×

সারাদেশ

প্রধানমন্ত্রীর জনসভা ঘিরে বর্ণিল সাজে সাজছে চট্টগ্রাম

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৭ নভেম্বর ২০২২, ০২:৪৭ পিএম

প্রধানমন্ত্রীর জনসভা ঘিরে বর্ণিল সাজে সাজছে চট্টগ্রাম

ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রামে আগামী ৪ ডিসেম্বর পলোগ্রাউন্ডে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে আওয়ামী লীগের জনসভার জন্য নৌকার আদলে তৈরি হচ্ছে ১৬০ ফুট দৈর্ঘ্যরে মঞ্চ। মঞ্চের মাঝখানের ৪০-৮০ ফুটের মধ্যে একসাথে ২০০ অতিথি বসতে পারবেন। মঞ্চের উচ্চতা হবে সাত ফুট। এছাড়া মঞ্চের সামনে মুক্তিযোদ্ধা, ভিআইপি ও মহিলাদের বসার পৃথক প্যান্ডেল তৈরি করা হচ্ছে। মঞ্চ তৈরি করছে সাহাবউদ্দিন ডেকোরেটার্স। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ প্রচারে পলোগ্রাউন্ড ও আশপাশের এলাকায় বসানো হবে ঢাকা থেকে আনা ‘কলরেডি’র ১৫০টি মাইক। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য আশপাশের মানুষ যাতে শুনতে পারে এজন্য থাকছে ৩০০টি মাইক। এদিন ১০ লক্ষাধিক মানুষের উপস্থিতি ঘটানোর লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে আওয়ামী লীগ।

এই জনসভাকে আওয়ামী লীগ তাদের নির্বাচনী জনসভা হিসেবেই দেখছে। জনসভাকে সফল করা ও প্রধানমন্ত্রীকে বরণে বিশাল আয়োজন চলছে চট্টগ্রামে। বর্ণিল ব্যানার-পোস্টার-ফেস্টুন-তোরণে ছেয়ে গেছে বন্দরনগরী। জনসভাকে কেন্দ্র করে নগরজুড়ে নানা কর্মযজ্ঞের পাশাপাশি চলছে নানা ধরনের সভা ও বৈঠক। সমাবেশস্থলের আশপাশ থেকে শুরু করে নগরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড় এখন আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাদের ব্যানার-পোস্টার ও ফেস্টুনে সয়লাব। বড় বড় ব্যানারে নিজেদের অবস্থান জানান দিচ্ছেন নেতারা। কে কার থেকে বড় ব্যানার টানাবেন, এমন প্রতিযোগিতাই চলছে এখন নগরে। এছাড়া গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন রাস্তার মোড়ে প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে তৈরি করা হয়েছে তোরণ। প্রতিদিনই মিনি ট্রাকে করে প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন নেতাকর্মীরা। এছাড়া নগরের মোড়ে মোড়ে, অলিগলিতে চলছে মাইকিং।

এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভাকে ঘিরে বর্ণিল সাজে সাজছে চট্টগ্রাম। রংতুলির আঁচড়ে বিবর্ণতা দূর করে নবরূপ পেতে চলেছে বন্দরনগরী। স্থাপত্যে জমে থাকা ময়লা ও দাগ পরিষ্কার করতে কাজ করছেন চট্টগ্রামের বিভিন্ন সেবা সংস্থা। ভাঙাচোরা সড়ক সংস্কার করা হচ্ছে। ফুটপাত, সড়কদ্বীপ, ফ্লাইওভারে পড়ছে রংয়ের ছোঁয়া। প্রধানমন্ত্রীর আগমন আনন্দঘন করতে নগরের রাস্তাঘাট ও স্থাপত্যগুলোকে প্রাণ দিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। দম ফেলার ফুরসত নেই তাদের। নগরের ফ্লাইওভারগুলোও বাহারি রঙে সাজছে। এছাড়া নগরীর আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু ফ্লাইওভার থেকে এমএ মান্নান ফ্লাইওভারের মাঝের অংশটির ল্যাম্পপোস্টে ৭০-এর নির্বাচনে বিজয় ও স্বাধীনতার প্রতীক নৌকার আকৃতিতে এলইডি বাতি লাগিয়ে আলোকসজ্জা করেছে চসিক-এর বিদ্যুৎ বিভাগ।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন জানান, চট্টগ্রামের জনসভা থেকে দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা আগামী নির্বাচনে বিজয়ের জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দেবেন। আমরা স্মরণকালের সর্ববৃহৎ জনসমাগম ঘটিয়ে দেখিয়ে দিতে চাই চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ, আওয়ামী লীগ মানুষের পাশে ছিল, আছে এবং থাকবে। আর চট্টগ্রামের মানুষ আওয়ামী লীগের সঙ্গে রয়েছে ও থাকবে।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম বলেন, চট্টগ্রামের উন্নয়নের দায়িত্ব প্রধানমন্ত্রী নিজের কাঁধে নিয়ে ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে দেশের বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রাম নগরীকে সাজিয়ে তুলতে কাজ করছে সিটি করপোরেশন। চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, পলোগ্রাউন্ড মাঠে মহাসমাবেশকে ঘিরে সমগ্র চট্টগ্রাম এখন উৎসবের নগরীতে পরিণত হয়েছে। মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের যৌথ উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হবে এ জনসভা। নগরীর ৪৪টি সাংগঠনিক ওয়ার্ড থেকে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে দুই লাখের বেশি মানুষ সমাবেশে যোগদান করবে। পলোগ্রাউন্ডের বাইরে কয়েক বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে বসানো হবে মাইক। উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান এম এ সালাম বলেন, আমরা জনসভাকে স্মরণকালের বৃহত্তম সমাবেশে রূপ দিতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান বলেন, দক্ষিণ জেলার ৮ উপজেলা থেকে দেড় লাখ মানুষ সমাবেশে যোগদান করবে।

প্রসঙ্গত, ২০১২ সালের ২৮ মার্চ নগরীর পলোগ্রাউন্ড মাঠে সর্বশেষ আওয়ামী লীগের জনসভায় ভাষণ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দীর্ঘ ১০ বছর পর একই মাঠে আবার ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী। স্বাভাবিকভাবেই এ জনসভা সফল করতে প্রাণপণ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে উত্তর, দক্ষিণ ও মহানগর আওয়ামী লীগ। এক্ষেত্রে মহানগর আওয়ামী লীগের নেতারা জনসভা ঘিরে ব্যাপক প্রচারণা চালাচ্ছেন। আগামী ৪ ডিসেম্বর সকালে চট্টগ্রামে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেয়ার কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। সেটি শেষ করে ওইদিন পলোগ্রাউন্ডে আওয়ামী লীগের সমাবেশে যোগ দেবেন তিনি। পলোগ্রাউন্ডে জনসভায় যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রী বিমানবন্দর থেকে টাইগারপাস হয়ে জনসভায় আসতে পারেন। এটা বিবেচনা করে বিমানবন্দর থেকে টাইগারপাস পর্যন্ত সড়ক সংস্কার দ্রুত এগিয়ে নেয়া হচ্ছে। আবার বিকল্প হিসেবে টাইগারপাস থেকে লালখান বাজার হয়ে সেনানিবাস পর্যন্ত সড়কও দ্রুত সংস্কার করা হচ্ছে। টাইগারপাস থেকে লালখানবাজার পর্যন্ত অংশে পাইলিংয়ের কাজ বন্ধ রেখে সড়কে কার্পেটিং করা হচ্ছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App