×

জাতীয়

নার্স বদলিতে সাত কোটি টাকা লেনদেন

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৮ অক্টোবর ২০২২, ১০:৩৮ পিএম

সরকারি হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নার্স বদলিতে কোটি কোটি টাকা ঘুষ লেনদেনের প্রমাণ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে এ সংক্রান্ত দুদকের প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়। নার্স বদলিতে অনিয়ম-দুর্নীতির তদন্ত চেয়ে করা এক রিটের পরিপ্রেক্ষিতে আদালতের নির্দেশে এ প্রতিবেদন তৈরি করে দুদক।

প্রতিবেদনে বলা হয়, নার্সদের বদলি করতে তাদের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা ঘুষ হিসেবে নিতেন জামাল উদ্দিন নামে এক ব্যক্তি। তার বাড়ি কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে, থাকেন রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে। পাঁচটি ব্যাংকের ১৪টি হিসাবের মাধ্যমে ঘুষের টাকা নেয়া হতো। ২০০৯ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত জামাল উদ্দিনের সংশ্লিষ্ট হিসাবে মোট সাত কোটি ২৩ লাখ টাকা জমা হয়েছে। এর মধ্যে ছয় কোটি ৯২ লাখ টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। মূলত দেশের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতাল বা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত নার্সরা নিজ নিজ জেলায় বা বিভাগে বদলির জন্য জামাল উদ্দিনকে এই টাকা দিয়েছেন। নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের এক বা একাধিক কর্মকর্তার সহায়তায় জামাল উদ্দিন ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে বিভিন্ন সরকারি হাসপাতাল বা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত নার্সদের তাদের পছন্দের কর্মস্থলে বদলি করেছেন বলে নার্সরা জানিয়েছেন। নার্সিং ও মিডওয়াইফারি দপ্তরের এক বা একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে জামাল উদ্দিনের সম্পর্ক থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। এজন্য ওইসব কর্মকর্তাদের আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত তথ্য পর্যালোচনা করা প্রয়োজন বলে হাইকোর্টে দাখিল করা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, বদলির জন্য নার্সদের কাছ থেকে দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা ঘুষ নিতেন জামাল উদ্দিন ও তার সহযোগীরা। পাঁচটি ব্যাংকের ১৪টি হিসাব নম্বর ব্যবহার করে এ ঘুষ নেয়া হয়। হাইকোর্টে প্রতিবেদন উপস্থাপনের পর নার্সিং ও মিডওয়াফারি অধিদপ্তরের কোন কোন কর্মকর্তা ঘুষের মাধ্যমে এই নার্স বদলিতে জড়িত সেই বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন আগামী ২০ জানুয়ারির মধ্যে আদালতে দাখিল করতে দুদককে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

জানা গেছে, ইতিমধ্যে দুদকের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটকে (বিএফআইইউ) চিঠি দেয়া হয়েছে। ওই চিঠিতে নার্সিং ও মিডওয়াইফারি দপ্তরের সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তাদের ব্যাংক লেনদেনের হিসাব বিবরণী চাওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে রিটকারীর আইনজীবী ব্যারিস্টার হুমায়ুন কবির পল্লব বলেন, আজ আংশিক প্রতিবেদন দাখিল করেছে দুদক। ২০ জানুয়ারির মধ্যে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিল করতে দুদককে বলা হয়েছে। নার্স বদলিতে অনিয়ম ও দুর্নীতির তদন্ত চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেন ল’ অ্যান্ড লাইফ ফাউন্ডেশনের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের তিন আইনজীবী মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির পল্লব, মোহাম্মদ কাওছার ও মাজেদুল কাদের। ওই রিটের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৮ মে হাইকোর্ট এ বিষয়ে দুদককে তদন্তের নির্দেশ দেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App