×

জাতীয়

জিএম কাদেরের বিরুদ্ধে মামলা খারিজের আবেদন

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৮ নভেম্বর ২০২২, ০১:৫১ পিএম

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের বিরুদ্ধে পার্টির বহিস্কৃত নেতা অ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধার করা মামলা খারিজের আবেদন করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (৮ নভেম্বর) ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ মাসুদুল হকের আদালতে শুনানিতে এ আবেদন করেন জিএম কাদেরের আইনজীবীরা। এ বিষয়ে প্রাথমিক শুনানি নিয়ে উভয় পক্ষের উপস্থিতিতে আবেদনের ওপর আগামী বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর) শুনানির পরবর্তী দিন ধার্য করেছেন আদালত। এছাড়া ওইদিন একই মামলায় জি এম কাদেরের বিরুদ্ধে ‘দলীয় কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা’ বাতিলের আবেদনের ওপর অধিকতর শুনানি হবে।

এদিন শুনানিতে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম মেম্বার শেখ সিরাজুল ইসলাম জিএম কাদেরের পক্ষে বলেন, বাদী জিয়াউল হক মৃধার মামলায় জাতীয় পার্টির উপদেষ্টা পরিচয় দিয়েছেন। আসলে জাতীয় পার্টিতে এমন পদ নেই। আছে চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা। বাদী মিথ্যা তথ্য দিয়ে ও আদালতকে ভুল বুঝিয়ে নিষেধাজ্ঞার আদেশ নিয়েছেন। জিএম কাদের দলের চেয়ারম্যানের পাশাপাশি সংসদ সদস্য ও জাতীয় সংসদে বিরোধী দলীয় উপনেতা। আদালতের এই আদেশের ফলে তার দলীয়, রাষ্ট্রীয় কাজ ব্যাহত হচ্ছে৷ এ আদেশের ফলে বিশৃঙ্খলার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে৷ তাই জিএম কাদেরের বিরুদ্ধে মামলা খারিজের আবেদন দাখিল করেন আইনজীবী।

শুনানি শেষে কাদেরের আইনজীবী কলিমুল্লাহ মজুমদার ভোরের কাগজকে বলেন, জিএম কাদেরের বিরুদ্ধে ‘দলীয় কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা’ বাতিলে আমরা গত ৬ নভেম্বর আদালতে আবেদন করেছিলাম। আজ এটার শুনানি করতে গেলে আগামী বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর) দিন ধার্য করেন আদালত। এছাড়া এদিন এই মামলাটি খারিজের আবেদন করেছি। এবিষয়েও বৃহস্পতিবার শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে। আশা করছি মামলা খারিজ হয়ে যাবে। কারণ জি এম কাদের সংসদের বিরোধী দলীয় উপনেতা ও বৃহৎ একটি পার্টির চেয়ারম্যান বটে।

এর আগে, গত ৪ অক্টোবর জাপার বহিস্কৃত নেতা জিয়াউল হক মৃধা জি এম কাদেরকে জাপার চেয়ারম্যান হিসেবে অবৈধ ঘোষণার ডিক্রি চেয়ে আদালতে মামলা করেন। আদালত আসামির বিরুদ্ধে কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করেন। তবে জিএম কাদের আদালতে হাজির না হওয়ায় গত ৩০ অক্টোবর পার্টির বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও কার্যক্রম চালানোর ক্ষেত্রে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আদেশ দেন।

এছাড়া, একই অভিযোগে জাপার সাবেক মহাসচিব মশিউর রহমান রাঙ্গা গত ২৩ অক্টোবর জি এম কাদেরকে চেয়ারম্যান হিসেবে বেআইনি ঘোষণার ডিক্রি চেয়ে আরেকটি মামলা করেন। এ মামলার জবাব দাখিলের জন্য আগামীকাল (৯ নভেম্বর) দিন ধার্য রয়েছে।

অন্যদিকে, ওই দুই মামলায় জিয়াউল হক ও মসিউর রহমান রাঙ্গা দুজনেই দাবি করেন, ২০১৯ সালের ১৪ জুলাই জাপার প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মৃত্যুর ছয় মাস আগে ১ জানুয়ারি জিএম কাদের তার বড় ভাই এরশাদকে ভুল বুঝিয়ে ‘জাতীয় পার্টির জন্য ভবিষ্যৎ নির্দেশনা’ শিরোনামে একটি চিঠিতে স্বাক্ষর করান। এরপর জি এম কাদের প্রথমে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান, পরে চেয়ারম্যান হন, যা ছিল গঠনতন্ত্রের পরিপন্থী।

এ নিয়ে দলের ভেতরে বিশৃঙ্খলা দেখা দিলে এরশাদ ২০১৯ সালের ২২ মার্চ জি এম কাদেরকে কো-চেয়ারম্যানের পদ থেকে অব্যাহতি দেন। ৪ মে পুনরায় তাঁকে জাপার ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করেন। তখন এরশাদ গুরুতর অসুস্থ থাকায় তিনি স্বাভাবিক বিবেচনা প্রয়োগে সক্ষম ছিলেন না বলে মামলায় দাবি করা হয়েছে। এরশাদের মৃত্যুর পর ২০১৯ সালের ১৮ জুলাই সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে নিজেকে চেয়ারম্যান ঘোষণা দেন জি এম কাদের। দলের গঠনতন্ত্রে এভাবে চেয়ারম্যান ঘোষণার কোনো বিধান নেই।

মামলায় মসিউর রহমান দাবি করেন, জি এম কাদের নিজেকে জাপার চেয়ারম্যান দাবি করে ২০১৯ সালের ২৮ ডিসেম্বর ঢাকার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে সম্মেলন ডাকেন। এর আগে এ সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে ১৯ ডিসেম্বর হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন হয়। রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে জিএম কাদেরকে চেয়ারম্যান ঘোষণা কেন বেআইনি হবে না, মর্মে রুল দেন হাইকোর্ট। এটি বিচারাধীন অবস্থায় দলের কাউন্সিল করেন জিএম কাদের। সম্মেলনে দলের প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও সংসদে বিরোধী দলের নেতা রওশন এরশাদ উপস্থিত ছিলেন না।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App