×

সারাদেশ

প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রামের উন্নয়নে আরো কিছু ঘোষণা দিতে পারেন

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৪ নভেম্বর ২০২২, ১১:২০ এএম

প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রামের উন্নয়নে আরো কিছু ঘোষণা দিতে পারেন

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি

বিজয়ের মাস ডিসেম্বরে চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক পলোগ্রাউন্ড ময়দানে স্মরণকালের বৃহত্তম সমাবেশের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ আগামী জাতীয় নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে বলেই মনে করছে চট্টগ্রামবাসী। প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্যের জন্য অপেক্ষা আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীসহ বন্দরনগরী চট্টগ্রামের নাগরিকদের।

এরই মধ্যে পলোগ্রাউন্ডের এই সমাবেশকে বর্ণিল ও সার্থক করে দলীয় নেতাকর্মীরা চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগের জনসমর্থন ও শক্তির প্রমাণ দেখাতে চায়। চট্টগ্রামের উন্নয়নের জন্য গত কয়েক বছর তেমন কোনো দাবি তোলেনি চট্টগ্রামবাসী। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঐকান্তিক সদিচ্ছায় এরই মধ্যে বন্দরনগরীর উন্নয়নে বেশ কিছু মেগা প্রকল্পের কাজ চলছে। চট্টগ্রামের নাগরিকরা এসব মেগা প্রকল্পের কাজ যথাসময়ে সমাপ্ত করার প্রত্যাশাও করছে। তবে এই জনসভায় চট্টগ্রামের উন্নয়নে আরো কিছু নতুন ঘোষণা দিতে পারেন প্রধানমন্ত্রী এমন সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানা গেছে।

এদিকে আগামী ২৬ নভেম্বর কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে নির্মিত ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল’ এর দক্ষিণ টিউবের পূর্ত কাজের সমাপ্তি উদযাপন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি হিসেবে (ভার্চুয়ালি) উপস্থিত থাকবেন বলে জানা গেছে। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সেতু বিভাগের সচিব মো. মনজুর হোসেন এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

নগরীর বিভিন্ন সড়কে, ভবনে এরই মধ্যে নানা রঙের ব্যানার, ফেস্টুন লাগানো শুরু হয়ে গেছে প্রধানমন্ত্রীকে চট্টগ্রামে স্বাগত জানিয়ে ও জনসভাকে সফল করে তোলার জন্য। রীতিমতো প্রতিযোগিতা চলছে নেতাদের কে কত বেশি প্রচার করতে পারেন তা নিয়ে। পলোগ্রাউন্ডের আশপাশের এলাকাকে সাজানো শুরু হয়ে গেছে। টাইগারপাস এলাকার সড়কদ্বীপে বাঘের যেসব প্রতিকৃতি ছিল সেগুলোকে আবার রঙিন করা হচ্ছে। চট্টগ্রামের উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিকতার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে ও তার আগমনকে উৎসবমুখর করতে ‘নাগরিক উদ্যোগ’ নামে একটি সংগঠনের উদ্যোগে আগামী ২৫ নভেম্বর বঙ্গবন্ধু টানেলের সম্মুখে উন্নয়ন উৎসব এবং ২৭ নভেম্বর কলেজিয়েট স্কুল মাঠে ঘুড়ি উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে।

