×

খেলা

ভালেন্সিয়ার অজানা কাহিনী

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২২ নভেম্বর ২০২২, ০৯:২৮ এএম

ভালেন্সিয়ার অজানা কাহিনী

ভালেন্সিয়া

স্বাগতিক কাতারের বিপক্ষে হেসে খেলে জিতেছে ইকুয়েডর। স্বাগতিকদের ২-০ গোলে হারিয়ে ‘এ’ গ্রুপ থেকে বিশ্বকাপে শুভসূচনা করেছে ইকুয়েডর। এই ম্যাচে কাতারকে স্বস্তি দেয়নি এনার ভালেন্সিয়া। ৩৩ বছর বয়সি এই ফরোয়ার্ডের জোড়া গোলেই নাস্তানাবুদ হয়েছে কাতার। জোড়া গোল করার সুবাদে ম্যান অব দ্য ম্যাচ নির্বাচিত ভালেন্সিয়া। এছাড়া তিনি স্বাগতিকদের বিপক্ষে রেকর্ডও গড়েছেন। ইকুয়েডরের প্রথম ফুটবলার হিসেবে পাঁচ গোলের মাইলফলক স্পর্শ করেন তিনি।

এর আগে ২০১৪ বিশ্বকাপে ইকুয়েডরের করা তিন গোলের তিনটিই এসেছে ভালেন্সিয়ার পক্ষ থেকে। আর এবার কাতারের বিপক্ষে করেছেন ২ গোল। তবে এই ভালেন্সিয়াকে অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে ফুটবলে আসতে হয়েছে। তার ফুটবলে আসার পেছনের অজনা কাহিনী আমরা তুলে ধরব ফুটবলপ্রেমীদের কাছে।

১৯৮৯ সালের ৪ নভেম্বর ইকুয়েডরের এসমেরালদাসে জন্মগ্রহণ করেন ভালেন্সিয়া। এরপর সেখানেই তার শৈশব অতিবাহিত করেন। কিন্তু পরিবারে ছিল না আর্থিক স্বচ্ছলতা। তাই এমন একটি পরিবার নিশ্চয়ই চাইবে তার ছেলে পড়ালেখা করুক। কিন্তু ছোটবেলা থেকেই ভালেন্সিয়ার হৃদয় জুড়ে ছিল ফুটবল। যার নেশায় স্কুল ফাঁকি দিতেও দ্বিধাবোধ করতেন না তিনি।

অভাব-অনটনে অনেকবারই না খেয়ে দিন-রাত কাটিয়েছেন ভালেন্সিয়া। বাবার সঙ্গে হাত বাড়াতেন গরুর ফার্মের কাজে। গরুর দুধ বিক্রি করেই খেলার জন্য নিজের প্রথম বুটজুতা কিনেন ইকুয়েডর অধিনায়ক।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইলকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ভালেন্সিয়া বলেছিলেন, হ্যাঁ এটা সত্যি যে আমি খুবই গরীব পরিবার থেকে এসেছি। বুট পায়ে দৌঁড়ানোর পরিবর্তে আমাকে বাবার সঙ্গে গরুর ফার্মে কাজ করতে হয়েছে। দুধ বিক্রি করে নিজের প্রথম বুট কিনেছি আমি। ক্যাপওয়েল স্টেডিয়াম ছাড়া আমাদের ঘুমানোর জায়গা ছিল না। প্রায় সময়ই না খেয়ে দিন কেটেছে। কারণ আমার কাছে কোনো টাকা ছিল না। ফুটবলের প্রতি ভালোবাসাই আমাকে এতদূর এনেছে। স্কুল ফাঁকি দিয়ে আমার খেলার ঘটনা অহরহ। খেলাটির প্রতি আমি সবসময় নিবেদিত ছিলাম। আমার মা ও বাবা সবসময়ই তা বলত। কিন্তু খেলাটির প্রতি আমার ভালোবাসা এর চেয়ে শক্তিশালী।

এদিকে আল বায়াত স্টেডিয়ামে ভালেন্সিয়ার গোল করার দুর্দান্ত নৈপুণ্য দেখে মুগ্ধ হয়েছে গোটা বিশ্ব। ম্যাচের তিন মিনিটেই গোল করেন তিনি। কিন্ত অফসাইডের কারণ বাতিল হয় তা। যদিও খুব বেশি অপেক্ষায় থাকতে পারেনি। ১৬ মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল করে ইতিহাসের বুকে ঠাঁই করে নেন তিনি।

উদ্বোধনী ম্যাচের ইতিহাসে ভালেন্সিয়ার চেয়ে বেশি বয়সে গোল করতে পারেনি আর কোনো ফুটবলার। ইকুয়েডরের সুপারম্যান খ্যাত এই ফরোয়ার্ডের বর্তমান বয়স ৩৩ বছর ১৬ দিন। এর আগের রেকর্ডটি ছিল ইতালির আলেসান্দ্রো আলতোবেল্লির। ১৯৮৬ বিশ্বকাপে বুলগেরিয়ার বিপক্ষে গোলটি করার সময় তার বয়স ছিল ৩০ বছর ১৮৪ দিন। এমনকি হাঁটুর চোটে কাতারের বিপক্ষে পুরো ৯০ মিনিট খেলতে পারেননি ভালেন্সিয়া। চোট কতটা গুরুতর সেটা চিকিৎসকরাই বলতে পারবেন। তবে ২৫ নভেম্বর নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে খেলার ব্যাপারে আশাবাদী এই ফরোয়ার্ড।

এছাড়া গত বিশ্বকাপে খেলতে না পারলেও এবার কাতারে ঠিকই জায়গা করে নেয় ইকুয়েডর। সূচি ঘোষণার পরপরই তাই জয়ের স্বপ্নে রাত কাটাতে থাকেন ভালেন্সিয়া। জোড়া গোলে সেই স্বপ্নকে সত্যিতে রুপ দেন তুরস্কের ফেনারবাচে ক্লাবের হয়ে খেলা এই ফরোয়ার্ড।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App