×

সারাদেশ

পুলিশের গুলিতে ছাত্রদল নেতার মৃত্যুতে বিক্ষোভ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২১ নভেম্বর ২০২২, ০১:০৭ পিএম

পুলিশের গুলিতে ছাত্রদল নেতার মৃত্যুতে বিক্ষোভ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরে পুলিশের গুলিতে ছাত্রদল নেতা নয়ন মিয়া নিহতের ঘটনায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। গতকাল রবিবার সকালে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে জেলা ছাত্রদলের উদ্যোগে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের শিমরাইল কান্দি থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি শহরের টি এ রোড প্রধান সড়কে আসলে পুলিশ তাতে বাধা দেয়। পরে নেতাকর্মীরা সড়কেই বিক্ষোভ সমাবেশ করেন।

এ সময় জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক ফুজায়েল চৌধুরীর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি হাফিজুর রহমান মোল্লা কচি, সাবেক সাধারণ সম্পাদক জহিরুল হক খোকন, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম সিরাজ প্রমুখ। বক্তারা বলেন, সরকার হত্যা, গুম, খুন করে মানুষকে দাবিয়ে রাখার ব্যর্থ চেষ্টা করছে। এ সরকারকে টিকিয়ে রাখতে যারা অন্যায়ভাবে গুলি চালিয়ে মানুষ হত্যা করছে তাদের এই সরকার বিচার না করলে বিএনপি সরকার গঠন করলে তাদের বিচারের আওতায় আনা হবে। বাঞ্ছারামপুরে শান্তিপূর্ণভাবে লিফলেট বিতরণকালে পুলিশ গুলি করে সোনারামপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সহসভাপতি নয়নকে হত্যা করে। তারা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অতি উৎসাহী পুলিশ কর্মকর্তাদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার ও বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান। বক্তারা আরো বলেন, মানুষ হত্যা করে আর গাড়ি বন্ধ রেখে বিএনপির কুমিল্লার বিভাগীয় সমাবেশ ঠেকানো যাবে না।

স্থানীয়রা জানায়, শনিবার বিকালে বিএনপি কর্মীরা আগামী ২৬ নভেম্বর কুমিল্লায় বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ সফল করতে মোল্লা বাড়ি এলাকায় লিফলেট বিতরণ করছিল। এ সময় পুলিশ তাদের ওপর গুলি ছুড়লে সোনারামপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সহসভাপতি নয়ন মিয়া গুলিবিদ্ধ হয় ও পৌর যুবদলের আহ্বায়ক ইমান আলী আহত হয়। পরে স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে গুলিবিদ্ধ নয়নকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকায় পাঠানো হয়। সন্ধ্যার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজে তার মৃত্যু হয়।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোল্লা মো. শাহীন বলেন, বিনা অনুমতিতে লিফলেট বিতরণের সময় সৃষ্ট পরিস্থিতিতে নেতাকর্মীরা পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে অস্ত্র ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে। এ ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে মামলা হয়েছে। নয়ন কীভাবে নিহত হয়েছে তার তদন্ত চলছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে তার মৃত্যুর রহস্য জানা যাবে।

এছাড়া পুলিশের অস্ত্র ছিনিয়ে নেয়ার অভিযোগে বাঞ্ছারামপুর থানার উপপরিদর্শক আফজাল হোসেন খান বাদী হয়ে উপজেলা যুবদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মো. রফিকুল ইসলামসহ ১৭ জনকে এজাহারনামীয় করে অজ্ঞাত এক থেকে দেড়শ জনকে আসামি করে মামলা করেছেন। হামলায় পুলিশের ৬ সদস্য আহত হয়েছেন। এখন পর্যন্ত ২ জনকে আটক করা হয়েছে।

এদিকে, নয়নের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। ছেলেকে হারিয়ে মা-বাবা বারবার মাটিতে পড়ে বিলাপ করছেন। তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে নয়ন ছিল সবার বড়। নয়নের স্ত্রী ও শিশুপুত্র রয়েছে। নয়নের মৃত্যু তারা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না। নয়নের বাড়িতে এলাকাবাসী ও স্বজনসহ দলীয় নেতাকর্মীরা ভিড় করছে।

সন্তান হারিয়ে বিলাপ করতে থাকা নিহত নয়নের মা তাসলিমা বেগম বলেন, আমার পুলারে কই গেলে পামু, পুত মাত্র ভাত খাইয়া ভালা-বুলা গেছে, তারে গুলি কইরা কেমনে মাইরা লাইল। আমি এই হত্যার বিচার চাই। স্ত্রী সাজিদা বলেন, আমার সন্তানরে বাপছাড়া করছে, এতিম করছে। আমার বুক যে খালি করছে আমি তার বিচার চাই।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App