×

জাতীয়

সাজাপ্রাপ্তদের সঙ্গে সংলাপ নয়

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৬ নভেম্বর ২০২২, ০৮:৪২ পিএম

সাজাপ্রাপ্তদের সঙ্গে সংলাপ নয়

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহিলা আওয়ামী লীগের ষষ্ঠ ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন শেখ হাসিনা। ছবি- ফোকাস বাংলা

সাজাপ্রাপ্তদের সঙ্গে সংলাপ নয়
সাজাপ্রাপ্তদের সঙ্গে সংলাপ নয়
সাজাপ্রাপ্তদের সঙ্গে সংলাপ নয়
সাজাপ্রাপ্তদের সঙ্গে সংলাপ নয়
সাজাপ্রাপ্তদের সঙ্গে সংলাপ নয়
সাজাপ্রাপ্তদের সঙ্গে সংলাপ নয়
সাজাপ্রাপ্তদের সঙ্গে সংলাপ নয়
সাজাপ্রাপ্তদের সঙ্গে সংলাপ নয়
সাজাপ্রাপ্তদের সঙ্গে সংলাপ নয়

আগামী সাধারণ নির্বাচনের আগে কোনো সংলাপ হবে না বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। শনিবার (২৬ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক কাউন্সিলে বক্তব্য দেয়ার সময় তিনি একথা বলেন।

তিনি বলেন, যেকোনো দল চাইলেই নির্বাচনে অংশ নিতে পারে। বাংলাদেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র এবং নির্বাচন কমিশন রয়েছে। কোনো দল নির্বাচনে অংশ নিতে চাইলে তারা পারবে। কোনো দলের নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সামর্থ্য না থাকলে তারা পারবে না। খবর-বাসসের

প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেকেই বলেন ডায়ালগ করতে হবে, আলোচনা করতে হবে। কাদের সাথে? ঐ বিএনপি, খালেদা জিয়া, তারেক জিয়া-সাজাপ্রাপ্ত আসামি, যারা গ্রেনেড হামলা করে আমাকে হত্যার চেষ্টা করেছে, তাদের সাথে? বাংলাদেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র রয়েছে। নির্বাচন কমিশন আছে। যাদের ইচ্ছা নির্বাচন করবে। আর নির্বাচন করার মতো শক্তি যদি কারো না থাকে, তারা হয়তো করবে না। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ নির্বাচন করবে, তারা ভোট দেবে। আর ভোট চুরি তারা মেনে নেয় না। খালেদা জিয়া ভোট চুরি করেছিল ১৫ ফেব্রুয়ারি ৯৬ সালে। বাংলাদেশের জনগণ আন্দোলন করে মাত্র দেড় মাসের মাথায়, ৩০ মার্চ তাকে টেনে ক্ষমতা থেকে নামায়। ভোট চুরির অপরাধে খালেদা জিয়া পদত্যগে বাধ্য হয়। কাজেই এই ভোট চোরেরাই ভোট চুরি করতে জানে। কিন্তু আমাদের মেয়েদের আমি বলব ভোটের অধিকার সকলের। যেকোনো নির্বাচনে আমাদের মহিলারা শান্তিপূর্ণভাবে ভোট দিবে। তারা তাদেও গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক অধিকার প্রয়োগ করবে।

স্থানীয় সরকার নির্বাচনে মহিলাদের জন্য ২০ শতাংশ কোটা থাকার কথা উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ ও জেলা পরিষদ সব জায়গায় মেয়েদের কোটা রাখা আছে। সেখানে আমাদের নারীরা সরাসরি নির্বাচন করতে পারে, কোটাতেও করতে পারে। সে সুযোগটা আমরা করে দিয়েছি। কাজেই আমরা নারী-পুরুষ সম্মিলিতভাবেই বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাব।

তিনি আরো বলেন, ২০৪১ সালের বাংলাদেশ হবে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ। আগামী প্রজন্মের জন্য সুন্দর বাংলাদেশ গড়ায় এবং বাংলার মানুষের ভাগ্য নিয়ে কেউ যেন ছিনিমিনি খেলতে না পারে, সেজন্য শতবর্ষ মেয়াদি ডেল্টা পরিকল্পনাও সরকার করে দিয়েছে। এখানে মা-বোনদেরও দায়িত্ব আছে। আপনারা রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিকভাবে আপনাদের অধিকার নিয়ে কাজ করবেন এবং দেশের উন্নয়নে অবদান রাখবেন।

