×

জাতীয়

সংসদেও ওবায়দুল কাদের বললেন, ‘খেলা হবে’

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০২ নভেম্বর ২০২২, ০৯:৪৬ পিএম

সংসদেও ওবায়দুল কাদের বললেন, ‘খেলা হবে’

ছবি: সংগৃহীত

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী সম্প্রতি প্রায় রাজনৈতিক কর্মসূচিতে বলে আসছেন ‘খেলা হবে’। এবার আজ জাতীয় সংসদে বিএনপি এমপি হারুনের প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে বললেন ‘খেলা হবে’ তবে আন্দোলনে, নির্বাচনে।

বুধবার (২ নভেম্বর) জাতীয় সংসদের অধিবেশনে তিনি বলেন, আগুন সন্ত্রাসী, পেট্রোল বোমা সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে খেলা হবে। এর আগে সংসদের অধিবেশনে পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ ও সড়ক পরিবহন মন্ত্রী এ বিষয়টি বক্তব্য পাল্টাপাল্টি বক্তব্য। বিএনপি হারুন খেলা বন্ধ করতে বললে ওবায়দুল কাদের খেলা চালু রাখার কথা বলেন।

হারুনুর রশীদ জন দুর্ভোগের কথা তুলে সরকারের সমালোচনা করেন। জনদুর্ভোগ থেকে জনঅসন্তোষ তৈরি হচ্ছে বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, দেশ এখন জন দুর্ভোগের দেশে পরিণত হয়েছে। এই জন অসন্তোষকে লাঘব করার সরকারের কোন পদক্ষেপ আছে বলে মনে হয় না। বিমানবন্দর সড়কে যানজটের কারণে গত ২৬ অক্টোবর সকালে কুড়িল ফ্লাইওভার থেকে নেমে বিমানবন্দর পর্যনাত পাঁয়ে হেঁটে যেতে হয়েছে। বিমানের নির্ধারিত সময়ের আধঘন্টা পরে পৌঁছাই। পথে শত শত বিমানযাত্রীকে বাচ্চা-কাচ্চা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে। আর সরকারকে গালিগালাজ করছে। এটা একদিনের সমস্যা নয়। ঢাকা-গাজীপুর সড়ক প্রতিনিয়ত জনদুর্ভোগ হচ্ছে। এ সমস্যা সমাধানে আন্তর্জাতিক বিমান যাত্রীদের জন্য যথাযথ ট্রাফিকিং ব্যবস্থাসহ আলাদা প্যাসেজ তৈরির করতে হবে। বিমানবন্দরে তল্লাশির নামে যাত্রীদের হয়রানি করা হয় বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

সড়ক পরিবহন মন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, যোগাযোগ মন্ত্রী প্রায়ই বলছেন ‘খেলা হবে’। আগামী ১০ ডিসেম্বর ‘খেলা হবে’। আমরা এমন খেলা দেখতে চাচ্ছি না যে জন দুর্ভোগে মানুষ পড়েন। এ দেশে দ্রব্য মূল্য ও বিদ্যুতে নিয়ে গত কয়েক মাস যাবৎ সভা সমাবেশ করছে। আপনি কেন পরিবহন বন্ধ করছেন? স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে প্রশ্ন করলে বলেন, কী কারণে পরিবহন বন্ধ হয়েছে বতে পারব না। দেশ চালাচ্ছেন কেন আপনারা? একটা নয়, দুটো নয়, একের পর এক। আগামী ৫ তারিখে বরিশাল সমাবেশ হবে। লঞ্চ বন্ধ, বাস বন্ধ, ত্রি-হুইলার বন্ধ। ট্রেন বন্ধ। সবকিছু বন্ধ। এর ফলশ্রুতিতে যে জন অসন্তোষ তৈরি হচ্ছে তা কল্পনা করা যায় না। যোগাযোগ মন্ত্রী আছেন দয়া করে দুর্ভোগ কমাতে কার্যকর পদক্ষেপ নেন। জন দুর্ভোগ আর বাড়িয়েন না। জনদুর্ভোগে যে জন অন্তোষ তৈরি হচ্ছে তাতে ভয়াবহ অবস্থা তৈরি হবে। মনে করি সরকার এই বিষয়ে সরকার পদক্ষেপ নেবে। সরকারকে বলবো রাজনৈতিক সাংস্কৃতিতে ফিরে আসুন। দীর্ঘদিন যাবৎ বিরোধী দলকে যে সভা সমাবেশ করতে দেন না। সেই জায়গায় একটি শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ফিরিয়ে আনুন। আমি মনে করি খেলা বন্ধ করুন। খেলা বন্ধ করে সত্যিকার অর্থে দেশকে একটি গণতান্ত্রিক পথে নিয়ে যাওয়ার পদক্ষেপ গ্রহণ করুন।

