×

খেলা

চারটি ম্যাচ দেখার আনন্দ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২২ নভেম্বর ২০২২, ০৮:৫৮ এএম

চারটি ম্যাচ দেখার আনন্দ

ছবি: এএফপি

প্রত্যাশা আর প্রাপ্তির সমন্বয় ঘটানোর লক্ষ্য নিয়ে এবার শুরু করছে আর্জেন্টিনা তার বিশ্বকাপ মিশন। প্রতিবার তারা ফেভারিট হিসেবে বিশ্বকাপ শুরু করলেও সেই প্রাপ্তিটুকু ধরা দিচ্ছে না। ১৯৮৬ সালে বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলোয়াড় একজন ম্যারাডোনার হাত ধরে সর্বশেষ যে বিশ্বকাপ শিরোপা অর্জিত হয়েছিল তা আর ধরা দেয়নি আর্জেন্টিনার হাতে এবং তিনি তার জীবদ্দশায় এটি দেখে যেতে পারেননি। তাই ম্যারাডোনাকে স্মরণ করছি শ্রদ্ধাভরে এবং এই বিশ্বকাপে তার অনুপস্থিতিটা বিশেষভাবে অনুভব করছি। বিশ্ব ফুটবলে আর্জেন্টিনাকে জনপ্রিয়তার শীর্ষে নিয়ে যাওয়াটাই হচ্ছে তার অসাধারণ ক্রীড়াশৈলী এবং জনপ্রিয়তা।

তারই যোগ্য উত্তরসূরি হচ্ছেন বর্তমান সময়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় ও আলোচিত খেলোয়াড় লিওনেল মেসি। যার হাতে রয়েছে ফুটবলের সবচেয়ে বড় বড় খেতাব। এটাই তার শেষ বিশ্বকাপ। এই ট্রফিটা অর্জিত না হলে সব প্রাপ্তির মাঝেও যেন অতৃপ্তি থেকেই যাবে বিশ্ব

ফুটবলের সবচেয়ে বড় ট্রফিটা না পাওয়ার। ২০১৪ সালে খুব কাছাকাছি গিয়েও ফাইনালে পরাজিত হয়ে বিশ্বকাপ জেতা হয়ে ওঠেনি। এবার মনে হয় অনেকটা আঁটঘাট বেঁধেই এসেছেন কোচ লিওনেল স্কালোনির অধীনস্থ এই দলটি মেসিকে বিশ্বকাপ উপহার দেবে বলে। গত চার বছর ধরে দলের দায়িত্বে থাকা কোচ স্কালোনি খেলোয়াড়দের একসুতোয় বেঁধে ধাপে ধাপে এগিয়ে যাচ্ছেন। তারই প্রতিফলন হলো গত ৩৬ ম্যাচে অপরাজিত থাকা। সব সময় আলোচিত হয়েছে আর্জেন্টিনার দুর্বল ডিফেন্সের কথা। যার জন্য তাদের বিশ্বকাপ অর্জিত হয়নি বলে অনেকের ধারণা। এবারে লিসেন্দ্র মার্টিনেজ, নিকোলাস ওটামেন্ডি ও ক্রিশ্চিয়ান রোমেরোর নেতৃত্বে রক্ষণভাগ অনেকটা দুর্ভেদ্য হয়ে উঠেছে।

লিয়ান্দ্রো পারেদেস, রদ্রিগো ডি পলদের নিয়ে গড়া মধ্যমাঠের সঙ্গে ডি মারিয়া, মার্টিনেজ এবং মেসিদের নিয়ে গড়া আক্রমণভাগ যেকোনো দলের জন্য মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। আর যে দলে মেসি রয়েছে সেই দল যেকোনো মুহূর্তে যে কোনো কিছুই করতে পারে। তাই মেসিভক্ত হিসেবে তার পায়ের জাদু দেখার অপেক্ষায় রয়েছি।

সৌদি আরব শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারবে তা খুব একটা মনে হচ্ছে না। ১৯৯৪ সালে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের দ্বিতীয় পর্বে ওঠা দলটি কোচ হার্ভি রেনার নেতৃত্বে আর্জেন্টিনাকে ঠেকিয়ে প্রতি আক্রমণে কিছু করতে পারবে কিনা তাই দেখার বিষয়। আর এই ক্ষেত্রে মুখ্য ভূমিকা রাখতে পারে সালেম আল দাউসারি।

