নগরবাসীর প্রতি মেয়র আতিক
ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় ডিএনসিসি কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এটি সবার জন্য উন্মুক্ত। তাই নগরবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, ডিএনসিসি হাসপাতালে পর্যাপ্ত বেডের ব্যবস্থা আছে। ডেঙ্গু আক্রান্ত হলে আতঙ্কিত না হয়ে ডিএনসিসি কোভিড হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসুন।
বৃহস্পতিবার (৩ নভেম্বর) দুপুরে চলমান ডেঙ্গু পরিস্থিতিতে ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসা দিতে জন্য মহাখালীতে ডিএনসিসির কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতাল পরিবর্দশনকালে এ কথা বলেন ডিএনসিসি মেয়র। পরিদর্শনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় (এলজিইআরডি) বিষয়কমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। স্থানীয় সরকার মন্ত্রী ও ডিএনসিসি মেয়র শুরুতেই হাসপাতালটি ঘুরে দেখেন। ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের পাশে গিয়ে তাদের সাথে কথা বলেন। ডেঙ্গু রোগীদের খোঁজখবর নেন।
সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে ডিএনসিসি মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, করোনা মহামারিকালীন মানুষকে চিকিৎসা দিতে আমরা ডিএনসিসির মার্কেটকে কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে রূপান্তর করি। মার্কেট থেকে আমরা ২শ কোটি টাকার বেশি রাজস্ব আহরণ করতে পারতাম। টাকার দিকে না তাকিয়ে মানুষের সেবার দিকে গুরুত্ব দিয়ে ২৫৮টি দোকানের বরাদ্দ বাতিল করে দেই। আমরা এক হাজার বেড সম্পন্ন হাসপাতালটি নির্মাণ করি। এখানে ২১২টি আইসিও বেড রয়েছে। করোনা রোগীর সংখ্যা এখন অনেক কম। আমরা এই হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসা দেয়া শুরু করেছি।
মেয়র আরও বলেন, জনগণের চিকিৎসা সেবা বাড়াতে ডিএনসিসি এলাকায় ৫৪টি কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণ করা হবে। ডিএনসিসি কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালকে জেনারেল হাসপাতালে রুপান্তর করা হবে। ৫৪টি ক্লিনিকে জনসাধারণ প্রাথমিক চিকিৎসা গ্রহণ করবে। উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন হলে কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে ডিএনসসি জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য প্রেরণ করা হবে। এশিয়ান ইনফ্র্যাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকের (এআইআইবি) সঙ্গে প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে। ৫৪টি ক্লিনিক নির্মাণে অর্থায়ন করতে রাজি হয়েছে এআইআইবি। প্রকল্প প্রণয়ন করে দ্রুত বাস্তবায়ন করা হবে।
মেয়র বলেন, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে জনগণের সচেতনতা সবেচেয়ে বেশি প্রয়োজন। আমরা সিটি কর্পোরেশন থেকে নিয়মিত কার্যক্রম পরিচালনা করছি। অভিযান পরিচালনা করছি। দেখা যাচ্ছে, কিছু কিছু বাড়িতে বা নির্মাণাধীন ভবনে লার্ভা পাওয়ায় জরিমানা করে আসার কিছুদিন পর অভিযান চালালে আবারও লার্ভা পাওয়া যাচ্ছে। এখন থেকে আর ছাড় নেই। কোন ভবনে দ্বিতীয়বার অভিযানে লার্ভা পেলে নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয়া হবে। এক প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, ডেঙ্গু পুরপুরি নিয়ন্ত্রণে না আসা পর্যন্ত ডিএনসিসির প্রতিটি ওয়ার্ডে সচেতনতা কার্যক্রম ও অভিযান চলমান থাকবে।
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিষয়কমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেন, ডিএনসিসি ডেডিকেটেড কোভিড হাসপাতাল এখন ডেঙ্গু চিকিৎসার জন্য তৈরি রয়েছে। ১০০০ শয্যার মধ্যে ছয়জন কোডিভ রোগী আলাদাভাবে সেবা নিচ্ছে। এ হাসপাতালে ১০৫ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি রয়েছে এবং আরো প্রায় ৪০০ শয্যা ডেঙ্গু চিকিৎসার জন্য প্রস্তুত রয়েছে। ডেঙ্গুর চিকিৎসায় কোনো ঘাটতি নেই। ডেঙ্গু পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য সরকার আন্তরিকভাবে কাজ করছে। জনসাধারণের অংশগ্রহণ ও সচেতনতা ছাড়া ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রন করা কঠিন। সবাই মিলে একসাথে ডেঙ্গু মোকাবিলায় কাজ করতে হবে।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রী আরও বলেন, সিটি কর্পোরেশনের মেয়রগণ এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে সবধরনের ব্যবস্থা নিয়েছেন। মন্ত্রণালয় থেকে অর্থ-বরাদ্দ, জনবল, অভিযান পরিচালনার জন্য ম্যাজিস্ট্রেটসহ যখন যা চেয়েছেন তা-ই সরবরাহ করা হয়েছে। মানুষকে সচেতন করার জন্য যা যা করণীয় তার সব করা হয়েছে। টিভিসি তৈরি করা হয়েছে। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে নানা কর্মসূচি চলমান থাকবে।
পরিদর্শনে অন্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. সেলিম রেজা, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগে. জেনা. মো. জোবায়দুর রহমান, ডিএনসিসি কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগে. জেনা. একেএম শফিকুর রহমান এবং ডিএনসিসির সচিব মোহাম্মদ মাসুদ আলম ছিদ্দিক প্রমুখ।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।