বিশ্বকাপে অভিষেক রাঙালেন এনজো
কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৮ নভেম্বর ২০২২, ০৮:৫৯ এএম
ছবি: সংগৃহীত
সৌদি আরবের বিপক্ষে ২-১ গোলে হেরে কাতার বিশ্বকাপের শুরুটা ভালো হয়নি আর্জেন্টিনার। তবে দ্বিতীয় ম্যাচে ঘুরে দাঁড়ায় আলবিসেলেস্তেরা। বাঁচা-মরার ম্যাচে মেক্সিকোকে ২-০ গোলে হারিয়ে নকআউট পর্বে খেলার আশা বাঁচিয়ে রেখেছে লিওনেল মেসির দল। এ ম্যাচে দলের হয়ে একটি গোল করেন এনজো ফার্নান্দেস। যেটির জন্য দীর্ঘদিন ধরে স্বপ্ন দেখেছেন তিনি। বিশ্বকাপের মঞ্চে গোল করে সেই স্বপ্নপূরণ করেন এই ২১ বছর বয়সি ফুটবলার।
আর্জেন্টিনার দেয়ালে পিঠ ঠেকা অবস্থায় স্বস্তির জয়ের পর এনজো জানান, ‘শিশুকাল থেকেই আমি সবসময় এই জার্সিতে খেলার স্বপ্ন দেখতাম। আমি বিশ্বকাপে একটা গোল করে আমার স্বপ্ন সত্যি করলাম।’ দুইবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের জয়ে উচ্ছ¡সিত ফুটবলার স্মরণ করেন ভক্ত-সমর্থকদের, ‘সাফল্যে আমি খুবই খুশি। এই দলের এটা প্রাপ্য ছিল।
এই জয় সকল ভক্তের জন্য, যারা অনেক পথ পাড়ি দিয়ে এখানে এসেছে এবং যারা দেশ থেকে আমাদের অনুসরণ করছে।’ পর্তুগালের ক্লাব বেনফিকায় সময়টা দুর্দান্ত কাটছে এনজো ফার্নান্দেসের। সেই ফর্ম জাতীয় দল আর্জেন্টিনার জার্সিতেও টেনে আনেন তিনি।
আক্রমণে গতি আনতে বিরতির পর ম্যাচের ৫৭তম মিনিটে এনজোকে মাঠে নামান আর্জেন্টিনা কোচ লিওনেল স্কালোনি। প্রয়োজনের সময় দারুণ পারফরম্যান্স দেখান ২১ বছর বয়সি তারকা। ৬৪তম মিনিটে মেসির জাদুকরী গোলের পর ৮৭তম মিনিটে তিনি নিশানা ভেদ করে দূর করে দেন সমস্ত অনিশ্চয়তা। তাতে পূর্ণ পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়ে আর্জেন্টিনা। বাম প্রান্তে ছোট করে নেয়া কর্নারের পর মেসি বল বাড়ান এনজোকে।
ডি-বক্সে ঢুকে পায়ের কারুকাজে সামনে থাকা মেক্সিকোর এক ডিফেন্ডারকে বোকা বানান। এরপর জোরালো বাঁকানো শট নেন তিনি। বল ঝাঁপিয়ে পড়া গোলরক্ষক গিলের্মো ওচোয়াকে ফাঁকি দিয়ে জড়ায় জালে। মেসির পর সর্বকনিষ্ঠ ফুটবলার হিসেবে আর্জেন্টিনার জার্সিতে গোল করার রেকর্ড এখন বেনফিকার এই তারকার।
আন্তর্জাতিক ফুটবলে এটাই এনজোর প্রথম গোল। মেসির পর সবচেয়ে কম বয়সে আর্জেন্টিনার হয়ে বিশ্বকাপে গোল করেন তিনি। তার লাগল ২১ বছর ৩১৩ দিন। ২০০৬ সালের আসরে সার্বিয়ার বিপক্ষে মেসি জাল খুঁজে পেয়েছিলেন মাত্র ১৮ বছর ৩৫৭ দিন বয়সে।
আর্জেন্টিনা তারকা লিওনেল মেসির জন্ম রোজারিওতে। সেখান থেকে একটু দূরে, ২০ কিলোমিটারের মতো এগিয়ে গেলেই মফস্বল শহর সান মার্তিন। সেখানে ২০০১ সালের জানুয়ারিতে জন্ম হয় এনজো ফার্নান্দেসের। সেই ফার্নান্দেস এবারের বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা দলে মেসির সতীর্থ। অথচ এই সান মার্তিনের ক্লাব লা রেকোভায় ফুটবলে হাতেখড়ি হওয়া ২১ বছর বয়সি ফার্নান্দেসের এই বিশ্বকাপে খেলারই কথা ছিল না।
আর্জেন্টিনার মাঝমাঠের মূল ভরসা জিওভান্নি লো সেলসো চোটে না পড়লে হয়তো বিশ্বকাপ দলে ডাকই পেতেন না জাতীয় দলের হয়ে পাঁচটি ম্যাচ খেলা ফার্নান্দেস। ২০১৯ সালে আর্জেন্টিনার ক্লাব রিভার প্লেটে নাম লেখানো ফার্নান্দেসকে এ মৌসুমেই দলে ভেড়ায় পর্তুগালের দল বেনফিকা। এনজো আর্জেন্টিনা জাতীয় দলে অভিষেক করেন চলতি বছর। বদলি খেলোয়াড় হিসেবে হুন্ডুরাসের বিরুদ্ধে নেমেছিলেন।
আর্জেন্টিনা ৩-০ গোলে সেই ম্যাচ জিতেছিল। এনজো দেশের হয়ে অনূর্ধ্ব-১৮ খেলেছেন মেসিদের সঙ্গে খেলার আগে। মেক্সিকোর বিরুদ্ধে বাঁচা-মরার ম্যাচ ছিল তার জীবনের পঞ্চম আন্তর্জাতিক ম্যাচ।