পলোগ্রাউন্ডের জনসভায় প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রামের উন্নয়নে আরো বেশ কিছু ঘোষণা বা প্রতিশ্রুতি দিতে পারেন বলেও ধারণা করা হচ্ছে। এর মধ্যে হলো- কালুরঘাটের কাছে হামিদচরে সেক্রেটারিয়েটের আদলে চট্টগ্রামের মিনি সেক্রেটারিয়েট গড়ে তোলা, পরিবেশ ও ঐতিহ্য রক্ষায় সিআরবিতে বেসরকারি হাসপাতাল নির্মাণ বন্ধের আনুষ্ঠানিক ঘোষণাও দিতে পারেন প্রধানমন্ত্রী। কারণ এরই মধ্যে প্রধানমন্ত্রী পরিবেশ-প্রকৃতি ক্ষতিগ্রস্ত হয় এমন কোনো উন্নয়ন প্রকল্প না নেয়ার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন। চট্টগ্রামের সিআরবিতে বেসরকারি হাসপাতাল প্রকল্প নেয়ার পর চট্টগ্রামের সর্বস্তরের নাগরিকদের আন্দোলনের মুখে তা স্থগিত করা হয়েছে। তবে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এর মধ্যে বলেছেন এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী প্রলোগ্রাউন্ডের মাঠে ঘোষণা দেবেন। চট্টগ্রামে অনেক ইতিহাসের সাক্ষী আদালত ভবন বা পরীর পাহাড়কে হেরিটেজ ঘোষণাসহ যথাযথ সংরক্ষণের নির্দেশনা দেয়ারও সম্ভাবনা রয়েছে এই জনসভা থেকে। তবে কালুরঘাটে সড়ক ও রেলসেতু নির্মাণ প্রকল্পটি দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য প্রধানমন্ত্রীর সুস্পষ্ট ঘোষণা শোনার অপেক্ষা করছে চট্টগ্রামবাসীসহ বান্দরবান ও কক্সবাজার এলাকার জনগণ। অবশ্য আগামী ৭ ডিসেম্বর কক্সবাজারের এক জনসভায় প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ দেয়ার কথা রয়েছে।

নগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন বলেন, চট্টগ্রামের মানুষ না চাইতেই একের পর এক মেগা প্রকল্পের অনুমোদন এবং অর্থের সংস্থান করছেন প্রধানমন্ত্রী। দোহাজারী-ঘুমধুম রেললাইন স্থাপন প্রকল্প, আনোয়ারায় অর্থনৈতিক অঞ্চল, কোরিয়ান ইপিজেড, চায়না ইকোনমিক জোন, মহেশখালী ইকোনমিক জোন, কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল, আউটার রিং রোড, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, ফ্লাইওভার, বে-টার্মিনাল, মিরসরাইয়ে অর্থনৈতিক অঞ্চল, মহেশখালীতে এলএনজি টার্মিনাল, গভীর সমুদ্রবন্দর, কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পসহ অনেক বৃহৎ প্রকল্প উপহার দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এসব প্রকল্প পুরোপুরিভাবে বাস্তবায়িত হলে চট্টগ্রাম শহর সারা বাংলাদেশের মধ্যে বিশেষ গুরুত্ব পাবে।

চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলার উদ্যোগে প্রায় প্রতিদিনই সুশৃঙ্খলভাবে সমাবেশকে সফল করতে সভা-সমাবেশ হচ্ছে। এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, মহানগর-উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের যৌথ উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হবে এ জনসভা। আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সমর্থকরা যোগ দেবেন জনসভায়। পলোগ্রাউন্ডের বাইরে কয়েক বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে লাগানো হবে মাইক।

উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ সালাম বলেন, উত্তর চট্টগ্রামের ৭ উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়ন থেকে কর্মী-সমর্থকরা সমাবেশে যোগদান করবেন। উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা এবং স্থানীয় সংসদ সদস্যরা তাদের সমন্বয় করবেন। স›দ্বীপ থেকে লঞ্চ, স্পিডবোটে সমর্থকরা আসবে। জনসভার দিনও বিশেষ কিছু লঞ্চ চলাচল করবে। দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান বললেন, দক্ষিণ জেলার ৮ উপজেলা থেকে অন্তত দেড় লাখ মানুষ সমাবেশে যোগদান করবে।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, পাকিস্তানের কারাগার থেকে বঙ্গবন্ধু মুক্ত হয়ে ফিরে এসে ঐতিহাসিক পলোগ্রাউন্ডে এক বিশাল জনসমুদ্রে চট্টগ্রামবাসীকে সম্ভাষণ জানাতে এসেছিলেন। তারই সুযোগ্য কন্যা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৪ ডিসেম্বর এই মাঠে ঐতিহাসিক বিজয় দিবসকে সামনে রেখে আগামী জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতির দিকনির্দেশনা দেবেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App