×

জাতীয়

হুমায়ূন আহমেদের জন্মদিন উদযাপন

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৩ নভেম্বর ২০২২, ০৭:২৫ পিএম

হুমায়ূন আহমেদের জন্মদিন উদযাপন

ছবি: ভোরের কাগজ

হুমায়ূন আহমেদের জন্মদিন উদযাপন

ছবি: ভোরের কাগজ

হুমায়ূন আহমেদের জন্মদিন উদযাপন

ছবি: ভোরের কাগজ

সমাধিতে শ্রদ্ধার ফুল, ঢাকের বাদ্যে, হলুদ বেলুন উড়িয়ে, কথামালা, গান, মোমবাতি প্রজ্জ্বালনে, গুণীজন সম্মাননা, কেক কাটা, বর্নাঢ্য র‌্যালি, আড্ডা এবং সাংস্কৃতিক আয়োজনের মধ্য দিয়ে বরেণ্যে সাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের জন্মদিন উদযাপন করা হয়েছে।

প্রতি বছরের মতো এবারও এই কিংবদন্তির জন্মদিনে উৎসব মুখর পরিবেশে আয়োজন হলো চ্যানেল আই প্রাঙ্গণের চেতনা চত্বরে ঐক্যডটকমডটবিডি ‘হুমায়ূন মেলা’। পাওয়ার্ড বাই নতুন ধারা ইন অ্যাসোসিয়েশন উইথ মেট্রোসেম। এদিন ১১টা ৫ মিনিটে শুরু হয় ‘চ্যানেল আই হুমায়ূন মেলা’। এতে ইমপ্রেস টেলিফিল্ম লিমিটেড ও চ্যানেল আই-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরিদুর রেজা সাগরসহ বক্তব্য দেন হুমায়ূন আহমেদের বন্ধু, স্বজনসহ গুণীজনরা।

এ সময় স্বাগত বক্তব্যে ফরিদুর রেজা সাগর বলেন, আজকের দিনে, হুমায়ূন আহমেদের জন্মদিনে তিনি কোথায় আছেন আমরা জানি না। তাকে শুভেচ্ছা জানিয়ে আমরা হুমায়ূন মেলা শুরু করছি ঐক্য ডট কম ডট বিডি ‘হুমায়ূন মেলা’।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন অভিনেত্রী দিলারা জামান, নাসিরুদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু, অন্যপ্রকাশের প্রকাশক ও প্রধান নির্বাহী মাজহারুল ইসলাম, ঐক্য ফাউন্ডেশনের সভাপতি শাহীনা আক্তার রেনিসহ বিশিষ্টজনেরা।

[caption id="attachment_382389" align="alignnone" width="1387"] ছবি: ভোরের কাগজ[/caption]

দিলারা জামান বলেন, হুমায়ূন আহমেদ একটি তারার নাম, নক্ষত্রের নাম। যে মানুষটির জন্য আজকে আমি দিলারা জামান। আমার জনপ্রিয়তা, আমার অর্জন, তার পেছনে এই মানুষটি। তাকে স্যালুট।

নাসিরুদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু বলেন, শরৎচন্দ্রের পর বাঙালি মধ্যবিত্তের পাঠাভ্যাস চলে গিয়েছিল। সত্তর এবং আশির দশকে হুমায়ূন আহমেদ এই দায়িত্ব তুলে নিলেন। শুধু তুলে নিলেন বললে ভুল হবে। একেবারে বিপ্লব ঘটালেন। তার বই ছাড়া সেই সময়ে তরুণদের চলতোই না। তাকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের প্রকাশনা শিল্পের বড় উত্থান ঘটে।

মাজহারুল ইসলাম বলেন, চ্যানেল আইয়ের সঙ্গে হুমায়ূন আহমেদের ছিল আত্মিক সম্পর্ক। তিনি সবসময় বলতেন আমরা একই পরিবারের মানুষ।

শাহীনা আক্তার রেনি জানান, হুমায়ুন আহমেদের লেখা, উপন্যাস, গান, সুর সবই আছে। শুধু তিনি নেই। তার পরেও তিনি আমাদের মাঝে বিচরণ করছেন। তাকে জানাই শুভ জন্মদিন। হুমায়ূন আহমেদ আমাদের প্রাণে চিরজীবন থাকবেন।

আলোচনা শেষে বেলা সাড়ে ১১টায় হলুদ বেলুন উড়িয়ে উদ্বোধন ঘোষণা করা হয় হুমায়ূন মেলার। মেলা প্রাঙ্গণে এ সময়ে হলুদ পাঞ্জাবী আর নীল শাড়ি পরে উপস্থিত ছিলেন অসংখ্য হিমু ও রূপা। ঢাকের শব্দে জমে ওঠে মেলা প্রাঙ্গণ। বিভিন্ন অঙ্গনের হুমায়ূন ভক্ত ও বিশিষ্টজনরা উপস্থিত হয়েছেন হুমায়ূন মেলায়। জন্মদিন উপলক্ষে চ্যানেল আই প্রাঙ্গণে স্থাপিত বিশেষ উন্মুক্ত মঞ্চে চলে হুমায়ূন আহমেদের লেখা গান ও গানের তালে নাচ। গান করেছেন রফিকুল আলম, সেলিম চৌধুরী, অনিমা রায় প্রমুখ।

