×

বিনোদন

অনেক কিছু এখনো শেখার বাকি: রুনা লায়লা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৭ নভেম্বর ২০২২, ০৮:০৭ পিএম

অনেক কিছু এখনো শেখার বাকি: রুনা লায়লা

রুনা লায়লা। ছবি: সংগৃহীত

অনেক কিছু এখনো শেখার বাকি: রুনা লায়লা
অনেক কিছু এখনো শেখার বাকি: রুনা লায়লা
অনেক কিছু এখনো শেখার বাকি: রুনা লায়লা

প্রায় ১৭টি ভাষায় গান গেয়েছেন সংগীতশিল্পী রুনা লায়লা। আজ ১৭ নভেম্বর তার জন্মদিন। এ দিন ৭০ বছরে পা রাখলেন তিনি। জন্মদিন উদযাপনা, মিউজিক ইন্ডাস্ট্রির বর্তমান অবস্থা ও বিভিন্ন প্রসঙ্গে আলাপ করেছেন উপমহাদেশের বরেণ্য এই শিল্পী।

৭০ বছরে পা রাখলেন। আপনি যখন সংগীত জগতে এসেছিলেন, সেই থেকে বর্তমানে মিউজিক ইন্ডাস্ট্রির অনেক কিছুর পরিবর্তন ঘটেছে। এর মধ্যে কোন বিষয়গুলো ইতিবাচক বলে মনে হয়?

আমরা যখন কোনো গান করতাম, তখন তা লাইভ গেয়ে রেকর্ড করতে হতো। একটা গান তৈরির পর কয়েকদিন সবাই মিলে রিহার্সেল করতাম। এরপর একটানা গানটি স্টুডিওতে রেকর্ডিং হতো। সেখানে সিনেমার পরিচালক, গীতিকার-সুরকার-কণ্ঠশিল্পী; এমনকি যারা গানে সাইড ভোকাল ছিলেন তারাও থাকতেন। ফলে সিনেমার সিক্যুয়েন্স বা দৃশ্য বুঝে, সেই অনুভব-আবেগের সঙ্গে গানটির রেকর্ডিং হতো। এমনো হতো একটা গানের রেকর্ডিং শেষ করতে করতে রাত পেরিয়ে সকাল হয়ে যেত। তবু গানটি একটানা রেকর্ড করা হতো। কিন্তু এখন প্রযুক্তি এসে সবকিছু সহজ করে দিয়েছে। খণ্ড খণ্ড ভাগে একটি গানের রেকর্ডিং হয়। ডুয়েট গানে আমাদের সময়ে একসঙ্গে দুজনে লাইভ গানে অংশ নিতে হতো। এখন একজন আজ কণ্ঠ দিল, অন্যজন দিল আরো কিছুদিন পর; এভাবে দেখা যায়, গানটির মূল যে অনুভূতি ছিল তার কিছুটা পরিবর্তন হয়ে যায়। একটানা একটি গান রেকর্ডিয়ে গাইলে আমার মনে হয় অনুভূতি একই থাকে।

এবার জন্মদিন কীভাবে কাটল?

অসংখ্য ভক্ত অনুরাগীর শুভেচ্ছা পেয়েছি। আমাকে ঘিরে তাদের শুভকামনা আমাকে আপ্লুত করেছে। ঘরোয়াভাবে টুকটাক আয়োজনও ছিল। কেকও কেটেছি। টেলিভিশন লাইভে হাজির হয়ে অনেক ভক্ত-শ্রোতার সঙ্গে কথা বলার সুযোগ হয়েছে। তাছাড়া সেরা কণ্ঠের কয়েকজন শিল্পী আমার জন্মদিন উপলক্ষে গান প্রকাশ করেছে। এটাও আনন্দের।

এ প্রজন্মের শিল্পীদের সঙ্গেও কাজ করছেন, তাদের নিয়ে আপনি কতটুকু আশাবাদী?