পাঁচ বছর পর অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের অন্যতম সহযোগী সংগঠন মহিলা আওয়ামী লীগের এই সম্মেলনকে ঘিরে নেতাকর্মীদের মধ্যে বিপুল উচ্ছ্বাস ও উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়েছিল। বেলা আড়াইটায় সম্মেলন অনুষ্ঠানের নির্ধারিত সময়ের অনেক আগে থেকেই সারাদেশের ৭৪টি সাংগঠনিক জেলা থেকে সংগঠনের নেতাকর্মীরা বাসসহ বিভিন্ন পরিবহনে সম্মেলনস্থলে উপস্থিত হন। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা ছাড়াও ক্ষমতাসীন দলের অন্য সহযোগী-ভাতৃপ্রতীম সংগঠনের নেতাকর্মীও সেখানে সমবেত হন। লাল-সবুজ শাড়ি ও টুপি পরিহিত বিপুল সংখ্যক মহিলাদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। স্লোগান ও বাদ্যের তালে নেচে-গেয়ে সম্মেলনস্থল উৎসবমুখর রাখেন নেতাকর্মীরা। দুপুরের আগেই নেতাকর্মীদের উপচেপড়া ভিড় সম্মেলনস্থল ছাড়িয়ে আশপাশের সড়কে ছড়িয়ে পড়ে। সম্মেলন উপলক্ষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও সংলগ্ন এলাকা বর্ণাঢ্য সাজে সজ্জিত করা হয়েছিল। নৌকার আদলে তৈরি বিশাল দৃষ্টিনন্দন মঞ্চে সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের কার্যক্রম চলেছে। গোটা উদ্যানে রঙ-বেরঙের বেলুন, ব্যানার ও ফেস্টুনের পাশাপাশি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিকৃতি শোভা পেয়েছে। দুপুর পৌনে তিনটায় সম্মেলনস্থলে পৌঁছেই জাতীয় সঙ্গীতের সঙ্গে জাতীয় পতাকা, বেলুন ও কবুতর উড়িয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় সংগঠনের পতাকা উত্তোলন করেন সংগঠনের সভাপতি সাফিয়া খাতুন ও সাধারণ সম্পাদক মাহমুদা বেগম কৃক। পরে প্রধানমন্ত্রী মঞ্চে আরোহণ করলে সম্মেলনের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। শুরুতে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করা হয়। দেশ ও মানুষের উন্নয়নে টানা তিন মেয়াদে ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পঁচাত্তরে জাতির পিতাকে হত্যার পর এদেশে খুনিদের রাজত্ব আর যুদ্ধাপরাধীদের রাজত্ব ছিল। আওয়ামী লীগই একমাত্র এ দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে। আমরা পরপর তিনবার ক্ষমতায় এসেছি। গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত আছে বলেই বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে। আমরা চাই দেশ এগিয়ে যাক। সেদিকে লক্ষ্য রেখে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আওয়ামী লীগই দেশের জনগণের কল্যাণে কাজ করে। এ প্রসঙ্গে বিগত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের পাঁচ বছরের সন্ত্রাস, দুর্নীতি-লুটপাট ও দুঃশাসনের বিবরণ তুলে ধরে তিনি বলেন, কিন্তু বিএনপি কী করে? তারা ২০০১ সালে ক্ষমতায় এসে কত মেয়েকে নির্যাতন করেছে? বাংলাদেশের এমন কোনো জায়গা নেই তারা অত্যাচার করেনি। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী যেভাবে নির্যাতন করেছিল, বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় এসে ঠিক একইভাবে অত্যাচার করেছিল। আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, খালেদা জিয়া বক্তৃতা দিয়েছিলেন, শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী দূরের কথা, বিরোধী দলীয় নেতাও কখনো হবেন না। আওয়ামী লীগ একশ বছরেও ক্ষমতায় যাবে না। আল্লাহ এ ধরনের গর্বভরা কথা পছন্দ করেন না। আর বাংলাদেশের মানুষ তো একেবারেই পছন্দ করে না। এজন্য খালেদা জিয়ার মুখের কথা তার বেলায়ই লেগে গেছে। নারীর ক্ষমতায়ন ও কল্যাণে তাঁর সরকারের নানামুখী উদ্যোগ তুলে ধরে তিনি বলেন, যেকোনো অর্জনে নারীদের অবদান থাকতে হবে। সমাজের অর্ধেক নারী। তারা অচল থাকলে সমাজ এগোবে না। নারী-পুরুষকে সমান তালে এগিয়ে যেতে হবে। এজন্য আমি নারীদের বিচারপতি, সচিব, ডিসি ও এসপি হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পথ সুগম করেছি। আজ আমাদের মেয়েরা প্রতিটি ক্ষেত্রে অত্যন্ত দক্ষতার পরিচয় দিচ্ছে। জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে মেয়েরা ভালো করে বিশ্বের প্রশংসা কুড়াচ্ছে। সরকারপ্রধান বলেন, আশ্রয়ণ প্রকল্পে ঘর করে দিচ্ছি। সেখানে নারী ও পুরুষকে সমান ভাগ দিচ্ছি। ঘর স্বামী ও স্ত্রীর যৌথ নামে করা হচ্ছে। সেখানে কেউ স্ত্রীকে ছেড়ে দিলে ওই বাড়ি হবে নারীর, পুরুষের নয়। যাতে নতুন ঘর পেয়ে কেউ নতুন বউ না নিয়ে আসে। তিনি বলেন, অনেকে ইসলামের কথা বলে নারীদের অগ্রগতিতে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করে। কিন্তু ইসলাম ধর্মই একমাত্র ধর্ম, যেখানে নারীদের সমান অধিকার দেওয়া হয়েছে। সম্পদে স্বামী ও বাবার সম্পদে নারীর অধিকার দিয়েছে ইসলাম। অথচ ধর্মের নামে নারীদের ঘরে রেখে দিতে চায়, তারা জানে না। সন্তানদের বিপথে যাওয়া ঠেকাতে মায়ের বিরাট ভূমিকা রয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মায়েদের বলব, তাদের সন্তান যেন কোনোরকম জঙ্গিবাদ, মাদক বা সন্ত্রাসের সঙ্গে সম্পৃক্ত না হয়। প্রত্যেক মাকে এ ব্যাপারে সজাগ থাকতে হবে। ছেলেমেয়ের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রাখতে হবে। তারা যেন নিজের মনের কথা মায়ের কাছে খোলামনে বলতে পারে, সেই ধরনের সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে। তাহলে ছেলেমেয়ে কখনো বিপথে যাবে না। তাদের খবর রাখতে হবে। কী করছে, কোথায় যাচ্ছে সেদিকে নজর রাখতে হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App