[caption id="attachment_382387" align="alignnone" width="1386"] ছবি: ভোরের কাগজ[/caption]

অনুষ্ঠানে আরও ছিল হুমায়ূন আহমেদের লেখা থেকে আবৃত্তি পরিবেশনা। হুমায়ূন স্মরণে চিত্রাঙ্কন করেছেন শিল্পী মনিরুজ্জামান ও আবদুল মান্নানের সঙ্গে বিভিন্ন বয়সী শিশুশিল্পীরা। মেলাতে হুমায়ূন আহমেদের বই, তার নির্মিত চলচ্চিত্র ও নাটকের ভিডিও সিডিসহ বিভিন্ন ধরণের পণ্য ও সেবার পসরা দিয়ে সাজানো হয়েছে স্টলগুলো। ছিল ঐক্য ডট কম ডট বিডির স্টল। মেলা পরিচালনা করেন লেখক আমীরুল ইসলাম।

আমাদের গাজীপুর প্রতিনিধি এম নজরুল ইসলাম জানান, হুমায়ূন আহমেদ প্রতিষ্ঠিত নুহাশপল্লীতে হুমায়ূন আহমেদের পরিবারের সদস্য, নুহাশপল্লীর কর্মী ও ভক্ত পাঠকরা মোমবাতি প্রজ্বলন, সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও দুপুর ১২টায় ম্যুরালের সামনে কেক কাটার মধ্য দিয়ে প্রিয় লেখকের জন্মদিন উদযাপন করেছেন। রাতে লেখকের সমাধিতে ১০৭৪টি মোমবাতি প্রজ্বলন করা হয়।

এতে হুমায়ূন আহমেদের স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন ও তার দুই ছেলে এবং ভক্তরা উপস্থিত ছিলেন। এ সময় হুমায়ূন আহমেদের দর্শন নিয়ে শুদ্ধতম চর্চা হোক এমনটা প্রত্যাশা করেন লেখকের পরিবার। হুমায়ূন ভক্ত পাঠকরা ভালোবাসা ও শ্রদ্ধায় আজীবন লেখককে স্মরণ করে যাবেন বলে জানান ভক্তরা।

নেত্রকোণা থেকে প্রতিনিধি ম. শফিকুল ইসলাম জানান, নেত্রকোনা হিমু পাঠক আড্ডার উদ্যোগে বর্ণাঢ্য র‌্যালি, কেক কাটা, গুণীজন সম্মাননা প্রদান, আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এছাড়া বেলা ১১ টায় র‌্যালির উদ্বোধন করেন দেশবরেণ্য ও স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্ত লেখক অধ্যাপক যতীন সরকার।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ অন্যরা। পরে হিমু-রুপাদের নিয়ে র‌্যালিটি শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে মোক্তারপাড়া মুক্ত মঞ্চে এসে শেষ হয়। সেখানে কেক কাটেন জেলা প্রশাসক। পরে পাবলিক হলে পৌর মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা নজরুল ইসলাম খানের সভাপতিত্বে এবং হিমু পাঠক আড্ডার সভাপতি আলপনা বেগমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা ও সম্মাননা প্রদান।

এতে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ। অনুষ্ঠানে সমাজ সেবা ও নারী উন্নয়নে বিশেষ অবদানের জন্য হিমু পাঠক আড্ডার পক্ষ হতে বেগম রোকেয়াকে সম্মাননা ও ক্রাস্ট প্রদান করা হয়। এ সময় আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন নেত্রকোনা সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর আফজাল রহমান, লেখক হায়দার জাহান চৌধুরী ও সম্মাননাপ্রাপ্ত বেগম রোকেয়া।

এদিকে, লেখকের পিতৃভূমি কেন্দুয়ার কুতুবপুরে তার নিজ হাতে গড়া প্রতিষ্ঠান শহিদ স্মৃতি বিদ্যাপীঠে প্রধান শিক্ষক আসাদুজ্জামানের নেতৃত্বে কোরআন খতম, র‌্যালি ও প্রতিকৃতিতে ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদনসহ নানা কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে বিদ্যালয়ের শিক্ষক ছাত্রছাত্রী ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন রোয়াইলবাড়ি আমতলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান লুৎফর রহমানসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। সন্ধ্যায় জেলা পাবলিক হল মিলনায়তনে সাংস্কৃতিক সন্ধ্যার আয়োজন করা হয়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App