ঋণের কিস্তি পুরো পরিশোধ না করেও খেলাপি হওয়া থেকে অব্যাহতি পাচ্ছেন অনেকে। যদিও ঋণ পরিশোধে ব্যবসায়ীদের দেওয়া ছাড়ের মেয়াদ এখনো পুরোপুরি শেষ হয়নি। তবে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ না কমে বরং আশঙ্কাজনক হারে বেড়েই চলেছে।

চলতি (২০২২) সালের জুন শেষে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ২৫ হাজার ২৫৭ কোটি টাকা। সে হিসাবে তিন মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৯ হাজার ১৩৯ কোটি টাকা। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর শেষে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে এক লাখ ৩৪ হাজার ৩৯৬ কোটি ১১ লাখ টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্যে এসব জানা গেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্য বলছে, গত বছরের একই সময়ে (সেপ্টেম্বর ২০২১) খেলাপির পরিমাণ ছিল এক লাখ ১ হাজার ১৫০ কোটি টাকা। সে হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়েছে ৩৩ হাজার ২৪৬ কোটি টাকা।

জানা যায়, মোট বিতরণ করা ১৪ লাখ ৩৬ হাজার ২০০ কোটি টাকা ঋণের মধ্যে ১ লাখ ৩৪ হাজার ৩৯৬ কোটি টাকা খেলাপি হয়ে পড়েছে। সে হিসাবে বিতরণকৃত ঋণের মধ্যে ৯ দশমিক ৩৬ শতাংশই খেলাপি। তিন মাসের ব্যবধানে প্রায় ৯ হাজার কোটি (৯ হাজার ১৩৮ কোটি ৫৪ লাখ) টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে খেলাপি ঋণ।

বিপুল অঙ্কের এ খেলাপি ঋণের মধ্যে বেশিরভাগ খেলাপিই দেশের বেসরকারি ব্যাংকের। টাকার অঙ্কে এর পরিমাণ ৬৬ হাজার ৬৯৫ কোটি ৫০ লাখ টাকা। বেসরকারি ব্যাংকগুলো যত টাকার ঋণ বিতরণ করছে তার মধ্যে ৬ দশমিক ২০ শতাংশ খেলাপিতে পরিণত হয়েছে।

তবে সরকারি ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমাণ কিছুটা কম হলেও বিতরণকৃত ঋণের তুলনায় তা অনেক বেশি। সেপ্টেম্বর শেষে রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর ৬০ হাজার ৫০২ কোটি টাকা খেলাপিতে পরিণত হয়েছে, যা রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে বিতরণকৃত মোট ঋণের ২৩ শতাংশ।

এদিকে, বিদেশি ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের পরিমাণ ২ হাজার ৯৭১ কোটি টাকা। বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে বিতরণ করা ঋণের প্রায় ১২ শতাংশ খেলাপি। বিশেষায়িত ব্যাংকগুলো মোট ৩৫ হাজার ৮২৭ কোটি টাকা বিতরণ করলেও এর মধ্যে খারাপ হয়ে পড়েছে ৪ হাজার ২২৮ কোটি টাকা।

এর আগে চলতি বছরের জুন প্রান্তিক শেষে ব্যাংক খাতের মোট বিতরণকৃত ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছিল ১৩ লাখ ৯৮ হাজার ৫৯২ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ঋণ ছিল ১ লাখ ২৫ হাজার ২৫৭ কোটি টাকা, যা মোট বিতরণ করা ঋণের ৮ দশমিক ৯৬ শতাংশ। তারও তিন মাস আগে অর্থাৎ মার্চ শেষে খেলাপি ছিল ১ লাখ ১৩ হাজার ৪৪০ কোটি টাকা।