×

খেলা

অ্যান্থোনির উত্থানের গল্প রূপকথাকেও হার মানায়!

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৮ নভেম্বর ২০২২, ০৭:২৮ পিএম

অ্যান্থোনির উত্থানের গল্প রূপকথাকেও হার মানায়!

ছবি: সংগৃহীত

ব্রাজিলিয়ান রাইট উইঙ্গার অ্যান্থোনি সান্তোস যখন আট বছরের শিশু। তখন তিনি বেড়ে উঠেছেন এমন একটি শহরে। যেখানে মাদক চোরাচালান, গুম-খুন নিত্তনৈমিত্তিক ঘটনা। বাড়ি থেকে কয়েক গজ এগোলেই বড় বড় মাদক কারবারির আখড়া। চারপাশজুড়ে শুধুই হতাশা। এ রকম পরিস্থিতিতে ফুটবলই আশার সঞ্চার করেছে তার শিশু হৃদয়ে। ভয়ংকর পরিবেশ থেকে অ্যান্থোনির মুক্তি পাওয়ার একমাত্র উপলক্ষ ছিল এই ফুটবল। তবে ফুটবল খেলার জার্নিটা মোটেও সহজ কিছু ছিল না।

কিন্তু অ্যান্থোনির উত্থানের গল্প রীতিমতো রূপকথাকেও হার মানায়। ১০ বছর বয়সে সাও পাওলোর ক্লাবে যোগ দেন অ্যান্থোনি। ২০১৯ সালে পাওলিস্তার ফাইনালে সাও পাওলোর হয়ে গোল করেন এই উইঙ্গার। অসাধারণ ড্রিবলিং স্কিল আর গতির কারণেই সবার নজরে আসেন অ্যান্থোনি। এর পরই এই ব্রাজিলিয়ানকে দলে ভেড়ায় ডাচ ক্লাব আয়াক্স। আয়াক্সের হয়ে অসাধারণ দুটি মৌসুম কাটিয়ে, এই মৌসুমেই ৮৬ মিলিয়ন ইউরোতে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে যোগ দিয়েছেন অ্যান্থোনি। ব্রাজিলের ২৬ সদস্যের কাতার বিশ্বকাপের চূড়ান্ত স্কোয়াডেও রয়েছেন এই ম্যানইউ রাইট উইঙ্গার।

সম্প্রতি ‘দ্য পেল্গয়ার্স ট্রিবিউন’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এমন গল্প শুনিয়েছেন অ্যান্থোনি। তিনি বলেন, আমি নরকে জন্মেছিলাম। না, আমি মজা করছি না। আমার জন্ম সাও পাওলোর ‘ফাভেলা’ নামক শহরে। ‘ফাভেলা’কে কে সবাই ‘ছোট নরক’ বলে ডাকত। আমাদের বাসা থেকে মাত্র ১৫ মিনিট দূরত্বেই ছিল মাদকের আখড়া। সেখানে সব সময়ই মাদকের বেচাকেনা চলত। এমনকি আমাদের জানালা দিয়ে সব সময়ই বাতাসের সঙ্গে মাদকের গন্ধ ভেসে আসত। বন্দুক, গোলাগুলি- এসব একটা সময় আর আমাদের জন্য আতঙ্কের বিষয় ছিল না। এগুলোর সঙ্গে ফাভেলার মানুষ অভ্যস্ত হয়ে পড়েছিল।

ছোটবেলায় অ্যান্থোনি মাকে বলতেন, ‌দেখো মা, আমাদেরও একটা রেঞ্জ রোভার থাকবে। স্বপ্নবাজ ছেলের কথা শুনে মা মুচকি হাসতেন। আয়াক্সের হয়ে খেলার সময় সত্যিই লাল রঙের একটি রেঞ্জ রোভার কিনে ফেলেন অ্যান্থোনি। অনেকেই অ্যান্থোনিকে জিজ্ঞেস করেন, কীভাবে এত দ্রুত সময়ে তিনি নিজের ভাগ্যের চাকা বদলে ফেললেন? এর উত্তর নিজেই দিয়েছেন ২২ বছর বয়সী এই ব্রাজিলিয়ান।

তিনি আরও বলেন, আমার বয়স তখন ৮ বা ৯। আমি সকাল বেলা স্কুলে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ দেখি রাস্তায় একজন লোক পড়ে আছে। সে নড়ছিল না। তার সাহায্য প্রয়োজন কিনা, দেখার জন্য আমি সামনে এগিয়ে যাই। আর তখনই বুঝতে পারি সে আসলে মারা গেছে। এর পর আমি চোখ বন্ধ করে সেই মৃতদেহ পেরিয়ে স্কুলে যাই। ভাববেন না, আমি কিছু বাড়িয়ে বলছি। ফাভেলায় এগুলো ছিল খুবই নিত্তনৈমিত্তিক ঘটনা।

অ্যান্থোনি সান্তোস বলেন, আমার জন্য সেখানে সবচেয়ে বাস্তবসম্মত পেশা ছিল- হয় কোনো ড্রাগ ডিলার হওয়া; না হয় বাসের ড্রাইভার অথবা চোর। তবে আমি ঠিক করেছিলাম, যত যাই হয়ে যাক, আমি মাথা নত করব না। আমি শুধু ফুটবলেই নিজেকে খুঁজে পেতাম।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App