×

সম্পাদকীয়

রাজস্ব আয় বাড়ানোর উদ্যোগ : প্রশাসনে সংস্কার সময়োপযোগী

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ৩০ অক্টোবর ২০২২, ১২:০৬ এএম

টানা লকডাউন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ভ্যাট আদায়ে বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ আরো দীর্ঘ হলে বাণিজ্যে স্থবিরতা দেখা দেয়ায় রাজস্ব ঘাটতি আরো বাড়বে বলে আশঙ্কা রয়েছে। রাজস্ব আদায় বাড়াতে রাজস্ব প্রশাসনে সংস্কারের কথা আসছে। অর্থনৈতিক সংকট কাটাতে এবং আইএমএফের ঋণের শর্ত পরিপালন করতে হলে কর জিডিপি বাড়াতে হবে। আর সংস্কার হলে রাজস্ব বাড়বে বলে অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন। এমন অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে রাজস্ব আদায় বাড়াতে উদ্যোগ নিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এ লক্ষ্যে আজ রবিবার শুল্ক, মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বিভাগের সব কমিশনারকে নিয়ে বৈঠকে বসছেন এনবিআরের চেয়ারম্যানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। বৈঠকে চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকের (জুলাই-সেপ্টেম্বর) রাজস্ব আদায় পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হবে। এ ছাড়া পরবর্তী তিনটি প্রান্তিকে কীভাবে রাজস্ব আদায় বাড়ানো যায়, তা নিয়ে দিকনির্দেশনাও দেয়া হতে পারে। বাস্তবায়ন কতটুকু হয় সেটাই দেখার বিষয়। বৈশ্বিক এ সংকটের মানুষের আয়-উপার্জন কম। ব্যবসা-বাণিজ্য কমে গেছে। আমদানিও কম। তাহলে ট্যাক্স আসবে কোত্থেকে? দোকানপাটে বিক্রি নেই, ফলে ভ্যাট আদায়ও কম। আমরা অবশ্য জানি, বছরের শেষ দিকে সাধারণত রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি পায়। এবার সে লক্ষ্যমাত্রা কতটুকু পূরণ হবে? জানা গেছে, চলতি অর্থবছর এনবিআরের জন্য ৩ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এনবিআরের সাময়িক হিসাবে, চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) শুল্ক-কর আদায়ে ঘাটতি সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা। এ সময়ে এনবিআর আদায় করেছে ৬৫ হাজার ৭৩৭ কোটি টাকা। উল্লেখিত ৩ মাসে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য ছিল ৭১ হাজার ২৫৬ কোটি টাকা। এনবিআরের সাময়িক হিসাবে, চলতি অর্থবছরের প্রথম ৩ মাসে রাজস্ব আদায়ে ১২ দশমিক ৬৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। চূড়ান্ত হিসাবে কয়েক হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায় বাড়তে পারে। বিশেষ করে ভ্যাটের রিটার্ন জমার পর ভ্যাটের পরিমাণ বাড়ে। সরকারের লক্ষ্য ছিল ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন হলে আয় বাড়বে। কিন্তু ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন হলেও লক্ষ্যমাত্রার উন্নতি নেই। এতে ভ্যাট আদায়ের যে লক্ষ্যমাত্রা ছিল তা আদায় কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে এনবিআরের জন্য। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড করের আওতা বাড়ানোসহ নানা পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। তবে এসব পরিকল্পনা খুবই শ্লথ গতির। বিনিয়োগ বাড়াতে পারলেই কেবল পরিকল্পনা বাস্তবায়ন সম্ভব। রাজস্ব আয় বাড়ানো এর শর্ত। এ ক্ষেত্রে সর্বাগ্রে দরকার করবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি। সেখানে রাজস্ব প্রদানে সেবা নিশ্চিত, অনুকূল রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং আইন-কানুন সময়োপযোগী করা গুরুত্ব পাবে। পরিকল্পনাজনিত সমস্যা তো রয়েছেই, সঙ্গে রয়েছে প্রাতিষ্ঠানিক নানা জটিলতা। আছে দুর্নীতির অভিযোগও। অটোমেশন বাস্তবায়ন হলে করদাতাদের ভোগান্তি কমবে, সেই সঙ্গে রাজস্ব আহরণ বাড়বে। ভ্যাট আদায় বাড়ানোর জন্য ভ্যাট অটোমেশনের কোনো বিকল্প নেই। এসব বিষয়ে সরকারকে আরো জোরালো ভূমিকা নিতে হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App