×

জাতীয়

ইভিএম নয়, সিসি ক্যামেরা বাড়ান

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৯ অক্টোবর ২০২২, ০৪:৩৬ পিএম

ইভিএম নয়, সিসি ক্যামেরা বাড়ান

সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন

জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম (ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন) ব্যবহার না করে সিসিটিভি’র ব্যবহার বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন। তিনি বলেন, ভালো হোক মন্দ হোক-ইভিএম নিয়ে অনেক বিতর্ক আছে। যে বাজেটে ১৫০ আসনের জন্য ইভিএম কেনা হবে, তার থেকে ভাল হয় যতখানি সম্ভব সিসিটিভি ব্যবহার করা।

বুধবার (১৯ অক্টোবর) নির্বাচন ভবনে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় তিনি এ পরামর্শ দেন। এছাড়া তিনি নির্বাচনের নিয়ন্ত্রণ প্রক্রিয়া পুরোপুরির ইসির হাতে রাখার পরামর্শ দেন। এক্ষেত্রে জাতীয় নির্বাচনে একটি জেলায় একাধিক রিটার্নিং অফিসার নিয়োগেরও পরামর্শ দেন তিনি।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালের সভাপতিত্বে মতবিনিময়ে সাবেক নির্বাচন কমিশনারা অংশ নেন। মতবিনিময় থেকে বেরিয়ে সাখাওয়াত হোসেন সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি তিনি সংসদ নির্বাচনে বড় পরিসরে সিসিটিভি ব্যবহার করে তা কমিশন ও কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে ভাগ করে মনিটর করার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, এটা ভাগ করে দিয়ে মনিটর করেন। পাঁচ জন কমিশনার আছেন। সচিব আছেন। কর্মকর্তারা আছেন। আরইও আছেন। তাদের দেন।

ব্যালটে ভোটের পক্ষে মত দিয়ে সাবেক এই কমিশনার বলেন, পেপার ব্যালটে ভোট চুরি করলেও সেটা খুঁজে বের করা সহজ। আপনাদের কাছে ভোটার লিস্ট (ছবিসহ) আছে। স্বাক্ষর আছে। সব কিছু আছে। ম্যাচ করা যায়। সুক্ষ্ম কারচুপি আপনারা যেটা দেখলেন ইভিএমে। বাইরের পরিবেশ ফার্স্ট ক্লাস! ঝামেলা নেই। হইচই নেই। কিন্তু ভেতরে কী হচ্ছে? অন্য সিস্টেমে (ব্যালটে) যখন এটা হবে বাইরেও হইচই হবে। কারণ একা তো পারবেন না। ভোট কাটতে হলেও ৫/৬ জন লাগবে। এতে করে প্রতিপক্ষ তো হইচই করবে। এটা আপনারা আরও ভালো করে দেখতে পারবেন। ভোট কক্ষের সিসিটিভি তো কষ্ট করে দেখতে হয়।

গাইবান্ধা-৫ উপনির্বাচনে যে পদক্ষেপ নিয়েছেন তার জন্য কমিশনকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমি বলেছি আাপনারা যেটা করেছেন সেটা ঠিক আছে। তবে পরের ধাপগুলোতে যেন স্লিপ না করেন। যদি স্লিপ করেন তাহলে জাতির কাছে অন্য রকমের ম্যাসেজ যাবে। আপনারা দেখানোর জন্য করেছেন। বাকিটুকু করলেন না। আইন শক্ত অবস্থানে যে বলেছেন, প্লিজ ডু ইট।

তিনি বলেন, কমিশনের যে ক্ষমতা তারা তা প্রয়োগ করেছেন। এখন ফলোআপ হচ্ছে কারা কী করেছে তা বের করা। কারা দোষী, কারা দোষী না সেটা চিহ্নিত করে যদি পানিশমেন্ট দিতে না পারেন, তাহলে ইসির উদ্দেশ্য নিয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠবে। ভবিষ্যতে আপনারা এই ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবেন না। কমিশনকে তাদের অবস্থানে অটল থাকতে বলেছি। কেবল ভোট বন্ধ নয়, যে ক্ষমতা আছে সেটা প্রয়োগ করতে বলেছি।

তিনি জানান, নির্বাচন কমিশন যদি মনে করে পরিবেশ ঠিক নেই তাহলে নির্বাচন বন্ধ করতে পারেন। যতক্ষণ পর্যন্ত মনে করবেন পরিবেশ ঠিক নেই ততক্ষণই বন্ধ রাখতে পারবেন। যতক্ষণ পর্যন্ত আপনারা নিশ্চিত হতে না পারবেন ভোট সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে, ততক্ষণ আপনারা বন্ধ রাখতে পারবেন। আইনে কোথাও বাধা নেই।

মাগুরা-উপনির্বাচনের প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, বাংলাদেশে এর আগে কোনও কমিশন কিন্তু করতে পারেনি। ১৯৯৪ সালে যদি এটা করা হতো তাহলে আজ পলিটিক্যাল ফিল্ডটি অন্যরকম হতে পারতো।

তিনি বলেন, নিজস্ব কর্মকর্তা ও যাদের দিয়ে ভোট করাবেন তাদের কনফিডেন্সে আনতে হবে। তাদের ‍বুঝাতে হবে আপনারা প্রোটেকশন দিচ্ছেন।

জেলা পরিষদ নির্বাচনের সময় বরিশালের ঘটনার প্রসঙ্গে টেনে তিনি বলেন, আমি বলেছি ওই ইউএনওকে কমিশনের সম্পূর্ণ প্রোটেকশন দেওয়া উচিত।

উপমহাদেশে বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন সব থেকে বড় উল্লেখ করে তিনি বলেন, আড়াই তিন হাজার স্টাফ। উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত অফিস আশপাশের কোনও দেশে নেই। কিন্তু এই লোকবলকে ব্যবহার করতে হবে।

সংসদ নির্বাচনে জেলাগুলোতে একাধিক রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগের পরামর্শ দিয়ে সাবেক এই কমিশনার বলেন, একটি বড় জেলায় ১৪-১৬টা নির্বাচনি এলাকা আছে। এখানে একজন রিটার্নিং অফিসার দিয়ে কাজ হবে না। আইনে কোথাও বলা নেই একজন রিটার্নিং অফিসার হতে হবে। সেই জায়গায় আপনাদের নিজস্ব অফিসার... যাতে নির্বাচনে কন্ট্রোলটা আপনাদের হাতে থাকে। এটা আপনারা করতে পারেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App