×

সারাদেশ

দেশের মাটিতে রাজাকারের লাশ না দাফনের দাবি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৬ নভেম্বর ২০২২, ০৬:১৫ পিএম

দেশের মাটিতে রাজাকারের লাশ না দাফনের দাবি

বুধবার চট্টগ্রাম নগরীর রহমতগঞ্জে যুদ্ধাপরাধী সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বাড়ি 'গুডস হিলের' সামনে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, চট্টগ্রাম বিভাগের বিক্ষোভ সমাবেশ। ছবি: ভোরের কাগজ

দেশের মাটিতে রাজাকারের লাশ না দাফনের দাবি
দেশের মাটিতে রাজাকারের লাশ না দাফনের দাবি
দেশের মাটিতে রাজাকারের লাশ না দাফনের দাবি
দেশের মাটিতে রাজাকারের লাশ না দাফনের দাবি

পাঁচ দফা দাবিতে প্রধানমন্ত্রীকে স্মারকলিপি

যুদ্ধাপরাধী রাজাকার-আলবদরদের লাশ স্বাধীন বাংলাদেশের মাটিতে দাফন না করার দাবি করেছেন চট্টগ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানরা।

বুধবার (১৬ নভেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম নগরীর রহমতগঞ্জে যুদ্ধাপরাধী সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বাড়ি 'গুডস হিলের' সামনে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, চট্টগ্রাম বিভাগের বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে এ দাবি জানানো হয়।

এই সমাবেশের আগে মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ড নেতৃবৃন্দ চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার মো. আশরাফ উদ্দিনের মাধ্যমে পাঁচ দফা দাবি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেন।

দাবিগুলো হচ্ছে, হুম্মামের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা দায়ের ও গ্রেপ্তার, যুদ্ধাপরাধীদের সন্তানসহ পরিবারের সদস্যদের রাজনীতি ও নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা, দণ্ডিত যুদ্ধাপরাধীদের সকল সম্পদ রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করা, জেলা-উপজেলা-ইউনিয়ন পর্যায়ে সকল যুদ্ধাপরাধীর তালিকা করে পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করা এবমুক্তিযুদ্ধে নিরস্ত্র বাঙালিদের নির্যাতনের জন্য রাজাকার-আলবদর, পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর গড়ে তোলা সকল ‘টর্চার ক্যাম্পকে’ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর হিসেবে গড়ে তোলা।

রহমতগঞ্জে " রাজাকার সাকা চৌধুরী'র বাড়ির সামনের সমাবেশে চট্টগ্রাম মহানগর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার মোজাফফর আহমেদ বলেন, গত ২৯ অক্টোবর আমরা এ বাড়িকে রাজাকার বাড়ি আখ্যায়িত করে দেয়ালে চিকা লিখেছিলাম। তার পরের দিনই সেই লেখা মুছে দেয়া হয়েছে। আমরা আজকে আবারও এসেছি। এ লেখা যদি আর মুছা হয়, তাহলে আমরা এ বাড়ি গুড়িয়ে দিব। রাজাকারের বাড়িঘর, সম্পত্তি অবিলম্বে বাজেয়াপ্ত করা হোক। আমরা এ মাটিকে আর অপবিত্র হতে দিব না। রাজাকারদের লাশ নদীতে ভাসিয়ে দেয়া হোক। বাংলার জমিনে তাদের দাফন করা হবে না।

মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোজাফফর বলেন, স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তির বিরুদ্ধে আমরা মুক্তিযোদ্ধারা আমাদের সন্তানদের নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলবো।

হুম্মাম কাদের চৌধুরী সাকা চৌধুরীকে শহীদ আখ্যায়িত করে মুক্তিযুদ্ধকে অপমানিত করেছে দাবি করে চাঁদপুর জেলা কমান্ডার এম এ ওয়াদুদ বলেন, সাকা চৌধুরীকে যুদ্ধাপরাধের দায়ে ফাঁসির দণ্ডে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তার এই বাড়িতে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে চিকিৎসক, শিক্ষাবিদ, বুদ্ধিজীবীসহ অনেক মুক্তিযোদ্ধাদের এনে টর্চার করা হয়েছে। ব্রাশফায়ার করে হত্যা করা হয়েছে। আর সে নাকি শহীদ! সাকা পুত্র হুম্মাম কাদের চৌধুরী তার কুলাঙ্গার বাবাকে শহীদ আখ্যায়িত করে এদেশের মুক্তিযুদ্ধকে অপমানিত করেছে। মুক্তিযোদ্ধা ও যুদ্ধে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের অপমানিত করেছে। তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা দেওয়া হোক। তাকে আটক করে অবিলম্বে ফাঁসি দেওয়ার জোর দাবি জানাই।

মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ড কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মাহবুবুল ইসলাম প্রিন্স বলেন, তাদের কীভাবে সাহস হয়, রাজাকার বাড়ির চিকা মুছে দেয়ার? তারা যতবার মুছবে আমরা ততবার লিখব। দেশের আনাচে কানাচে যত যুদ্ধাপরাধীর বাড়ি আছে সব বাড়িকে রাজাকার বাড়ি হিসেবে আখ্যায়িত করতে হবে। আজ মুক্তিযোদ্ধার অবহেলিত। আর রাজাকাররা আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ। কোটি কোটি টাকা সম্পত্তির মালিক। মুক্তিযোদ্ধারা রিকশা চালায় আর রাজাকাররা চালায় পাজেরো গাড়ি।

চট্টগ্রাম জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের সদস্য সচিব কামরুল হুদা পাভেলের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চট্টগ্রাম জেলা ইউনিটের ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা একেএম সরোয়ার কামাল দুলু, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক আল মামুন, চট্টগ্রাম জেলার আহবায়ক মশিউর পাভেল, চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি মাহমুদুল করিম। এসময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ বান্দরবান জেলা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম চৌধুরী বীর প্রতীক, কক্সবাজার জেলা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ নুরুল আবছার, খাগড়াছড়ি জেলা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রইছ উদ্দিন, ফেনী জেলা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মোতালেব, রাঙ্গামাটি জেলা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা ইকবাল হোসেন চৌধুরী, নোয়াখালী জেলা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাম্মেল হক মিলন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা হারুনুর রশিদ প্রমূখ।

এসময় 'গুডস হিলকে' রাজাকার বাড়ি আখ্যায়িত করে দেয়ালে মুছে ফেলা লিখার উপর আবারও রঙ দিয়ে লিখা হয় 'বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নির্যাতন কেন্দ্র','রাজাকারের বাড়ি'। গেইটে এঁকে দেয়া হয়েছে নিষিদ্ধ ক্রস চিহ্ন৷

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App