×

জাতীয়

ছাত্রলীগের বয়সে ছাড় আসছে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৮ নভেম্বর ২০২২, ০৫:২৯ পিএম

ছাত্রলীগের বয়সে ছাড় আসছে

ছবি: সংগৃহীত

বয়স বাড়তে পারে দুই বছর

নিয়মিত ছাত্রদের নেতৃত্বে আনার দাবি

দরজায় কড়া নাড়ছে ছাত্রলীগের ৩০তম জাতীয় সম্মেলন। সম্মেলনকে কেন্দ্র করে ইতোমধ্যে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন ছাত্রলীগের সভাপতি সাধারণ-সম্পাদক পদপ্রত্যাশীরা। আর বিগত কয়েকটি সম্মেলনের মতো এবারও পদপ্রত্যাশীদের বয়সসীমা নিয়ে চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা।

নেতা নির্বাচনে বয়সের গঠনতান্ত্রিক বাধ্যবাধকতা থাকলেও করোনার অজুহাতে এবারও আসছে বয়সের ছাড়। তবে সাধারণ শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের একাংশের দাবি নিয়মিত শিক্ষার্থীদের হাতে যেন নেতৃত্ব দেওয়া হয়। ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, কেন্দ্রীয় কমিটির প্রাথমিক সদস্য হতে হলে তার ছাত্রত্ব থাকতে হবে। বয়স অনূর্ধ্ব ২৭ বছর হতে হবে। এই শর্তে যে কেউ ছাত্রলীগের সদস্য হতে পারে।

এই সময়ের মধ্যে কারও ছাত্রজীবনে ব্যত্যয় দেখা দিলে কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ তার সদস্যপদ বাতিল বা মেয়াদ পর্যন্ত বহাল রাখতে পারে। যদিও গঠনতন্ত্রের সুনির্দিষ্ট এই নিয়মের ব্যত্যয় ঘটেছে বিগত কয়েকটি সম্মেলনের নেতৃত্ব নির্বাচনের সময়। এছাড়া গঠনতন্ত্রে দুই বছর পরপর ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার নিয়ম রয়েছে। যদিও অধিকাংশ সময়ই এই নিয়মেরও ব্যত্যয় ঘটেছে। ফলে কোনো কমিটি আড়াই বছর আবার কোনো কমিটি তিন বছরের বেশি সময় অতিবাহিত করেছে। নিয়মের এই ব্যত্যয়ের ফলে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী বয়সের ব্যাপারেও ছাড় দিতে হয়েছে। সেক্ষেত্রে কোনো কমিটির সময় এক বছর আবার কোনো ক্ষেত্রে দুই বছর মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। নিয়মিত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বয়সের পার্থক্যের কারণে শিক্ষার্থী সংশ্লিষ্ট কর্মতৎপরতা কম দেখা গিয়েছে ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতাদের।

ছাত্রলীগের একাধিক সূত্রে জানা যায়, গত তিন সম্মেলনে ছাত্রলীগের বয়স গঠনতন্ত্রের বাইরে দু-এক বছর করে বাড়ানো হয়েছে। ২০১১ সালে সংগঠনটির ২৭তম সম্মেলনে নেতৃত্বে আসেন সভাপতি হিসাবে এইচএম বদিউজ্জামান সোহাগ এবং সাধারণ সম্পাদক হিসাবে সিদ্দিকী নাজমুল আলম। এর আগে ২০০৬ থেকে ২০১১ সালে সভাপতি মাহমুদ হাসান রিপন ও সাধারণ সম্পাদক ছিলেন মাহফুজুল হায়দার চৌধুরী রোটন। সে সময় বিএনপি এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় ছিল। সেই হিসাবে ২০১১ সালের সম্মেলনে বয়স ধরা হয় ২৯ বছর। এরপর ২৮তম সম্মেলনে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হন যথাক্রমে সাইফুর রহমান সোহাগ ও এসএম জাকির হোসেন। সেই সম্মেলনে বয়স করা হয় ২৯ বছর।

এদিকে ছাত্রলীগের পদপ্রত্যাশীদের বড় অংশের বয়স গঠনতন্ত্র অনুযায়ী মেয়াদোত্তীর্ণ। যদিও পুরোনো প্রচলন অনুযায়ী দু-এক বছর বাড়বে-এই আশায় অনেকেই প্রার্থী হয়েছেন বলে জানা যায়। তাদের একটি অংশ বয়সের বিষয়টি নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন। নিয়মানুযায়ী, ২৯ বছর অর্থাৎ ২৮ বছর ৩৬৪ দিন এবং ২৮ বছর অর্থাৎ ২৭ বছর ৩৬৪ দিন। অথচ এই বিষয়টিকে তারা আরও এক বছর বাড়িয়ে ২৯ বছর মানে-২৯ বছর ৩৬৪ দিন এবং ২৮ বছর মানে-২৮ বছর ৩৬৪ দিন বলে অপপ্রচার করছেন।

এ বিষয়ে ছাত্রলীগের দায়িত্বে থাকা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক গণমাধ্যমকে বলেন, বয়স নিয়ে আমাদের প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে। করোনার কারণে আমাদের অ্যাক্টিভিটি কার্যক্রম ভালোভাবে ছিল না। ছেলেমেয়েদের ক্লাস-পরীক্ষাও নিয়মিত হয়নি। সেই বিবেচনা থেকে আগে আমাদের পদপ্রত্যাশীদের বয়স ছিল ২৭ বছর পরে এটাকে ২৯ বছর করা হয়েছে। এখন এক বছর বা দুই বছর বাড়িয়ে দেওয়ার একটা সম্ভাবনা আছে। তবে এখনো এটা চূড়ান্ত হয়নি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ৩০তম সম্মেলনের এক পদপ্রত্যাশী বলেন, সাধারণ শিক্ষার্থীদের সংগঠন। তাই নেতৃত্ব নির্বাচনের সময় অবশ্যই তার বয়স ও ছাত্রত্ব বিবেচনায় নেওয়া উচিত। কারণ ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতাদের যদি বয়সের কারণে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ে তাহলে তারা সংগঠনের মূল লক্ষ্য অর্জন করতে পারবে না। আর যাদের বয়স বেশি তাদের জন্য তো যুবলীগের মতো সংগঠনে রাজনীতি করার সুযোগ রয়েছেই।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App