×

জাতীয়

সমুদ্র সৈকতকে কাজে লাগাতে না পারায় হতাশ হাইকোর্ট

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৯ অক্টোবর ২০২২, ০৭:৩৯ পিএম

সমুদ্র সৈকতকে কাজে লাগাতে না পারায় হতাশ হাইকোর্ট

হাইকোর্ট

মনোমুগ্ধকর কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত কাজে লাগাতে না পারার হতাশা ব্যক্ত করেছে হাইকোর্ট। কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মামুনুর রশিদের উদ্দেশে দ্বৈত বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি জে বি এম হাসান মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেছেন, সারা পৃথিবী কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের দিকে তাকিয়ে আছে। এত সুন্দর সৈকতকে আমরা ইউটিলাইজ করতে পারছি না।

সেইসঙ্গে কক্সবাজারের সৌন্দর্য রক্ষায় ডিসির ভূমিকা নেগেটিভ বলে ভর্ৎসনা করেন এই বিচারপতি।

তিনি বলেন, কক্সবাজারের সৌন্দর্য রক্ষায় আপনার পারফরম্যান্স শুধু জিরো নয় নেগেটিভও। বারবার বলার পরও আপনি সর্বোচ্চ আদালতের আদেশ বাস্তবায়ন করেননি। আপনি সর্বোচ্চ আদালতের আদেশ মান্য করুন। আদালতের আদেশ না মানলে আপনার ক্যারিয়ার শেষ হয়ে যাবে। আপনি এই ঝুঁকিতে যাবেন না।

২০১১ সালে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে একটি রায় দিয়েছিল উচ্চ আদালত। সে সময় সৈকতের এসব স্থাপনা উচ্ছেদ হলেও পরে আবার সেসব স্থাপনা সৈকতের পাশে গড়ে উঠে। এসব স্থাপনা উচ্ছেদে গত ফেব্রুয়ারিতে থেকে আবার আইনি লড়াই শুরু করে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ। উকিল নোটিশ দেয়া হয় কক্সবাজারের জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্টদের। এতে কার্যকর কিছু না হওয়ায় আদালত অবমাননার অভিযোগ তুলে হাইকোর্টে রিট করে সংগঠনটি।

এই মামলার শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট বেঞ্চ আদালত অবমাননার রুল দেয়ার পাশাপাশি কক্সবাজারের জেলা প্রশাসককে তলব করে। নির্দেশ অনুযায়ী গতকাল বুধবার হাজির হন কক্সবাজার জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. মামুনুর রশীদ। হাজিরাকালে শুনানিতে বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের বেঞ্চে এসব মন্তব্য করেন।

শুনানির শুরুতে অ্যাডভোকেট মোমতাজ উদ্দিন ফকিরকে উদ্দেশ্য করে হাইকোর্ট বলেন, আমরা কখনো ঢালাওভাবে কারো বিরুদ্ধে কনটেম্পট করি না। তাকে অনেকবার সুযোগ দেয়া হয়েছে। ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তাকে আদালতের মনোভাব জানিয়েছেন। এরপরও তিনি সর্বোচ্চ আদালতের আদেশ মানেননি। এ কারণে তলব করেছি। ডিসির উদ্দেশে আদালত বলেন, কক্সবাজারকে সারাবিশ্বের মানুষ চেনে। আপনি সেই কক্সবাজারের ডিসি। কক্সবাজারের সৌন্দর্য রক্ষায় ভূমিকা রাখুন। আপনাকে সারাবিশ্বের মানুষ চিনবে।

গতকাল শুনানির শুরুতে মামুনুর রশীদ আইনজীবীর মাধ্যমে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চে হলফনামা আকারে এ সংক্রান্ত তথ্য সংবলিত প্রতিবেদন জমা দেন। তাতে বলা হয়, কক্সবাজারের সুগন্ধা পয়েন্ট, লাবনী ও কলাতলী সমুদ্র সৈকত এলাকায় ৪১৭টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। তবে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের চেম্বারজজ আদালতের নির্দেশনা থাকায় এখনো ২৩৩টি স্থাপনা উচ্ছেদ করা সম্ভব হয়নি।

এসব উল্লেখ করে ডিসি আদালতকে বলেন, কিছু অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেছি। এখন আদালতের আদেশ বাস্তবায়ন করব। তখন আদালত বলেন, কক্সবাজারে দায়িত্ব পেলে কাজ করার সুযোগও অনেক বেশি পাওয়া যায়। শুধু করব বললে হবে না। আপনাকে করতেই হবে। আদালতের আদেশ মানতেই হবে।

পরে আদেশ অমান্য করায় ক্ষমা প্রার্থনা করে ডিসি মামনুর রশিদ আদালতের আদেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করার অঙ্গীকার করেন। শুনানি শেষে ডিসিকে হাজিরা থেকে অব্যাহতি দিয়েছে উচ্চ আদালত। ৩০ অক্টোবরের মধ্যে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের নির্দেশনা দিয়ে পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করে আগামী ৯ নভেম্বর। সেদিনের মধ্যে অগ্রগতি প্রতিবেদন দিতে হবে ডিসিকে। আদালতে আবেদনকারী পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। কক্সবাজারের ডিসির পক্ষে ছিলেন মোমতাজ উদ্দিন ফকির।

পরে মনজিল মোরসেদ বলেন, ডেপুটি কমিশনার আদালতে হাজির হয়েছেন। আদালত বলেছেন, ৪শর বেশি স্থাপনা উচ্ছেদ করেছেন। বাকি কিছু স্থাপনার মালিকরা আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে তারা আবেদন করে বলেছিল, তারা নিজেরা ৩১ অক্টোবরের মধ্যে অপসারণ করে নেবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App