ঢাকার চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত প্রাঙ্গণ থেকে পুলিশের ওপর পিপার স্প্রে করে প্রকাশক ফয়সল আরেফিন দীপন হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামিকে ছিনিয়ে নেয়ার ঘটনায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের গঠিত তদন্ত কমিটি ৭ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিবে বলে জানানো হয়েছে।

সোমবার (২১ নভেম্বর) বিকেলে চার সদস্যের এ তদন্ত কমিটি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। পরিদর্শন শেষে প্রতিবেদন দেয়ার কথা জানান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের (কারা অনুবিভাগ) অতিরিক্ত সচিব মো. হাবিবুর রহমান।

তিনি বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে রবিবার চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটি সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিবে। আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এসেছি। আসামিদের কিভাবে কারাগার থেকে আনা হয়, কোথায় রাখা হয়। এরপর কিভাবে আদালতে তোলা হয়। কোন জায়গা থেকে দুষ্কতকারীরা তাদের নিয়ে যায় এগুলো প্রাথমিকভাবে দেখার জন্য এসেছি। পরবর্তীতে এর সাথে যারা সম্পৃক্ত, নিরাপত্তার সাথে, আনা-নেয়ার সাথে যে ব্যবস্থা আছে প্রত্যেকের সাথে পৃথকভাবে কথা বলবো। কারণগুলো বিশ্লেষণ করবো। নিরাপত্তার দায়িত্বে যারা ছিল তাদের কোনো গাফিলতি ছিল কি না। যদি থেকে থাকে, কার কতটুকু এ বিষয়গুলো প্রতিবেদনে তুলে ধরবো। একই সাথে রিপোর্টে আরেকটা অংশ থাকবে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তিরোধে কিছু ব্যবস্থা গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে সে ব্যাপারে সুপারিশ করবো।

কারো গাফিলতি পেয়েছেন কি না এমন প্রশ্নে হাবিবুর রহমান বলেন, সিসি ক্যামেরা এবং পর্যাপ্ত নিরাপত্তা না থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সব বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের বক্তব্য নিবো এবং পর্যালোচনা করবো। এরআগে ফাইন্ডিংস এর ব্যাপারে কোনো কথা বলা হয়তো সমীচিন হবে না।

মো. হাবিবুর রহমান বলেন, সব দলিলপত্র তলব করেছি। এগুলো নিয়ে আমরা বসবো। একটা একটা করে যাচাই করবো। এখানে আইনের বিধান কি, কার কি দায়িত্ব নির্ধারণ করা আছে এবং বাস্তবে সে কতটুকু দায়িত্ব পালন করেছে। ডকুমেন্ট পর্যালোচনা করে কার কি গাফিলতি ছিলো, অপর্যাপ্ততা ছিলো কি না দেখবো।

কারো গাফিলতি পেয়েছেন কি না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, এ মুহূর্তে এখন কিছু বলতে চাচ্ছি না। কারণ আমরা তথ্য-উপাত্ত বা কারো বক্তব্য রেকর্ড করিনি। আসামিদের বের করে মূল রাস্তা দিয়ে পিছনে হাজতখানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এটা একটা ঝুঁকিপূর্ণকাজ। ভিতর দিয়ে আনা-নেওয়া করা হতো তাহলে ঝুঁকিটা অনেকখানি কম থাকতো। ঘটনা কেন ঘটলো, কি কি করলে ঘটনাটা ঘটতো না। এমন ঘটনার যেন পুনরাবৃত্তি না ঘটে এমন সুপারিশ করবো এবং তা যেন কার্যকর হয় তারও সুপারিশ থাকবে।

গাফিলতি থাকলে কি সাজা হতে পারে এমন প্রশ্নে হাবিবুর রহমান বলেন, তদন্ত কমিটি শাস্তির সুপারিশ করে না। দায়-দায়িত্ব নির্ধারণ করে। কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেয়। তবে যাদের বিরুদ্ধে অবহেলার প্রমাণ পাওয়া যাবে, এর মধ্যে সুরক্ষা বিভাগের যারা সম্পৃক্ত তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।