তথ্যপ্রযুক্তি এসেছে আমাদের সহায়তা করার জন্য কিন্তু সেই প্রযুক্তিই আমাদের জীবনের মূল্যবান সময় কেড়ে নিচ্ছে। আপনার কি মনে হয় না ইউটিউব, ফেসবুক, মেসেঞ্জার আপনার মূল্যবান সময় কেড়ে নিচ্ছে? এই যে আপনি সারারাত জেগে ফোন ব্যবহার করছেন এবং বেলা ১১-১২টা পর্যন্ত ঘুমাচ্ছেন। অথচ সকালে আপনার স্কুল, কলেজ, ভার্সিটি কিংবা কাজে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু অধিক রাত জাগার কারণে আপনি উঠতে পারেননি। যার কারণে আপনি শারীরিক, মানসিক সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন। গবেষণায় দেখা গেছে যারা নিয়মিত রাত জাগেন তাদের হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, শারীরিক স্থূলতা এমনকি স্ট্রোকের সম্ভাবনা বেশি থাকে। বেশ কিছু বৈজ্ঞানিক গবেষণায় দেখা গেছে মানুষ যত বেশি রাত জাগে ততই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমতে থাকে। এমনকি রাতে ঘুম কম হলে মানুষের ভুল সিদ্ধান্ত নেয়ার সম্ভাবনাও বৃদ্ধি পায়। বাংলাদেশে বর্তমানে ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৫ কোটি ২০ লাখ এবং সর্বোচ্চ ফেসবুক ব্যবহারকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশের অবস্থান দশম। সেইসঙ্গে দেশে মোট মেসেঞ্জার ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৩ কোটি ৭৫ লাখ ২৭ হাজার। যার বেশিরভাগই স্টুডেন্ট। প্রতি ৩ জন ব্যক্তির মধ্যে একজন ফেসবুক চালায়। এ সংখ্যাটি ক্রমেই বাড়ছে। ধারণা করা হচ্ছে যে, আগামী ৫ বছরের মধ্যে প্রায় অর্ধেক বাংলাদেশি মানুষ ফেসবুক ব্যবহার করবে। একজন স্টুডেন্ট তার পড়ার টেবিলে যত সময় দিচ্ছে তার থেকে অনেক বেশি সময় ফেসবুকে দিচ্ছে; ফলস্বরূপ সে পড়াশোনা থেকে দূরে চলে যাচ্ছে। আমরা যদি দিনের বেশিরভাগ সময় এই ডিজিটাল ডিভাইসে দিই তাহলে কীভাবে সুপ্ত প্রতিভার বিকাশ ঘটাব বা কীভাবে মুক্ত চিন্তা করব। সফল মানুষরা সময়ের যথাযথ মূল্যায়ন এবং গভীর অধ্যবসায়ের মাধ্যমেই সফলতা লাভ করেন। আর যারা সময়ের অপব্যবহার করে সময় নষ্ট করেন দিনশেষে তাদের ব্যর্থতা ও নিরাশার বোঝা বইতে হয়। প্রতিটি বিষয়েরই খারাপ ভালো দুটো দিক আছে। আপনি খারাপ গ্রহণ করবেন নাকি ভালো- সেটা নির্ভর করবে আপনার ওপর। সুন্দর জীবন গঠনের জন্য সঠিক সময়ে সঠিক কাজ করতে হবে। সবসময় সময়ের গুরুত্ব দিতে হবে। ডিজিটাল ডিভাইসে আমাদের যতটুকু প্রয়োজন ঠিক ততটুকুই সময় দেয়া উচিত।

সাকিবুল হাছান : শিক্ষার্থী, ঢাকা কলেজ। [email protected]