×

জাতীয়

ঢাকাতে ৪৫০ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ঘাটতি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৪ নভেম্বর ২০২২, ০৯:২২ পিএম

ঢাকাতে ৪৫০ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ঘাটতি

ফাইল ছবি

লাগবে ২৭ হাজার কোটি টাকা

ঢাকা মহানগর এলাকায় চাহিদার তুলনায় প্রায় ৪৫০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ঘাটতি রয়েছে বলে জানা গেছে। সম্প্রতি পাস হওয়া ঢাকা মহানগর এলাকার বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনায় (ড্যাপ) এ তথ্য দেয়া হয়েছে।

ড্যাপ জানিয়েছে, এ ঘাটতি পূরণে প্রায় ২৭ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগের প্রয়োজন হবে। ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় প্রতি তিন হাজার মানুষের বিপরীতে একটি এবং কেরানীগঞ্জ ও সাভার উপজেলার মতো এলাকায় প্রতি এক হাজার জনের বিপরীতে একটি এবং ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনে নতুন যুক্ত হওয়া ওয়ার্ডগুলোর মতো এলাকাগুলোয় প্রতি দুই হাজার মানুষের জন্য একটি করে প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রয়োজন। প্রতিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আয়তন হতে হবে দেড় একর। বিদ্যালয়ে আবশ্যিকভাবে মাঠও রাখতে হবে।

নগর-পরিকল্পনাবিদেরা বলছেন, ঘাটতির জন্য প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া নিয়েও তীব্র প্রতিযোগিতায় নামতে হচ্ছে ভর্তিচ্ছুদের। পাশাপাশি যানজট বৃদ্ধিসহ ঢাকা শহরের বাস যোগ্যতাতেও নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।

ড্যাপের জরিপে দেখা যাচ্ছে, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) আওতাধীন ১ হাজার ৫২৮ বর্গ কিলোমিটার এলাকায় (ঢাকা মহানগর এলাকা) এখন ৮৬২টি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে। ২০২৫ সাল নাগাদ মোট স্কুলের চাহিদা গিয়ে ঠেকবে ১ হাজার ৩৮৯টিতে। এতে ২০২৫ সাল নাগাদ ৬২৭টি বাড়তি স্কুল প্রয়োজন হবে।

এবিষয়ে নগর পরিকল্পনাবিদ আবু মুছা মো. আবদুল্লাহ বলেন, ২০২৫ সাল নাগাদ ঢাকা মহানগর এলাকার প্রত্যাশিত জনসংখ্যা বিবেচনায় চাহিদা নির্ধারিত হয়েছে। সেই হিসেবে এখন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ঘাটতি ৪৫০টির মতো হবে।

তিনি বলেন, পরিকল্পিত নগরায়ণের ক্ষেত্রে মৌলিক একটি অনুষঙ্গ হচ্ছে প্রাথমিক বিদ্যালয়। কারণ, কোনো এলাকায় মানুষ থাকলে স্বাভাবিকভাবেই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চাহিদা তৈরি হবে। আর মানসম্মত শিক্ষা পাওয়া শিশুদের মৌলিক অধিকার। প্রয়োজনের তুলনায় বিদ্যালয়ের সংখ্যা কম হলে শিশুদের শারীরিক-মানসিক বিকাশসহ পুরো শহরেই এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।

ড্যাপের প্রস্তাব

২০২৫ সালের মধ্যে রাজধানী ঢাকাতে যত বিদ্যালয়ের চাহিদা তৈরি হবে, তার ৮০ শতাংশ সরকারি উদ্যোগে নির্মাণের জন্য ড্যাপে প্রস্তাব করা হয়েছে। এর লক্ষ্য শিক্ষা সর্বস্তরের মানুষের জন্য সাশ্রয়ী করা। এ জন্য ড্যাপে বিদ্যালয়ভিত্তিক অঞ্চলের ধারণা যুক্ত করা হয়েছে। এতে ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন এলাকায় প্রয়োজন অনুযায়ী হাঁটা দূরত্বে ৬২৭টি অতিরিক্ত প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্মাণের প্রস্তাব করা হয়েছে। পাশাপাশি নতুনভাবে নির্মিত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ সবার জন্য উন্মুক্ত রাখতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ঢাকায় ‘মানসম্মত’ হিসেবে পরিচিত প্রতিষ্ঠানগুলোর অন্য এলাকায় শাখা খোলারও সুপারিশ করা হয়েছে ড্যাপের প্রস্তাবে।

ড্যাপের প্রকল্প পরিচালক আশরাফুল ইসলাম বলেন, বিদ্যমান প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে সরকারি-বেসরকারি সব স্কুল ধরা হয়েছে। স্কুলগুলোর মধ্যে বেশির ভাগই শুধু একটি ভবনকেন্দ্রিক। ফলে শিক্ষার্থীদের মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এমন অবস্থায় মূলত সরকারি উদ্যোগে বাড়তি স্কুল নির্মাণ করার সুপারিশ করা হয়েছে। এ জন্য প্রায় ২৭ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ প্রয়োজন। আশা করছি ২০৩৫ সাল নাগাদ সব স্কুলের চাহিদা মেটানো সম্ভব হবে। এতে মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত হওয়ার পাশাপাশি শহরের বাসযোগ্যতা বাড়বে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App