×

জাতীয়

ভোটের হাওয়ায় বদলে যাচ্ছে জোটের হিসাব

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৭ নভেম্বর ২০২২, ০৮:২২ এএম

ভোটের হাওয়ায় বদলে যাচ্ছে জোটের হিসাব

ছবি: সংগৃহীত

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনীতিতে চলছে নানা মেরুকরণ। ভোটের হাওয়ায় জোটের রাজনীতিতে চলছে নানা সমীকরণ। এদিকে আগামী সংসদ নির্বাচন জোটগতভাবেই হবে- জোট শরিকদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী ও ১৪ দলীয় নেতা শেখ হাসিনার এমন নির্দেশনার পর নড়েচড়ে বসেছে ১৪ দল। বিএনপি-জামায়াতের অপরাজনীতি ঠেকাতে ফের মাঠে সক্রিয় আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন এই জোট। ডিসেম্বরে আওয়ামী লীগের কর্মসূচির পাশাপাশি ১৪ দলীয় জোট কর্মসূচিকে তৃণমূলেও জোরদার করার কথা জানিয়েছেন জোট নেতারা।

আগামী নির্বাচনে জোটের সমীকরণে পরিবর্তন আসতে পারে। তবে যুদ্ধাপরাধী দল জামায়াতে ইসলামীসহ সা¤প্রদায়িক দলগুলোকে কিছুতেই জোটে আনবে না আওয়ামী লীগ। অন্যদিকে, আওয়ামী লীগের এক সময়ের শরিক জাতীয় পার্টিতে এখন অন্তর্দ্ব›দ্ব চলছে। রয়েছে নানা ধরনের সমীকরণ। এরপরও জাতীয় পার্টিকে নাগালের মধ্যে রাখতে চায় আওয়ামী লীগ।

তবে জাতীয় পার্টি নিয়ে আপাতত কোনো সিদ্ধান্ত না নেয়া হলেও ১৪ দলীয় জোট ঐক্যবদ্ধভাবে নির্বাচনে যাবে। জোটের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য আমির হোসেন আমু বলেন, কেন্দ্রীয় ১৪ দলীয় জোট আরো শক্তিশালী। এই জোট মুক্তিযুদ্ধের ও অসা¤প্রদায়িক চেতনার। ১৪ দলীয় জোট ঐক্যবদ্ধ, এটি একটি আদর্শিক জোট। এটা কোনো নির্বাচনী জোট নয় যে, সহজেই ভেঙে যাবে।

কিন্তু গত জাতীয় নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগের একলা চলার নীতি, মন্ত্রিসভায় ১৪ দল ও শরিকদের বাদ দেয়ায় জোটের মধ্যে স্পষ্টত হতাশা ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছিল। ১৪ দলের অধিকাংশ শরিকই ওই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করে বলেছিল, নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করে বিরোধী দল হওয়া যায় না। এরপর ১৪ দলকে কার্যকর করার উদ্যোগ নেয়া হলেও সেটা সফল হয়নি। করোনা

মহামারির সময় দিবসভিত্তিক কিছু ভার্চুয়াল আলোচনা ছাড়া তেমন কার্যক্রমও ছিল না। ফলে শরিকদের অনেকেই ১৪ দলীয় জোটকে নিষ্ক্রিয় বলেই ধরে নিয়েছেন। ক্ষুব্ধ নেতাদের মতে, ১৪ দলীয় জোটের সবকিছুই নির্ভর করে আওয়ামী লীগের ওপর। কারণ আওয়ামী লীগ এখন আর ১৪ দলকে খুব একটা প্রয়োজন মনে করে না। ইতোমধ্যে সরকারের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড নিয়ে আমরা বিক্ষোভ কর্মসূচিও পালন করেছি। একটা মনস্তাত্ত্বিক দ্ব›দ্ব দেখা দিয়েছে। কোনো ঐক্যবদ্ধ কর্মসূচিও নেই।

তিন বছর পর গত ১৫ মার্চ জোটনেত্রী, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করে ক্ষোভ প্রশমিত হয় ১৪ দলের নেতাদের। আবার ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে রাজপথে সক্রিয় হন তারা। গত ৩১ অক্টোবর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) প্রতিষ্ঠার ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশ জোট শরিকদের মিলনমেলায় পরিণত হয়। সমাবেশে বিএনপি-জামায়াতের অপরাজনীতির বিরুদ্ধে ১৪ দলের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন তারা।

জোট নেতারা বলছেন, জোটের ২১ দফার গুরুত্বপূর্ণ দফা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করা হয়েছে। সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতা ফিরিয়ে আনা হয়েছে। বিএনপি-জামায়াতের সময় যে ১ কোটি ২০ লাখ ভোটারের তালিকা করা হয়েছিল, সেখান থেকে সুষ্ঠু ভোটার তালিকা করা হয়েছে। তবে জোটের চাওয়া অনুযায়ী, এখনো জনগণের জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা চালু হয়নি, রাষ্ট্রক্ষমতা ক্রমাগত একটা ক্ষুদ্র ধনিক গোষ্ঠী, সামরিক ও বেসামরিক আমলাদের হাতে চলে গেছে। এই পরিস্থিতির উত্তরণ প্রয়োজন। বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন ভোরের কাগজকে বলেন, আদর্শিক লড়াইয়ে ১৪ দলীয় জোটের অর্জন কম নয়। জোটগতভাবে নির্বাচনে যাওয়ার জন্য জোটনেত্রী, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশনা দিয়েছেন।

নেতারা বলছেন, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুন্নত রাখা, সংবিধানের চার নীতির অধীনে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়াসহ রাজনৈতিক-আদর্শিক লড়াইয়ে মাঠে থাকবে ১৪ দল।

বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, সমাবেশের নামে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করছে। আমরা ১৪ দলকে ধরে রাখতে চাই। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে ধরে রাখতে চাই।

গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন বলেন, আজকে ষড়যন্ত্র চলছে। এই ষড়যন্ত্র ভেঙে দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের ধারাকে অব্যাহত রাখার জন্য সবাইকে সতর্ক হতে হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App