ইউরোপের ফুটবলাররা গরমে নাকাল
কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৮ নভেম্বর ২০২২, ১২:৪১ পিএম
বিশ্বকাপ ফুটবলের ২২তম আসরের আয়োজক দেশ কাতার। সাধারণত বিশ্বকাপ শুরু হয় জুন-জুলাই মাসে। তবে এই সময়ে কাতারে তীব্র গরম থাকায় বিশ্বকাপ পিছিয়ে আয়োজন করা হবে নভেম্বর-ডিসেম্বরে। কাতারে জুন-জুলাইয়ে তাপমাত্রা থাকে ৪০ থেকে ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত। ওই গরমে ফুটবল খেলা বেশির ভাগ দেশের খেলোয়াড়ের পক্ষেই সম্ভব নয়। তবে এই সময়ে এসেও মাঠে নামার আগেই তপ্ত আবহাওয়ায় বিপত্তিতে পড়েছেন ইউরোপের দেশ ওয়েলসের খেলোয়াড়রা।
৬৪ বছর পর বিশ্বকাপে খেলতে এসছে ওয়েলস। কাতার পৌঁছানোর পর তাদের প্রথম অনুশীলন ছিল বুধবার। এই সময়ে ইউরোপের সর্বোচ্চ আবহাওয়া থাকে ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কাতারে গ্যারেথ বেলের দলের অনুশীলন ছিল বেলা দেড়টায়। তবে সেই সময়ে কাতারে তাপমাত্রা ছিল ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি। ফলে নির্ধারিত সময়ে গরমের কারণে প্র্যাক্টিসে অংশ নিতে পারেননি ওয়েলসের খেলোয়াড়রা। তাদের অনুশীলন টাইম পিছিয়ে বিকাল ৪টায় শুরু হয়। গতকালও তারা বিকাল ৪টায় অনুশীলন শুরু করে।
বিশ্বকাপে এমন গরম থাকলে কিভাবে ম্যাচ খেলবে ইউরোপের দেশগুলো? তবে ওয়েলসের কোচ ভরসা রাখছেন স্টেডিয়ামের শীততাপ ব্যবস্থার ওপর। ওয়েলস কোচ রবার্ট পেইজ বলেন, আমাদের ম্যাচগুলো যে মাঠে, সেখানে আমি গিয়েছিলাম। গরম সামাল দেয়ার জন্য ওরা সর্বোচ্চ চেষ্টাই করেছে। মাঠের চারপাশে শীতাতপ পরিবেশ নিশ্চিতের ব্যবস্থা করেছে। যেখানে দাঁড়িয়েছিলাম, সেখান থেকেই আমি অনুভব করতে পারছিলাম। আমি নিশ্চিত নই যে পিচের ভেতর খেলোয়াড়দের কাছে কেমন লাগবে। আমাদের সমর্থকরাও নিশ্চয়ই ওপরের গ্যালারিতে বসবে না।
বিশ্বকাপ আয়োজনের দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই নানা সমালোচনায় জর্জরিত হয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশটি। তবে সমালোচনার তোয়াক্কা না করে বিশ্বকাপের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে দেশটি। আয়োজনের দায়িত্ব পাওয়ার পর আয়োজকরা বলেছিলেন তারা পুরো স্টেডিয়াম শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত করার ব্যবস্থা করবেন। যাতে তাপমাত্র কোনো সমস্যা না হয়। এর আগেও বিশ্বকাপ ফুটবল প্রচণ্ড গরমের মধ্যে অনুষ্ঠিত হয়। মেক্সিকোতে ১৯৮৬ সালের পর জার্মানিতে ২০০৬ সালে বিশ্বকাপের সময়ও তীব্র গরম পড়েছিল। তবে বিশ্বকাপের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি গরম পড়েছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ১৯৯৪ সালে। অত্যাধুনিক ব্যবস্তাপনার ফলে কাতারে খেলোয়াড়দের সমস্যায় পড়তে হবে না বলে আশাবাদী আয়োজকরা। এজন্য আগেই দলের হোটেল ও অনুশীলন ভেন্যু চূড়ান্ত করে দেয় তারা।
কাতার বিশ্বকাপে এক হোটেল থেকে অন্য হোটেলে যেতে হবে না কোনো দলকে। এক হোটেলেই দলগুলো কাটিয়ে দিতে পারবে পুরো আসর। বিশ্বকাপের ৩২ দলের জন্য হোটেল ও অনুশীলন ভেন্যুর ব্যবস্থা করেছে আয়োজকরা। এবারের আসরের ৩২টি দলের মধ্যে ২৪টি দলের হোটেল কাতারের রাজধানী দোহার কাছে। বাকি দলগুলোর হোটেল দোহার কাছাকাছি। উন্নত যাতায়াত ব্যবস্থার কারণে খুব বেশি ঝামেলায় পড়বে না কোনো দল। বিশ্বকাপের জন্য ইতোমধ্যে কাতারে পৌঁছাতে শুরু করেছে অংশগ্রহণকারী দেশগুলো। অনুশীলনের মাধ্যমে গরম আবহাওয়ায় নিজেদের মানিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছে। কাতারে ওয়েলসের হোটেল হলো ডেল্টা হোটেলস সিটি সেন্টার দোহা। আর তাদের অনুশীলন ভেন্যু আল সাদা এসসি নিউ ট্রেনিং ফ্যাসিলিটিস ২।
কাতার বিশ্বকাপে বি গ্রুপে রয়েছে ওয়েলস। গ্রুপে তাদের প্রতিপক্ষ ইংল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের। এর মধ্যে ইংল্যান্ড ও যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে দুটি ম্যাচ হবে দোহার স্থানীয় সময় রাত ১০টায়। কিন্তু ২৫ নভেম্বর ইরানের বিপক্ষে ম্যাচটি শুরু হবে বেলা ১ টায়। এর আগে ১৯৫৮ সালে সর্বশেষ বিশ্বকাপ খেলে ওয়েলস। ২১ নভেম্বর কাতার বিশ্বকাপে তাদের প্রথম ম্যাচ যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে।