ক্ষমতা হারানোর ভয়ে সরকারি কর্মকর্তাদের চাকরিচ্যুতি
কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২০ অক্টোবর ২০২২, ০৮:১৪ পিএম
নয়াপল্টনের সমাবেশে বক্তব্য রাখছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: ভোরের কাগজ
ক্ষমতা হারানোর ভয়ে প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তাদের সরকার চাকরি থেকে বিদায় করছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। দলটি বলছে, হাসিনা সরকার ঘাবড়ে গিয়েই ভয়ে এখন প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তাদের তারা চাকরি থেকে বিদায় দেয়া শুরু করেছে ভয়ে। তবে এভাবে শেষ রক্ষা হবে না।
সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের কয়েকজন কর্মকর্তার বাধ্যতামূলক অবসর প্রদানের সরকারি সিদ্ধান্তের প্রেক্ষাপটে বৃহস্পতিবার (২০ অক্টোবর) বিকালে নয়া পল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই অভিযোগ করেন।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালামের সভাপতিত্বে ও উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হকের সঞ্চালনায় সমাবেশে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, জয়নুল আবদিন ফারুকসহ অনেকে বক্তব্য রাখেন।
মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির উদ্যোগে সারাদেশে ধরপাকড়, মিথ্যা মামলা, গ্রেপ্তার, জামিন বাতিল করে নেতাকর্মীদের কারাগারে প্রেরণ, পুলিশি হামলা ও আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসীদের নির্যাতনের প্রতিবাদে এই সমাবেশ হয়।ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে বিএনপি ও তার অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র মিছিল নিয়ে এই সমাবেশে যোগ দিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে স্লোগান দেয়।
ফখরুল বলেন, গত পরশু খবরের কাগজে বেরিয়েছে এই যে, সরকার ঋণ নিয়ে কাজ করে, বিদেশ থেকে ধার নেয়, অন্যান্য সাহায্য সংস্থা থেকে ঋণ নেয় এখন আর শোধ করতে পারছেনা। তারপর কি হবে? সমস্ত বিদেশী ঋণ দেয়া বন্ধ করে দেবে। রিজার্ভ শূন্যের কোঠায় চলে যাচ্ছে।
সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, অত্যন্ত পরিষ্কার কথা, আপনাদের আর দেশ শাসন করার অধিকার নেই। আপনারা দুর্নীতি-দুঃশাসনের মধ্য দিয়ে আজকে দেশকে একটা ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছেন। দয়া করে সরে যান, না হলে এদেশের মানুষ কিভাবে সরাতে হয় তা জানে।
খুলনাতেও জনতার ঢল নামবে
বিএনপির মহাসচিব বলেন, চতুর্দিকে গণতান্ত্রিক আন্দোলনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। ময়মনসিংহের বিভাগীয় সমাবেশে পরিবহন বন্ধ করে দিয়েছিলো। ঠিক একইভাবে খুলনায়ও তারা দুই দিন আগে গণপরিবহন বন্ধ করে দিয়েছে। এতে করে কি লাভ হয়? মানুষ কি থেমে থাকে। মানুষ নিজে হেটে দলে দলে তারা বিভিন্নভাবে সমাবেশে উপস্থিত হয়। খুলনাতেও একই ঘটনা ঘটবে, খুলনাতেও লক্ষ লক্ষ মানুষ তাদের মতো করে সমাবেশে উপস্থিত হবে।
সরকারের নিপীড়নের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে ফখরুল বলেন, এই মিথ্যা মামলা দেয়া, অত্যাচার-নির্যাতন, পুলিশ হত্যা বন্ধ করুন। না হলে এদেশের মানুষ কোনো অত্যাচারীকে ক্ষমা করে নাই। আপনাদেরও ক্ষমা করবে না। তিনি বলেন, এই সমাবেশে রিকশা শ্রমিক, কর্মচারী ভাইয়েরা বিভিন্ন দোকান থেকে আমাদের কথা শুনছেন। তাদের কাছে একটাই প্রশ্ন যে, আজকে চালের দাম ৯০ টাকা কেনো? ১০ টাকায় চাল খাওয়াবেন, ডালের দাম বেশি কেনো, লবনের দাম বেশি কেনো, চিনির দাম বেশি কেনো? কারণ এই সরকার সর্বক্ষেত্রে ব্যর্থ হয়েছে। কারণ একটাই-লুট। লুটপাট করে করে তারা বাংলাদেশের মানুষের কাছ থেকে অর্থ-সম্পদ চুরি করে বিদেশে পাচার করেছে।
বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের প্রসঙ্গ টেনে ফখরুল বলেন, আমাদের তো জীবন লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ। প্রতিদিন ৪/৫ বার লোডশেডিং হয়। আমাদের ফ্যাক্টরিগুলো চলে না, ফ্যাক্টরিগুলো বন্ধ হয়ে গেছে। আমাদের গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি বন্ধ হচ্ছে। মালিকেরা বলছেন, এভাবে যদি চলতে থাকে, যদি বিদ্যুৎ না পাই, গ্যাস না পাই তাহলে ফ্যাক্টরি বন্ধ করে দিতে হবে। এসব ফ্যাক্টরি বন্ধ করলে হাজার হাজার শ্রমিক বেকার হয়ে যাবে।