×

বিনোদন

আব্বাসউদ্দীন গান গেয়ে যুদ্ধ করেছিলেন

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৬ অক্টোবর ২০২২, ০৮:৩৪ পিএম

আব্বাসউদ্দীন গান গেয়ে যুদ্ধ করেছিলেন

ছবি: ভোরের কাগজ

আব্বাসউদ্দীন গান গেয়ে যুদ্ধ করেছিলেন
আব্বাসউদ্দীন গান গেয়ে যুদ্ধ করেছিলেন

আব্বাসউদ্দীন ছিলেন একজন প্রতিভাবান সংগীতজ্ঞ। তার গানে জাতীয়তাবাদের চেতনা ছিল। বাংলার লোকসংগীতের প্রতি তার ছিল সীমাহীন দরদ, নিবেদন এবং গভীর সাধনা, যা তাকে মহান করেছে। তিনি ছিলেন রাজনীতিসচেতনও। ভারত ভাগের সময় গান গেয়ে তিনি যুদ্ধ করেছিলেন। সরাসরি যুদ্ধ না করলেও তিনি আন্দোলনকে বেগবান করেছিলেন।

বুধবার (২৬ অক্টোবর) বিকালে লোকসংগীত সম্রাট আব্বাসউদ্দীন আহমদ স্মরণে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে ‘আব্বাসউদ্দীন আহমদ: জীবন ও কর্ম’ শীর্ষক সেমিনার ও আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিশিষ্ট সংগীতশিল্পী অধ্যাপক ড. নাশিদ কামাল। আলোচক ছিলেন বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা ও স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী মনোরঞ্জন ঘোষাল। স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক মোঃ কামরুজ্জামান। সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর পর্ষদের সভাপতি অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। সঞ্চালনা করেন জনশিক্ষা বিভাগের কীপার শিহাব শাহরিয়ার।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি কে এম খালিদ বলেন, আব্বাসউদ্দীন ছিলেন একজন প্রতিভাবান সংগীতজ্ঞ। বাংলার লোকসংগীতের প্রতি তার যে দরদ, নিবেদন এবং গভীর সাধনা, যাকে তাকে মহান করেছে। তিনি রাজনীতিসচেতন ছিলেন। তিনি তার গানের ভক্ত আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন, ‘মুজিব, বাংলা ভাষার বিরুদ্ধে বিরাট ষড়যন্ত্র চলছে। বাংলা রাষ্ট্রভাষা না হলে বাংলার কৃষ্টি, সভ্যতা সব শেষ হয়ে যাবে। আজ যে গানকে তুমি ভালোবাস, এর মাধুর্য ও মর্যাদাও নষ্ট হয়ে যাবে। যা কিছু হোক, বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করতেই হবে।’

প্রাবন্ধিক নাশিদ কামাল দাদা আব্বাসউদ্দীন আহমদ এর স্মৃতিচারণ করে বলেন, আব্বাসউদ্দীন আহমদ ছিলেন সঙ্গীতশিল্পী, সঙ্গীত পরিচালক ও সুরকার। লেখক হিসেবেও প্রচুর খ্যাতি ছিল তার। আধুনিক গান, স্বদেশী গান, ইসলামি গান, পল্লীগীতি, উর্দুগান সবই তিনি গেয়েছেন। তবে পল্লী গানের সুর যেভাবে ফুটিয়ে তুলেছিলেন তা আজও অদ্বিতীয়। তার গাওয়া ‘ও কি গাড়িয়াল ভাই’, ‘মাঝি বাইয়া যাও রে’, ‘রমজানের ওই রোজার শেষে’, ‘তোরা দেখে যা আমিনা মায়ের কোলে’, ‘ত্রিভুবনের প্রিয় মোহাম্মদ’সহ অসংখ্য গানের সুরে আপ্লুত হয় মন। তিনি শুধু একজন সঙ্গীতশিল্পীই ছিলেন না, তার আরও অনেক গুণ ছিল। ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবনে তিনি অত্যন্ত বন্ধুবৎসল ও অমায়িক লোক ছিলেন।

আব্বাস উদ্দীনের গানে জাতীয়তাবাদের চেতনা ছিল উল্লেখ করে মনোরঞ্জন ঘোষাল বলেন, ১৯৩১ থেকে ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত সময়কালে কাজী নজরুল ইসলামের সঙ্গে প্রচুর গান গেয়েছেন। ভারত ভাগের সময় তিনি গান গেয়ে যুদ্ধ করেছিলেন। সরাসরি যুদ্ধ না করলেও সংগীতের মধ্য দিয়ে আন্দোলনকে বেগবান করেছিলেন।

আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, বাংলার গ্রামে গ্রামে আব্বাসউদ্দীন আহমেদ অনেক জনপ্রিয় ছিলেন। জনসাধারণ তার গান শোনার জন্য পাগল হয়ে যেত। তার গান ছিল বাঙালির প্রাণের গান। বাংলার মাটির সঙ্গে ছিল তার নাড়ির সম্পর্ক। আসুন আমরা তাকে বার বার স্মরণ করি এবং সৃষ্টিকর্মকে মূল্যায়ণ করি।

মোঃ কামরুজ্জামান বলেন, কিংবদন্তি লোকসঙ্গীত সম্রাট আব্বাসউদ্দীন আহমদের সঙ্গীতের সমান্তরালে বহমান ছিল তার জীবনের গতিবিধি। সুরেলা কণ্ঠের আশ্রয়ে আলোড়ন তুলেছিলেন শ্রোতার অন্তরে। আলোচনা সভা শেষে শিল্পী শ্যামল কুমার পাল এবং নাশিদ কামাল সংগীত পরিবেশন করেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App