আমার মনে হয় বাংলাদেশের আর্জেন্টাইন সমর্থক বিরাট এক আশা নিয়ে আজ তার প্রিয় দলের খেলা দেখার জন্য অপেক্ষার প্রহর গুনছেন। মেসির নেতৃত্বে সেই দলটি উন্নত ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শনের মাধ্যমে সহজে জয়লাভ করতে সমর্থ হবে এবং আনন্দ মিছিল করবে। মেসি ঝলক সারা বিশ্বের ফুটবল দর্শকদের বিমোহিত করুক সেই প্রত্যাশায় সবার সঙ্গে আমিও আছি। ‘সি’ গ্রুপ থেকে দ্বিতীয় দল হিসেবে প্রথম ষোলোতে কোন দল যাবে সেই বিবেচনায় মেক্সিকো বনাম পোল্যান্ড ম্যাচটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। যে দল জয়লাভ করবে তার সম্ভাবনা থাকবে ৭০%।

১৯৯৪ সাল থেকে গত ৭টি বিশ্বকাপে অংশ নিয়ে সর্বোচ্চ ২য় রাউন্ডে উত্তীর্ণ হয়েছে মেক্সিকো। কোচ মার্টিনোর অধীনে আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলতে তারা অভ্যস্ত। আর্জেন্টিনা ও বার্সেলোনাকে প্রশিক্ষণ দেয়া এই অভিজ্ঞ কোচ মধ্যমাঠকে শক্তিশালী করার মাধ্যমে বল নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রেখে প্রতিপক্ষের ওপর চাপ সৃষ্টি করে। আক্রমণভাগ যদি সঠিকভাবে কাজ করে সেক্ষেত্রে তাদের জয়ের সম্ভাবনাই বেশি থাকবে। ফরোয়ার্ড রাউল হিমেনেজ চোটমুক্ত হলে হিরভিং লোজানোকে সঙ্গে নিয়ে সেই কাজটুকু করতে সমর্থ হবে বলে আশা করি।

অপরদিকে পোল্যান্ড বাছাইপর্বে রাশিয়ার নিষিদ্ধের সুবিধা নিয়ে চূড়ান্ত পর্বে উত্তীর্ণ হলেও বিশ্বকাপের ২য় পর্বে উত্তরণের ক্ষেত্রে কঠিন পরীক্ষায় অবতীর্ণ হতে হবে। কোচ মিকনিয়েভেজের এর মূল অস্ত্র হচ্ছে ক্লাব ফুটবলের নন্দিত তারকা রবার্ট লেভানদোভস্কি। তার দিকেই তাকিয়ে পুরো দল। ক্লাব ফুটবলের মতো বিশ্বকাপে গোল করার ক্ষেত্রে সেই মুন্সিয়ানা দেখাতে পারেন কিনা। সতীর্থদের কাছ থেকে সেই সহযোগিতাটুকু পেলে হয়তো আশার আলো দেখাতেও পারেন দেশকে। তবে সবকিছুর বিচারে মেক্সিকোর জয়লাভের সম্ভাবনা বেশি থাকবে।

আজ আরো দুটি খেলা আছে যার একটিতে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স মুখোমুখি হবে অস্ট্রেলিয়ার। বেনজেমা, পগবাদের অনুপস্থিতিতে ফ্রান্স বিশ্বকাপের শিরোপা ধরে রাখার লক্ষ্য নিয়ে মিশন শুরু করবে। এমবাপ্পে ও অলিভিয়েরা জিরু জ¦লে উঠলে তাদের লক্ষ্য নিয়ে সামনের দিকে এগোতে খুব একটা বেগ পেতে হবে না। অভিজ্ঞ টেকনিশিয়ান কোচ দিদিয়ের দেশম চাইবেন অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে যাত্রাটা শুভ করতে। আশা করছি সেটা সহজেই সম্ভব হবে।

‘ডি’ গ্রুপের ম্যাচে ডেনমার্ক মুখোমুখি হবে তিউনিসিয়ার। গোল করার ক্ষেত্রে দক্ষতা প্রদর্শন করতে পারলে ডেনমার্কের জয়লাভের সম্ভাবনা থাকবে। অপরদিকে যদি তিউনিসিয়া প্রতিরোধ গড়ে তুলে জয়লাভ করতে সমর্থ হয় তবে তাদের জন্য ২য় পর্বের দরজাটুকু খুলে যেতে পারে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App