×

জাতীয়

অপরিকল্পিতভাবে স্থাপনা হচ্ছে কার পরামর্শে?

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৬ অক্টোবর ২০২২, ০৭:৩৬ পিএম

অপরিকল্পিতভাবে স্থাপনা হচ্ছে কার পরামর্শে?
অপরিকল্পিতভাবে স্থাপনা হচ্ছে কার পরামর্শে?

ঢাকা শীর্ষক নগর কথা অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ডিএনসিসি মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম

ঢাকা শহরে উন্মুক্ত স্থানে ও গাছপালা ধ্বংস করে একের পর এক ভবন নির্মাণ, নগরে অপরিকল্পিত স্থাপনা করা হচ্ছে কার পরামর্শে হচ্ছে? এমন প্রশ্ন রেখেছেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম। তিনি বলেছেন, সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে। নগরে ভবন নির্মাণ করতে গেলে অবশ্যই সিটি কর্পোরেশনের অনুমতি নিতে হবে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কথা ভেবে সবুজ এলাকা ও উন্মুক্ত স্থান ধ্বংস করে কিছু করতে দেয়া হবে না।

বুধবার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর গুলশানে একটি হোটেলে ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ, সেন্টার ফর আরবান স্টাডিজ, ইউএন-হ্যাবিট্যাট এবং ডিএনসিসির ‘প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন প্রকল্পের সম্মিলিতভাবে আয়োজিত নিম্ন আয়ের মানুষের আবাসন ও নাগরিক সুবিধাসমূহ: প্রেক্ষিত’ ঢাকা শীর্ষক নগর কথা অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ডিএনসিসি মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম এ কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। এতে স্বাগত বক্তব্য দেন ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম রেজা, মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডিএনসিসির প্রধান পরিকল্পনাবিদ মাকসুদ হাসেম। এছাড়াও সেন্টার অফ আরবান স্টাডিজের চেয়ারম্যান অধ্যাপক নজরুল ইসলাম, জাতিসংঘ উন্নয়ন বাংলাদেশের প্রকল্প ব্যাবস্থাপক ও বিশিষ্টজন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

মেয়র বলেন, এয়ারপোর্ট সড়কে বনানী চেয়ারম্যান বাড়ির সামনে সিটি ফরেস্ট ছিল, সেটা ধ্বংস করে কেন সেতু ভবন করা হয়েছে। এর পাশে আবার বিআরটিএ ভবন করা হয়েছে। কিছুদিন আগে আবারও গাছপালা কেটে ভবন নির্মাণ করতে গেলে আমি বন্ধ করে দেই। ড্যাপের মধ্যে এবং নগর পরিকল্পনায় এই জায়গাগুলোতে যদি সিটি ফরেস্ট থাকে তাহলে ভবন ভাঙতে হবে। নগরের প্রয়োজনে, জনগনের স্বার্থে যেকোনো ভবন ভাঙতে হবে।

সব বিভাগের সাথে সমন্বয় করে কাজ করতে হবে উল্লেখ করে মেয়র আতিক বলেন, যেকোনো কাজ দেশের স্বার্থে ও দশের স্বার্থে হলে আমি আপনাদের সাথে যোগ দিবো। সুন্দর নগরায়ন করতে গেলে সবাইকে এক সঙ্গে কাজ করতে হবে। অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে হবে। মিরপুর প্যারিস রোড সংলগ্ন মাঠটি প্লট আকারে কিভাবে বরাদ্দ দেয়া হলো? ষাটের দশকে মাস্টার প্লানে ও ১৯৮৭ সালের ন্যাশনাল হাউজিং অথরিটির লেআউটেও এটি উন্মুক্ত স্থান হিসেবে দেখানো আছে। ড্যাপের নকশায়ও এটি উন্মুক্ত হিসেবে রয়েছে। এখানে কিছুতেই প্লট হতে পারে না। এসময় তিনি বর্তমান জলবায়ুর উদাহরণ টেনে বলেন, আমরা পরিবেশ ধ্বংশ করেছি বলেই পরিবেশ সেই ধ্বংশের প্রতিশোধ নিচ্ছে।

খাল উদ্ধার ও নদী বাঁচাতে হবে জানিয়ে মেয়র বলেন, ঢাকার নদী বাঁচাতে হবে আর নদী বাচাতে হলে খাল খনন করতে হবে। ঢাকার খালকে বাঁচাতে হলে সিএস দাগের মাধ্যমে সীমানা নির্ধারন করতে হবে। মহানগর জরিপ অনুসরণ করলে শহরকে বাঁচানো যাবে না। কল্যাণপুর রিটেনশন পণ্ড দখল হয়ে গেছে। এগুলো উদ্ধারে আমরা কাজ করছি। খাল উদ্ধারে সীমানা পিলার লাগানো শুরু করেছি।

মেয়র আরো বলেন, দিন দিন তাপমাত্রা বেড়ে যাচ্ছে। গাছ লাগাতে হবে। নগরবাসীকে ছাদবাগান করতে উৎসাহিত করছি। ছাদবাগান করলে ১০% ট্যাক্স রিবেট দেয়ার ব্যাবস্থা করা হবে। এই ফাইলটি মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়েছে। আশা করি দ্রুতই অনুমোদন হয়ে যাবে।

নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য সিটি কর্পোরেশন কাজ করছে উল্লেখ তিনি বলেন, হকারদের নগরের অংশ হিসেবে চিন্তা করে স্মার্ট ব্যাবস্থাপনার আওতায় আনার জন্য মিরপুর দশ নম্বরে পাইলট প্রকল্প নিয়েছি। সপ্তাহে পাঁচ দিন নির্দিষ্ট হকাররা বিকাল ৪টার পর থেকে ফুটপাতে বসছে। অন্য সময় ফুটপাতে কোন হকার বসতে পারবে না। পর্যায়ক্রমে পুরো এলাকায় এটি চালু করা হবে। হলিডে মার্কেট ও ইভিনিং মার্কেট করার পরিকল্পনাও রয়েছে।

স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেন, সবার জন্য বাস উপোযোগী দৃষ্টিনন্দন ঢাকা গড়ে তুলতে সকলকে একসাথে কাজ করতে হবে। নিম্নবিত্ত, মধ্যবিত্ত ও উচ্চবৃত্ত সকল শ্রেণির মানুষ ঢাকায় বসবাস করে। তাই সবার বিষয়কে বিবেচনায় রেখেই ঢাকাকে গড়ে তুলতে হবে। তিনি আরোও বলেন, যেকোন শহরেই সকল শ্রেণির মানুষের প্রয়োজন রয়েছে। সকল শ্রেণির মানুষের জন্য সুন্দর ও নিরাপদ জীবন যাপনের সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে।

রাজধানীতে শ্রেণিভেদে মানুষের আয়ের তারতম্য রয়েছে। পানি, গ্যাস, বিদুৎসহ অন্যান্য ইউটিলিটি সার্ভিসের মূল্য নির্ধারণে মানুষের আয়ের বিষয়কে বিবেচনায় রাখতে হবে। এজন্য জোনভিত্তিক পানি, গ্যাস, বিদ্যুৎসহ অন্যান্য ইউটিলিটি সার্ভিসের দাম নির্ধারণ করা যৌক্তিক। এসময় স্থানীয় সরকার মন্ত্রী ডিএনসিসি মেয়রকে ব্লমবার্গ ফিলানথ্রপিস অ্যাওয়ার্ড-২০২২ অর্জন করায় অভিনন্দন জানান।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App