×

সম্পাদকীয়

প্রশ্ন নিয়ে প্রশ্ন বাড়ছে!

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১২ নভেম্বর ২০২২, ১২:৪০ এএম

প্রশ্ন নিয়ে প্রশ্ন বাড়ছে!

প্রশ্নপত্র নিয়ে যেন উদ্বেগ শেষ হচ্ছে না। প্রশ্নপত্র ফাঁস, ভুল প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা ও প্রশ্নপত্রে সাম্প্রদায়িক উসকানিসহ নানা গাফিলতি দেখা যাচ্ছে। এমতাবস্থায় প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে পরীক্ষা ব্যবস্থাপনাও। সর্বশেষ গত রোববার চলমান এইচএসসি পরীক্ষার চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের বাংলা প্রথম পত্রের ৪০ নম্বরের সৃজনশীল প্রশ্নে ৪১টি ভুল পাওয়া গেছে। এই ভুল নিয়ে চট্টগ্রাম বোর্ড নীরব থাকলেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ব্যাপক হাস্যরসের সৃষ্টি হয়েছে। নানা অব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এর আগে পরীক্ষার প্রথমদিন গত রোববার কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের এইচএসসি বাংলা প্রথম পত্রে সিলেবাসের বাইরে থেকে প্রশ্ন করা হয়েছে। সাম্প্রদায়িক উসকানিমূলক উদ্দীপক তুলে দেয়া হয় বাংলা প্রথম পত্রের প্রশ্নে। এ নিয়ে সমালোচনা সৃষ্টি হয়েছে। এটি রীতিমতো ধর্মীয় উসকানির শামিল। দেশে ধর্মীয় সম্প্রীতি ও অসাম্প্রদায়িকতা শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য হলেও প্রশ্নপত্রে ভিন্ন চিত্র ফুটে উঠেছে। এছাড়া গত ১৫ সেপ্টেম্বর শুরু হওয়া চলতি বছরের মাধ্যমিক ও সমমান পরীক্ষায় দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের অধীনে কুড়িগ্রামে কয়েকটি বিষয়ের প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনা ঘটে। ওই পরীক্ষায়ও প্রশ্নপত্রে গুরুতর বানান ভুল, পরীক্ষা কক্ষে ভুল প্রশ্নপত্র বিতরণ, বিলম্বে প্রশ্ন বিতরণসহ পরীক্ষা ব্যবস্থাপনায় গুরুতর ত্রæটি-বিচ্যুতি ধরা পড়ে। সে সময় তিন শিক্ষককে প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় আটক করেছিল পুলিশ। এর আগে বড় আকারে প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনা ঘটে ২০১৪ সালে। এরপর ২০১৭ সালেও একবার প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ আসে। প্রশ্ন ফাঁস এখন আমাদের শিক্ষা ক্ষেত্রে একটা কালব্যাধি হয়ে দেখা দিয়েছে। স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা, পাবলিক পরীক্ষা, চাকরিতে নিয়োগ পরীক্ষা থেকে শুরু করে মাধ্যমিক ও প্রাথমিক পর্যায়ের বার্ষিক পরীক্ষা কোনো কিছুই বাদ যাচ্ছে না প্রশ্ন ফাঁস চক্রের থাবা থেকে। অথচ শুরুর দিকে প্রশ্ন ফাঁসের বিষয়টি স্বীকারই করত না সরকার তথা মন্ত্রণালয়। এখন স্বীকার করলেও বাস্তবতা হলো সরকারের কর্তাব্যক্তিদের প্রশ্ন ফাঁস রোধে নেয়া নানা ব্যবস্থার কোনো কার্যকর ফল দেখা যাচ্ছে না। আমরা মনে করি, প্রশ্ন ফাঁস রোধে প্রশ্ন ছাপা ও বিতরণের কাজে জড়িত শিক্ষক এবং সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মকর্তা-কর্মচারী কাউকেই সন্দেহের বাইরে রাখার সুযোগ নেই। প্রশ্ন ফাঁস রোধ করতেই হবে। এর জন্য ফাঁসের সবকটা রন্ধ্র বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে সরকারকে। প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে সাম্প্রদায়িক উসকানি দিতে একটা পক্ষ সক্রিয়। এদের চিহ্নিত করা জরুরি। শিক্ষার পরিবেশ সুষ্ঠু না হলে তা দেশের সার্বিক অগ্রগতির পথে প্রতিবন্ধক। এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না, শিক্ষা ক্ষেত্রে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। এক সময় নকলের মহোৎসব ছিল। এখন নেই বললেই চলে। এটা সরকারের কৃতিত্ব। ভুল প্রশ্নপত্রে পরীক্ষার ঘটনা প্রথম নয়, এর আগেও বিভিন্ন সময়ে এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে। এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টদের আমলে নেয়া জরুরি, এভাবে যদি পরীক্ষায় এমন অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটে, তবে তা শিক্ষার্থীদের মানসিক চাপ সৃষ্টি হবে। চট্টগ্রামের ঘটনাকে গুরুত্ব দিয়ে ভবিষ্যতে যেন এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয়, সে বিষয়ে কর্তৃপক্ষসহ সবাইকে সচেতন থাকতে হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App