জনই এক বিষয়ে ফেল করেছেন। ফেল করা পরীক্ষার্থীদের মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি ইংরেজি দ্বিতীয় পত্র পরীক্ষায় ঝরে গেছে। ৭ দশমিক ৬৭ শতাংশ পরীক্ষার্থী ইংরেজি দ্বিতীয় পত্রে ফেল করেছে। এজন্য গত বছরের চেয়ে আমাদের পাসের হার কিছুটা কমেছে। ইংরেজি দ্বিতীয় পত্র ছাড়া অন্যান্য বিষয়ে ফেলের হার ১ শতাংশেরও কম। এ বিষয়ে খারাপ ফলের ক্ষেত্রে আমাদের মূল্যায়ন হচ্ছে- স্কুলে বিষয়টির পর্যাপ্তসংখ্যক শিক্ষক নেই। অন্যান্য বিভাগের শিক্ষকরা গিয়ে ইংরেজি বিষয়ে পাঠদান করেন। স্কুলে ইংরেজি বিষয়ের শিক্ষক নিয়োগ করে মানসম্মত পাঠদানের বিকল্প নেই।

প্রকাশিত ফলাফলে দেখা গেছে, চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এবার ২১৩টি কেন্দ্রে ১ হাজার ৯২টি বিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থীরা এবার এসএসসিতে অংশ নিয়েছে। এর মধ্যে শতভাগ পাস করেছে এমন বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৭১টি। গতবারের চেয়ে বেড়েছে ১৭টি। পাসের হার শূন্য এমন কোনো বিদ্যালয় নেই।

৫ জেলা ও মহানগরে এবার পাসের হার গত বছরের চেয়ে কমেছে। চট্টগ্রাম মহানগরের স্কুলগুলোতে পাসের হার ৯৪ দশমিক ২১ শতাংশ। গতবার ছিল ৯৫ দশমিক ২৭ শতাংশ। মহানগর বাদে চট্টগ্রাম জেলায় এবার পাসের হার ৮৭ দশমিক ৬৪ শতাংশ। গতবার ছিল ৯১ দশমিক শূন্য এক শতাংশ। জেলা ও মহানগর মিলিয়ে এবার পাসের হার ৮৯ দশমিক ১১ শতাংশ। গতবার ছিল ৯২ দশমিক ১৯ শতাংশ।

কক্সবাজার জেলায় এবার পাসের হার ৮৮ দশমিক ৪৫ শতাংশ, গতবার ছিল ৯০ দশমিক ৯৪ শতাংশ। রাঙ্গামাটি জেলায় এবার পাসের হার ৮১ দশমিক ৬০ শতাংশ, গতবার ছিল ৮৬ দশমিক ৮৩ শতাংশ।

খাগড়াছড়ি জেলায় এবার পাসের হার ৭৫ দশমিক ৮৭ শতাংশ, গতবার ছিল ৮৪ দশমিক ১৯ শতাংশ। বান্দরবান জেলায় এবার পাসের হার ৭৮ দশমিক ৩৬ শতাংশ, গতবার ছিল ৭৩ দশমিক ২৮ শতাংশ।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App