×

জাতীয়

পায়রা বন্দর পর্যন্ত রেলপথ করবেন প্রধানমন্ত্রী

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৭ অক্টোবর ২০২২, ০১:০৭ পিএম

ঢাকা থেকে পায়রা বন্দর পর্যন্ত রেলপথ করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি পায়রা বন্দরের ক্যাপিটাল ড্রেজিং ও আটটি জাহাজের উন্নয়ন কাজের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী। এসময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিদেশি অর্থায়নে অনেক ঝক্কি ঝামেলা পোহাতে হয়, সেজন্য আমাদের নিজের টাকা দিয়ে একটা ফান্ড তৈরি করেছি, যার নাম বাংলাদেশ ইনফ্রাস্ট্রাকচার ফর ডেভেলপমেন্ট অর্থাৎ বাংলাদেশ অবকাঠামো উন্নয়ন তহবিল। আমরা এই ফান্ড থেকেই কাজ শুরু করেছি।

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের ভৌগলিক যে অবস্থান, সেই অবস্থানকে কেন্দ্র করে এদেশের আর্থ সামাজিক অবস্থান যে দ্রুত পরিবর্তন করা সম্ভব এটা জাতির পিতা সবসময় বলতেন।’

শেখ হাসিনা বলেন, পয়রা বন্দর তৈরি করার বিষয়টি যখন বলি তখন অনেকেই বাধা দিয়েছে, বলেছে এখানে বন্দর হওয়া সম্ভব না। কারণ এখানে অনেক সিল্ট (সিল্ট হলো একটি কঠিন, ধূলিকণার মতো পলল যা পানি, বরফ এবং বায়ু পরিবহন ও জমা করে) আছে, বিশেষ করে আমাদের রামনাবাদ চ্যানেল, এখানে এতো বেশি সিল্ট যে পলি অপসারণ করা বা পরিবহন যোগাযোগের এতো বেশি সুযোগ করা যাবে না।

সাবেক নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খানকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অনেক বাধা আপত্তি অতিক্রম করে ২০১৬ সালে বন্দরের অপারেশনাল কাজ শুরু করি। ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর থেকে নিয়মিতভাবে কয়লাসহ অনেক বাণিজ্যিক জাহাজ আসতে শুরু করে এখানে। পায়রা নামটা আমরাই দেওয়া। এখানে আমরা কয়লাভিত্তিক একটা বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ শুরু করি। বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কয়লার পরিবহন দিয়ে বন্দরের কাজ শুরু হয়।’

তিনি আরো বলেন, ‘বিদেশি অর্থায়নে অনেক ঝক্কি ঝামেলা পোহাতে হয়। সে কারণে আমাদের রিজার্ভের টাকা দিয়ে একটা ফান্ড তৈরি করি। সেই ফান্ডের নামও আমি দিয়েছিলাম। বাংলাদেশ ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট ফান্ড অর্থাৎ বাংলাদেশ অবকাঠামো উন্নয়ন তহবিল। রির্জাভের টাকা দিয়েই ফান্ডটা তৈরি করে বন্দরে কাজ শুরু করি। আমরা পদ্মাসেতু নির্মাণ করেছি, এখানেও একটা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হয়েছিল। আমাদের একটা অপবাদ দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল। সেটা কিন্তু প্রমাণ করতে পারেনি। সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম পদ্মাসেতু নিজেদের অর্থায়নে নির্মাণ করব। আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহর রহমতে আমরা পদ্মা সেতু নিজস্ব অর্থায়নে করতে সক্ষম হয়েছি। আজকে বিশ্বকে দেখাতে পেরেছি, বাংলাদেশকে দাবিয়ে রাখতে পারবে না, আমরাও পারি। এটা আজকে আমরা প্রমাণ করেছি।’

নদীতে ড্রেজিং করার বিষয়টি কেউ গ্রহণই করতে চাইতো না। আমি আমার বাবার কাছ থেকে ছোটবেলায় শুনেছি, আমাদের দেশের নদীগুলো সবসময় ড্রেজিং করা দরকার। নৌ চলাচল অব্যাহত রাখার জন্য, বলেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত ২০৭টি বাণিজ্যিক জাহাজ এ বন্দরে এসেছে এবং এর মাধ্যমে ৬১৩ কোটি টাকারও বেশি রাজস্ব আয় হয়েছে। চ্যানেলের যে গভীরতা ৬.৩ মিটার ধরে রাখার জন্য ড্রেজিংয়ে কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। যা এখনও স্থিতিশীল আছে। পায়রা বন্দরের সক্ষমতাকে নতুন পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য আমরা বর্তমানে এই চ্যানেলে ক্যাপিটাল ড্রেজিংয়ের কাজ হাতে নিয়েছি। যা দেশের ইতিহাসে সর্ববৃহৎ ড্রেজিং কাজ। এর ফলে বন্দর থেকে সাগরের মধ্যে ৭৫ কিলোমিটার দীর্ঘ, ১০০ থেকে ১২৫ মিটার প্রশস্ত এবং কমবেশি ১০.৫ মিটার গভীরতার চ্যানেল সৃষ্টি হবে।

তিনি আরো বলেন, নিজেদের রির্জাভের টাকা ভবিষ্যতে আমাদের উন্নয়নের ক্ষেত্রে ব্যবহার করতে পারি। বন্দরকে আমরা লোন দিয়েছি, খুব অল্প সুদে, ঘরের টাকা ঘরেই থাকবে, শুধু এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যাবে। এটা হচ্ছে সবচেয়ে বড় কথা।

নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন পায়রা বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল সোহায়েল, নৌ-পরিবহন সচিব মোস্তফা কামাল।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App