×

জাতীয়

জিয়াউর রহমানের কবর অপসারণে মানববন্ধন

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৮ নভেম্বর ২০২২, ০৫:০৮ পিএম

জিয়াউর রহমানের কবর অপসারণে মানববন্ধন

ছবি: বাসস

জিয়াউর রহমানের কবর অপসারণে মানববন্ধন

ছবি: বাসস

জিয়াউর রহমানের কবর অপসারণে মানববন্ধন

ছবি: বাসস

সংসদ ভবন এলাকা চন্দ্রিমা উদ্যান থেকে সাবেক সামরিক শাসক জিয়াউর রহমানের কবর সরানোর দাবি জানিয়েছে ‘মায়ের কান্না’ নামের একটি সংগঠন। মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) চন্দ্রিমা উদ্যানে অনুষ্ঠিত এক মানববন্ধনে সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয়, অবিলম্বের জিয়াউর রহমানের কবর সংসদ ভবন এলাকা চন্দ্রিমা উদ্যান থেকে সরানো না হলে- তারা নিজেরাই এই কবর অপসারনের উদ্যোগ নেবেন।

মানববন্ধনে ১৯৭৭ সালের ২ অক্টোবর সেনা ও বিমান বাহিনীর সদস্যদের ফাঁসি দেয়ার দায়ে জিয়াউর রহমানের মরনোত্তর বিচারও দাবি করেছেন তাদের পরিবার। অন্যথায় নিজেরাই অপসারণের হুঁশিয়ারি দেন।

তারা বলেন, ওই সময় বিদ্রোহ দমনের নামে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে সামরিক বাহিনীর প্রায় দেড় হাজার সদস্যকে অন্যায়ভাবে ফাঁসিসহ নানা দন্ড দেয়া হয়েছিল। ইতিহাসে এটি ন্যাক্কারজনক ঘটনা। নিজের ক্ষমতা পাকাপোক্ত করতে জিয়াউর রহমান এই হত্যাকান্ড চালান বলে উল্লেখ করেন সেনা ও বিমান বাহিনীর সদস্যদের স্বজনরা।

স্বজনরা বলেন, কাউকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে, কাউকে কোনো ধরনের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে জিয়াউর রহমান দন্ড কার্যকর শুরু করেন। বেছে বেছে মুক্তিযোদ্ধা সৈনিকদেরই ফাঁসি কার্যকর করেন সবার আগে। এতদিন পরও স্বজনের কবরের সন্ধান না পাওয়ায় ক্ষোভ জানান দন্ড কার্যকর হওয়াদের স্ত্রী, সন্তানরা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে স্বামী, বাবা হত্যার বিচারের পাশাপাশি এমন হত্যাকান্ডের অপরাধে জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর বিচার দাবি করেন স্বজনরা।

[caption id="attachment_381276" align="aligncenter" width="1195"] ছবি: বাসস[/caption]

দন্ড কার্যকর হওয়াদের স্বজনরা বলেন, তথাকথিত বিদ্রোহ দমনের নামে জিয়াউর রহমান একদিনের সামরিক আদালতে বিচার করে সেই রাতেই ফাঁসি সম্পন্ন করতেন ঢাকা, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, রংপুর, যশোর ও বগুড়া কেন্দ্রীয় কারাগারে। রাতের আঁধারে কারফিউ দিয়ে ফাঁসি কার্যকর করা হতো। কোন প্রকার ধর্মীয় সৎকার ছাড়াই লাশগুলো ঢাকার আজিমপুর কবরস্থানে, কুমিল্লার টিক্কারচর কবরস্থানে মাটিচাপা দেয়া হয়। সেনাশাসক জেনারেল জিয়াউর রহমানের নির্দেশে গঠিত বিশেষ সামরিক ট্রাইব্যুনালের কথিত বিচারে ফাঁসি হওয়া ১৯৩ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া যায়। কিন্তু ওই ঘটনার জেরে মৃতের সংখ্যা ছিল ১ হাজার ১৪৩ জন, তেমনি কারাদন্ড ভোগ করেছিলেন সেনা ও বিমান বাহিনীর আড়াই হাজার সদস্য।

মানববন্ধনে উপস্থিত বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দীন চৌধুরী মানিক বলেন, ‘জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানের চর হিসেবে কাজ করেছেন। জিয়া মূলত ভারত গিয়েছিল পাকিস্তানের চর হিসেবে। সে কারণে যখনই সুযোগ পেয়েছে, তখনই পাকিস্তানীদের নির্দেশে মুক্তিযোদ্ধাদের নির্মমভাবে হত্যা করেছে। অনেক মানুষকে বিচারের নামে প্রহসন করে হত্যা করেছেন।’

তিনি বলেন, জিয়া যে দলটি গড়ে তুলেছিল তার ব্যানারে রাজনীতি করার কারো অধিকার নেই। জামায়াত ও বিএনপির মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। এ দুটি দল স্বাধীনতা বিরোধী সংগঠন হিসেবে পরিচিত। বিএনপি’কে বিলুপ্তি করার দাবি জানান তিনি।

[caption id="attachment_381277" align="aligncenter" width="1184"] ছবি: বাসস[/caption]

নিহত কর্নেল নাজমুল হুদার সন্তান সংসদ সদস্য নাহিদা ইজাহার খান বলেন, ‘৪৭ বছর আগে জিয়া নির্মমভাবে আমাদের বাবাকে হত্যা করেছে। একজন খুনির মরদেহ সংসদ ভবনের মতো পবিত্র এলাকায় থাকতে পারে না। জিয়াসহ সব যুদ্ধাপরাধীদের কবর এখান থেকে সরিয়ে ফেলতে হবে। পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্থদের সরকারিভাবে আর্থিক সহায়তা দেয়ার জোর দাবি জানান তিনি। ক্ষতিগ্রস্থদের সহায়তা ও খুনিদের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়।

মানববন্ধনে আরও উপস্থিত ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর জেনারেল হেলাল মোর্শেদ খান বীরবিক্রম, শহীদ মেজর জেনারেল খালেদ মোশারফের কন্যা মাহজাবিন খালেদসহ ১৯৭৭ সালে গণ ফাঁসির শিক্ষার স্বীকার ও বিমানবাহিনীর সদস্যদের সন্তান ও পরিবারের সদস্যরা।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App