আমি সবসময়ই আশাবাদী। তাদের নিয়েও আশাবাদী। অনেক প্রতিভাবান শিল্পী রয়েছেন, যারা নিজেদের প্রকাশ করার সুযোগ পেলে অনেক দূর যাবে বলে আমার বিশ্বাস। তবে তাদের অবশ্যই প্যাশেন্স ধরে রাখতে হবে। শিল্পী হতে হলে গানের রেওয়াজ চালিয়ে যেতে হবে। গান করে টাকাপয়সা আসছে না, এমন করে বাদ দিয়ে দিলে হবে না। টাকা এক সময় আসবে।

ছোটবেলায় যাদের গান শুনে বড় হয়েছেন, তাদের প্রভাব আপনার ওপর কতটুকু?

আমরা তো তখন পাকিস্তানের নূরজাহান, ভারতের লতা মঙ্গেশকর, আশা ভোঁসলে; তাদের গান শুনে বড় হয়েছি। তাদের মতো করে গাইতেও চেষ্টা করেছি। আমি এখনো অনেক কিছু শিখছি বলা যায়। এখনো বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন ভাষার গান শুনি। অনেক কিছু এখনো শেখার বাকি, করার বাকি। তরুণদেরও প্রচুর গান শোনা উচিত।

আপনি নিজেও প্রায় ১৭টি ভাষায় গান গেয়েছেন। অন্য ভাষায় গান গাইতে চ্যালেঞ্জিং মনে হয় না?

আমি ছোটবেলা থেকে বিভিন্ন ভাষা শেখার প্রতি আগ্রহী ছিলাম। কিছু কিছু শিখেছিও; যেমন উর্দু-হিন্দি-ইংরেজি বলতে পারি। পাঞ্জেবি ভাষা জানি। একটু একটু ফ্রেঞ্চও বলতে পারি। আর গানের বেলায় লিরিকের শব্দগুলোর উচ্চারণ যেন সঠিক হয়, তার জন্য সেই ভাষায় কথা-বলা কারো সাহায্য নিই।

আপনি বলছিলেন, অনেক কিছু করার বাকি! নিজে গান গেয়েছেন, সুর করেছেন। কখনো কি নিজে লিরিক লেখার চেষ্টা করেছেন?

লিরিক লেখা অনেক কঠিন কাজ, সে আমার দ্বারা সম্ভব নয়। সুর করব এটাও কোনোদিন ভাবিনি, হঠাৎ করেই হয়ে গেছে।

যদি সংগীতশিল্পী না হতেন, তবে কী হতেন?

গান ছাড়া আমি কোনোদিন কিছুই ভাবিনি। গানই আমার জীবন। ছোট থেকে গান নিয়ে ছিলাম, এখনো আছি।

জীবনে কী পেয়েছেন বা পাননি; এমন অপূর্ণতা কিছু রয়েছে?

গান গেয়ে প্রচুর মানুষের ভালোবাসা-শ্রদ্ধা পেয়েছি। এর চেয়ে বড় পাওয়া আমার জীবনে আর কিছু হতে পারে না। তবে আমার একটা ইচ্ছে ছিল, আমার বড় বোন দিনা লায়লার স্মরণে একটি ক্যানসার হাসপাতাল বা ফাউন্ডেশন করব। সেটা বোধহয় করাটা খুব কঠিন হয়ে যাবে। তবু দেখা যাক!

আপনার অনেক গান রিমেক হয়েছে, সেগুলো শোনেন?

কখনো কখনো শোনা হয়। তবে মূল গানের যে স্বাদ সেটাই আমার বেশি ভালো লাগে। নতুন রিমেকও ভালো হচ্ছে, তবে নতুন গানগুলোতে মূল গানের যে ভাব সেটা ঠিক থাকলে শুনতে ভালো লাগে।

বি. দ্র. : জন্মদিন উপলক্ষে গত বছরের সাক্ষাৎকারটি পনরায় প্রকাশ করা হলো।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App