×

সারাদেশ

পানির অভাবে বোরো জমির কৃষকরা দুশ্চিন্তায়

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৫ নভেম্বর ২০২২, ০১:৩৪ পিএম

পানির অভাবে বোরো জমির কৃষকরা দুশ্চিন্তায়
পানির অভাবে বোরো জমির কৃষকরা দুশ্চিন্তায়

সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জে জাইর হাওরে বাঁধ কেটে মাছ ধরায় ৩০০ একর বোরো জমির চাষাবাদ নিয়ে উদ্বিগ্ন কৃষকরা। ছবি: ভোরের কাগজ

সুনামগঞ্জ জেলার শান্তিগঞ্জ উপজেলায় পিঠাপশী গ্রামের পশ্চিমে জাইর হাওরের বন হাইর রাতের আঁধারে বাঁধ কেটে পানি শুকিয়ে হাওরের মাছ ধরার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে পানির অভাবে ৩০০ একর বোরো জমি চাষাবাদ নিয়ে দুশ্চিতায় পড়েছেন কৃষকেরা। ফলে প্রায় দেড় কোটি টাকার বোরো ফসল থেকে বঞ্চিত হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।

কৃষকদের অভিযোগ, শান্তিগঞ্জ উপজেলার পিঠাপশী গ্রামের পশ্চিমে জাইর হাওরের বন হাইর বাঁধটি প্রতি বছর পিঠাপশী গ্রামবাসীর অর্থায়নে মেরামত করে সেচ মৌসুমের জন্য হাওরের পানি সংরক্ষণ করে আসছেন। চলতি বছর হাওরে বোরো জমি চাষাবাদের কাজ শুরু করেছেন স্থানীয় বর্গাচাষী, কৃষক ও গৃহস্থরা।

বুধবার (২ নভেম্বর) ভোর রাতে স্থানীয় ঘোড়াডুম্বুর গ্রামের প্রভাবশালী মৃত আদরিছ আলীর ছেলে আকিকুর রহমান আকিকসহ তাদের গ্রামের আরো ১০-১২ জন মিলে জাইর হাওরে মাছ ধরার জন্য পানি সংরক্ষণের জন্য করা বন হাইর বাঁধটি কেটে হাওরের পানি শুকিয়ে পার্শ্ববর্তী বোঘলা নদীতে ফেলে দেয়। এতে পিঠাপশী গ্রামের প্রায় ৫০০ কৃষক পরিবারের লোকজনদের ৩০০ একর বোর জমি পানির অভাবে অনাবাদী হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এতে গ্রামবাসী প্রায় দেড় কোটি টাকার বোরো ফসল থেকে বঞ্চিত হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। প্রশাসনিকভাবে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা না হলেও চলতি বছর বোরো ধানের চারা চাষাবাদ থেকে বঞ্চিত হবেন স্থানীয় কৃষকরা।

পিঠাপশী গ্রামের ষাটোর্ধ্ব কৃষক নায়েব আলী বলেন, হাওরে আমার ৩০ কেদার জমি রয়েছে। মাছ ধরার জন্য গ্রামের প্রভাবশালী ঘোড়াডুম্বুর গ্রামের আকিকুর রহমান আকিক সহ তার লোকজন পাশের গ্রাম থেকে এসে আমাদের পানি রক্ষার জন্য করা বাঁধ কেটে দিয়েছে এবং মাছ ধরেছে। এখন আমাদের জমিতে সেচ করার মতো পানি না থাকায় পানির অভাবে আমাদের হাওরের বোর জমি চাষাবাদ করা অসম্ভব হয়ে দাড়িয়েছে।

পিঠাপশী গ্রামের গৃহস্থ ৭০ কেদার জমির গৃহস্থ ইলিয়াছ মিয়া বলেন, আমাদের হাওরের অধিকাংশ জমি সাধারণ কৃষক ও বর্গা চাষীরা চাষাবাদ করিয়া থাকেন। আমিও আমার অধিকাংশ জমি বর্গা চাষীদের দিয়া চাষাবাদ করাই। এখন পানির অভাবে জমি চাষাবাদ করা প্রায় অসম্ভব। পার্শ্ববর্তী বোঘলা নদী থেকে পানি আনা সম্ভব হলেও অতিরিক্ত অর্থ ও পরিশ্রম দুটোই করতে হবে।

পিঠাপই গ্রামের কৃষক ও সাবেক চেয়ারম্যান মো. আক্তার হোসেন বলেন, আমি নিজেও একজন কৃষক এবং স্থানীয় হাওরে প্রায় ৩০০ একর জমি রয়েছে। বেশিরভাগ জমি স্থানীয় হতদরিদ্র গ্রামের লোকজন বর্গা চাষি হিসাবে চাষেবাস করেন। এখন প্রভাবশালীরা পানি শুকিয়ে মাছ ধরার কারণে কৃষকদের বোরো জমি চাষাবাদ বিঘ্নিত হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

শান্তিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আনোয়ার উজ জামান বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বাঁধটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাঁধ নয়, একটি গ্রামবাসীর তৈরী করা বাঁধ। তাই বিষয়টি শান্তিগঞ্জ থানা পুলিশকে আইনানূগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা জন্য বলেছি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App