পরে পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিরোধী দল হলেই বিরোধীতার খাতিয়ে বিরোধীতা করা কালচারে পরিণত হয়েছে। গাজীপুরের যে প্রকল্প—পদ্মা সেতু হয়ে গেছে, মেট্রো রেল সামনে হচ্ছে। এলিভেটেড এগিয়ে গেছে। কর্ণফুলী টনেল রেডি। কী চান আর? একটা সরকার এতগুলি প্রজেক্ট। যেদিকে তাকান ফ্লাইওভার, আন্ডারপাস ওভার পাস। আপনাদের সময়য় কী ছিলো? জিরো। ওই জিরোর বিরুদ্ধে খেলা হবে। ওই জিরো যে করছেন! ভোগান্তিতে রাখছেন লাখো কোটি মানুষকে। সেটিই খেলা হবে।

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, গাজীপুরে পানির লাইন খুবই খারাপ। আমি নিজেও ভোগান্তি। গলার কাটাও বলেছি। স্বীকার করেছি। এইসব স্বীকার করার কালচার আপনাদের মধ্যে নেই। প্রকাশ্যে বলেছি প্রকল্পটা ডিজাইনে একটু ক্রুটি ছিলো। সে কারণে প্রব্লেম হয়েছে। কিন্তু আজকে যান। পরিস্থিতি স্বাভাবিক। ওই রাস্তা এখন স্বাভাবিক। ৬ তারিখে ইনকামিংটা খুলে দেবো। না জেনে কথা বলবেন না। এত কাজ সরকার করছে-একটাতে ভুল ত্রুটি হতে পারে। আমরা তো স্বীকার করেছি। অস্বীকার করিনি।

বিএনপির জনসভাকে কেন্দ্র করে পবিহন ধর্মঘট প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, বাস ধর্মঘট কেন হয়েছে শিমুল বিশ্বাসকে (বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান) জিজ্ঞেস করুন। কেন মন্ত্রী বলবে? সে পরিবহনের নেতা। সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট। সেক্রেটারী বাসদ। প্রেসিডেন্ট আওয়ামী লীগ (শাজাহান খান)। আর মালিক সমিতির প্রেসিডেন্ট রাঙা, জাতীয় পার্টি। সেক্রেটারী আওয়ামী লীগ-এনায়েত। ভাইস প্রেসিডেন্ট শ্রমিক ফেডারেশনের শিমুল বিশ্বাস। সেকোন দলের? সে একটা স্টেটমেন্ট দেয় না কেন? সে কী বিএনপি? না কী অন্য কোন দল? আপনাদের দলের নেতা। তাকে জিজ্ঞেস করেন। হাসেন কেন? আগুনে বাস পোড়ায়ছে তো? আগুনে বাস পোড়ালে ভালো লাগে। বাসওয়ালারা এখন আর বিশ্বাস করে না। এরা বিএনপিকে দেখলেই বলে আগুন নিয়ে আসছে। বিএনপিকে দেখলেই মনে করে পেট্রোল বোমা। বিএনপিকে দেখলেই মনে করে ককটেল। এখন আবার পতাকা! লাঠিসোটার সাথে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা।

তিনি আরও বলেন, খেলা অব্যাহত থাকার, ‘খেলা হবে’। এর বিরুদ্ধেই খেলা হবে। খেলা হবে। আমি বলছি খেলা হবে-খুনের রাজনীতির বিরুদ্ধে। খেলা হবে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে। খেলা হবে আগুন সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে। খেলা হবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে। খেলা হবে লুটপাটের বিরুদ্ধে। খারাপ কী বলেছি?

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App